ফাইল ছবি
জোর করে ধর্মতলার ধর্না হটিয়ে পুলিশ বৃহস্পতিবার তাঁদের লালবাজারে নিয়ে যাওয়ার পরে ফের সেখানে ধর্নায় বসে পড়েছিলেন কর্মপ্রার্থীরা। লালবাজারের সেন্ট্রাল লক-আপ থেকে জামিনে মুক্ত করে দেওয়া হলেও শুক্রবার তাঁরা সেখান থেকে বেরোতে অনিচ্ছা প্রকাশের পাশাপাশি লক-আপের তালা ছিনিয়ে নিয়ে ভিতর থেকে তালা ঝুলিয়ে দেন বলে অভিযোগ। পুলিশের আরও অভিযোগ, ভিতরে তিন কনস্টেবলকে আটকে রেখে তাঁদের কাজে বাধা দেওয়া হয়। বন্দিদের কম্বল ছিঁড়ে দড়ি পাকিয়ে সেন্ট্রাল লক-আপের গেটে বেঁধে দেন ওই চাকরিপ্রার্থীরা। পরে বিরাট পুলিশবাহিনী পৌঁছে তাঁদের ব্যাঙ্কশাল আদালতে নিয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার ধর্মতলার ধর্নামঞ্চে ধৃত এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষার চাকরিপ্রার্থী ৬৭ জনের বিরুদ্ধে লালবাজারের সেন্ট্রাল লক-আপে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, পুলিশের কাজে বাধাদান, মারধর-সহ সাতটি ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
লালবাজার জানিয়েছে, ওই চাকরিপ্রার্থীদের গ্রেফতার করে নিয়ে আসার পথে বৃহস্পতিবারেই চার জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের পাঠানো হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। বাকি ৬৭ জনের স্থান হয় লালবাজারের সেন্ট্রাল লক-আপে। তাঁদের মধ্যে মহিলা ছিলেন ২৫ জন। অভিযোগ, শুক্রবার তাঁরাই ব্যাপক গন্ডগোল বাধান লালবাজারের ভিতরে।
এ দিন এই অভিযোগে আদালত অভিযুক্তদের মধ্যে ৪২ জনকে ২০ জুন পর্যন্ত জেল হাজতে পাঠিয়েছে। ওই ৪২ জনই পুরুষ চাকরিপ্রার্থী। বাকি ২৫ জন মহিলা চাকরিপ্রার্থীর জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত।
পুলিশ জানায়, চাকরিপ্রার্থীরা বৃহস্পতিবারের রাতটা কাটান লালবাজারেই। এসএসসি যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চ কর্মশিক্ষা, শারীরশিক্ষার সভাপতি রাজু দাস বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার লালবাজারের একটা ছোট ঘরে ৭০-৮০ জনকে রাখা হয়। গোটা ঘরে একটাই পাখা। গরমে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। জামাল শেখ, সম্রাট মাজি নামে দুই চাকরিপ্রার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’’ রাজু জানান, লক-আপের ভিতরে এক মহিলা চাকরিপ্রার্থী গলায় দড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁকে উদ্ধার করেন অন্য প্রার্থীরা। চাকরিপ্রার্থীর আত্মহত্যার চেষ্টার অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে লালবাজার।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, আদালতের অনুমতি নিয়ে তাঁরা ধর্মতলায় ধর্নামঞ্চে বসেছিলেন। সেখান থেকে তাঁদের জোর করে তুলে দেওয়া হয়েছে। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতা হাই কোর্টের অনুমতি নিয়ে কর্মশিক্ষা, শারীরশিক্ষার চাকরিপ্রার্থীরা ধর্মতলার ধর্নামঞ্চে বসলেও ময়দান থানা থেকে চাকরিপ্রার্থীদের জানানো হয়, তাঁরা বেশ কিছু শর্ত লঙ্ঘন করেছেন। ৩০ জনের বেশি ধর্নামঞ্চে থাকার কথা নয়। অথচ সংখ্যায় তাঁরা অনেক বেশি ছিলেন। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ধর্নামঞ্চে
থাকার কথা। কিন্তু সেই সময়সীমাও মানেননি তাঁরা। কোনও রকম লাউডস্পিকার ব্যবহার করার কথা ছিল না, তবু তা ব্যবহার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বর্ষার মরসুম চলে আসায় যখন-তখন বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তাঁদের ধর্নামঞ্চ থেকে উঠে যেতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার বসিরহাটের টাউন হল মাঠে ডিওয়াইএফের জেলা সম্মেলনে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বলেন, “চাকরিপ্রার্থীরা যখন লড়াই করছেন, সেই সময় পুলিশ তাঁদের মেরে থানায় নিয়ে যায়। আমরা লড়াই করে এই সরকারকে উপযুক্ত উত্তর দেব।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy