সোমা দাস। নিজস্ব চিত্র।
সরকার তাঁর ‘স্বপ্নপূরণ’ করেছে। তবে ক্যানসার আক্রান্ত, এসএসসি আন্দোলনকর্মী সোমা দাস তাঁর সহযোদ্ধাদের স্বপ্ন নিয়েও চিন্তিত। তাই শিক্ষকতায় তাঁর প্রাপ্য সরকারি চাকরিটি তিনি নেবেন ঠিকই, সঙ্গে আন্দোলনও চালিয়ে যাবেন। তফাত এই যে, এত দিন এই লড়াইয়ে তাঁর নিজের স্বার্থ জড়িয়ে ছিল। এ বার তিনি লড়বেন এসএসসি চাকরিপ্রার্থী বাকি সব আন্দোলনকারীর জন্য। যাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে সেই ২০১৯ সাল থেকে লড়াই করে চলেছেন সোমা।
সোমবার সোমার সেই স্বপ্নপূরণ করার কথা জানিয়েছে রাজ্য শিক্ষা দফতর। চিঠি দিয়ে এসএসসিকে শিক্ষাসচিব জানিয়েছেন, সোমাকে যেন সাত দিনের মধ্যে সহকারী শিক্ষিকার চাকরি দেওয়া হয়। নবম-দশম শ্রেণির বাংলা পড়ানোর দায়িত্ব দেওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে। সেই চিঠির কথা জানার পরই সোমা বলেন, ‘‘পুরোটাই আদালতের বিচারাধীন। যদি আদালত নির্দেশ দিয়েছে, এই চাকরি আমার অধিকারের। আমি চাকরি করব। তবে আমার আন্দোলন সেখানেই থেমে যাবে না। আমি আন্দোলন চালিয়ে যাব। যত দিন না আমার মতো বঞ্চিত প্রতিটা চাকরিপ্রার্থী তাঁদের নিজেদের প্রাপ্য চাকরি পান, তত দিন আমার আন্দোলন চলবে।’’
বীরভূমের নলহাটির কন্যার লড়াই অবশ্য বাকিদের থেকে আর একটু বেশি কঠিন ছিল। সোমা শুধু তাঁর অধিকারের জন্য নয়, তাঁর শরীরের সঙ্গেও সমানে যুদ্ধ করে গিয়েছেন। এখনও চলছে সেই যুদ্ধ। রক্তের ক্যানসারের রোগী সোমা। এসএসসির আন্দোলনের ফাঁকেই চলেছে তাঁর চিকিৎসা। কাহিল হয়েছেন, বিশ্রাম নিয়েছেন, সুস্থ হয়ে আবার ফিরেছেন আন্দোলনস্থলে। প্রচুর টাকা খরচ হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে তাঁর চিকিৎসায়। তবু আদালত শিক্ষকতার বদলে অন্য চাকরি দিতে চাইলে তিনি নেননি। কারণ যে কোনও চাকরিতে অর্থ উপার্জন তাঁর লক্ষ্য নয়। তার জন্য আন্দোলন করেননি। শিক্ষক হওয়াই স্বপ্ন ছিল তাঁর। এক দিক থেকে দেখতে গেলে বৃত্ত সম্পূর্ণ হল। তবে সোমার লড়াইয়ের বৃত্ত এখনও সম্পূর্ণ হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy