পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
তাঁদের কারও কারও পেশা রান্নাবান্না। সেই সঙ্গে বাগানের কাজও দেখাশোনা করতেন, অর্থাৎ মালি। কেউ বা পিয়ন। কেউ গাড়িচালক। নিতান্ত সাধারণ পেশার ওই সব নিম্নবিত্ত মানুষজন এক দিন হঠাৎ জানতে পারলেন, কোন এক জাদুবলে তাঁরা রাতারাতি বিভিন্ন সংস্থার ডিরেক্টর বনে গিয়েছেন! তবে তা নিছকই কাগজে-কলমে। এমন আকস্মিক ‘ভাগ্যোন্নতি’র পিছনের রহস্য সন্ধান করা তাঁদের অনেকেরই সাধ্যাতীত।
এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) অভিযান শুরু করার পরে শোরগোল পড়ে যায় সারা রাজ্যে। তখনই ওই নিম্নবর্গীয় মানুষজন সাংবাদিক এবং সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে জানতে পারেন, তাঁরা বিভিন্ন সংস্থার ডিরেক্টর। তাঁদের বয়ান তুলে ধরে স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির মামলার চার্জশিটে এমনই দাবি করেছে ইডি।
সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে পেশ করা সেই চার্জশিটের ছত্রে ছত্রে বহু ব্যক্তির বয়ান তুলে ধরা হয়েছে। ওই মামলায় অভিযুক্ত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।
চার্জশিটে কল্যাণ ধর নামে এক ব্যক্তির বয়ান তুলে ধরেছে ইডি। ইডি-র দাবি, বয়ানে কল্যাণ জানিয়েছেন, তাঁর শ্যালিকা অর্পিতা তাঁকে গাড়ির চালক হিসাবে নিযুক্ত করেছিলেন। কিন্তু অর্পিতার সঙ্গে তাঁকেও যে ‘ইচ্ছে এন্টারটেনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড’, ‘সেন্ট্রি ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড’ এবং ‘সিম্বায়োসিস মার্চেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড’-এর ডিরেক্টর বানানো হয়েছে, তা তিনি জানতেন না। অর্পিতার নির্দেশে না-পড়েই নানা নথিতে সই করেছেন তিনি। চার্জশিটে ইডি-র দাবি, ‘অপা ইউটিলিটি সার্ভিস’ সম্পর্কেও তাঁর কিছু জানা নেই বলে জানিয়েছেন কল্যাণ।
ইডি-র পেশ করা চার্জশিটে বিভিন্ন ব্যক্তির নাম রয়েছে। চার্জশিট অনুযায়ী সেই সব লোকের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের বয়ান রেকর্ড করেছেন তদন্তকারীরা। চার্জশিটে ইডি-র আরও দাবি, অনেককে বিভিন্ন সংস্থার ডিরেক্টর বানানো হয়েছে। অনেকেই জানিয়েছেন, তাঁদের বিভিন্ন সংস্থার ডিরেক্টর করা হয়েছে না-জানিয়ে।
এক ব্যক্তি জানান, তিনি ছিলেন পাচক, বাগান দেখাশোনার কাজও করতেন। কিন্তু তিনি যে একটি সংস্থার ডিরেক্টর, তা তাঁর অজানা ছিল। গত জুলাইয়ে ইডি-র তল্লাশি শুরুর পরে সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পারেন তিনি। চার্জশিটে ইডি জানিয়েছে, তদন্তকারীদের কাছে ওই ব্যক্তি দাবি করেছেন, না-পড়েই বিভিন্ন নথিতে সই করতেন তিনি। একই কথা জানিয়েছেন ওই সংস্থার আর এক ‘ডিরেক্টর’। চার্জশিটে ইডি-র দাবি, ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, বিভিন্ন নথির পাশাপাশি তাঁকে সাদা কাগজেও সই করতে বলা হত। তবে ওই সংস্থার অফিসে কোনও দিন যাননি তিনি।
চার্জশিটে ইডি আরও জানিয়েছে, পিয়নের পদে কর্মরত এক ব্যক্তির দাবি, তাঁরও জানা ছিল না যে, সংস্থার ডিরেক্টর হয়ে বসে রয়েছেন তিনি!
ইডি-র চার্জশিটের পাতায় পাতায় উঠে এসেছে পার্থ-অর্পিতার সম্পর্কের নানা দিক। ইডি-র দাবি, প্রশ্নের জবাবে এক ব্যক্তি তাদের জানিয়েছেন, অর্পিতাকে নিয়ে গোয়া এবং তাইল্যান্ডেও গিয়েছিলেন পার্থ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy