—ফাইল চিত্র।
সাম্প্রতিক কালে অন্তত তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে তাঁর উপস্থিতি বা সম্ভাব্য উপস্থিতি, ডাক পাওয়া বা না-পাওয়াকে ঘিরে বিতর্ক-বিসংবাদ তুঙ্গে উঠেছিল। এ বার জল্পনা চলছে চতুর্থ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে। কাল, মঙ্গলবার বারাসত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় রবিবার টুইট করে জানান, ওই সমাবর্তনে তিনি যাচ্ছেন এবং পৌরোহিত্যও করবেন। সেই সঙ্গে উপাচার্য ও শিক্ষকদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ পাবেন।
কিন্তু ওই বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, রাজ্যপাল যে সমাবর্তনে যাবেন, এই বিষয়ে রবিবার পর্যন্ত কোনও তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছয়নি। রাজ্যপালের টুইটের মাধ্যমেই তাঁরা যা জানার জেনেছেন। জল্পনা দানা বাঁধছে এই নিয়েই। আচার্য-রাজ্যপালকে সমাবর্তনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে কি না বা ওই অনুষ্ঠানে তাঁর পৌরোহিত্যের বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়েছে কি না, সেই ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ মুখ খুলতে চাননি। সমাবর্তনে রাজ্যপালের যোগদান নিয়ে উপাচার্য বাসব চৌধুরীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি এ দিন শুধু বলেন, ‘‘সমাবর্তনের বিষয়ে যা করার, উচ্চশিক্ষা দফতরের নতুন বিধি মেনেই তা করা হয়েছে।’’ এর বাইরে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
আরও পড়ুন: ভোট-তৎপরতায় ‘ঘাটতি’ কি কমিশনেই?
বিশ্ববিদ্যালয়ের খবর, এ বারের সমাবর্তন ক্যাম্পাসের ভিতরের প্রেক্ষাগৃহে হবে। ডিগ্রি দেওয়া হবে এমফিল এবং পিএইচ ডি প্রাপকদের। স্বর্ণপদক তুলে দেওয়া হবে সব বিভাগের প্রাপকদের হাতে। প্রাপকদের হাতে ডিগ্রি বা পদক কে তুলে দেবেন, তা পরিষ্কার নয়।
ডিগ্রি বা পদক তুলে দেওয়া তো দূরের কথা, এ বার রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন ঘিরে আচার্য-রাজ্যপাল বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন, নিজেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিস্তর। সম্প্রতি কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন নিয়ে তাঁর ক্ষোভ এতই তীব্র হয় যে, উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায়কে ‘শো-কজ’ করেন তিনি। ওই সমাবর্তনের আমন্ত্রণপত্রে অন্যান্য অতিথির নাম থাকলেও রাজ্যপালের নাম ছিল না। উচ্চশিক্ষা দফতরের নতুন বিধিতে বলা হয়েছে, রাজ্যের কোনও বিশ্ববিদ্যালয় এখন সরাসরি রাজভবনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে না। যোগাযোগ করতে হবে উচ্চশিক্ষা দফতরের মাধ্যমে। রাজ্যপালকেও ঠিক একই ভাবে উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। দেবকুমারবাবু জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি নতুন বিধি মেনেই কাজ করছেন। তার বাইরে যাননি।
সমাবর্তনে রাজ্যপাল-আচার্যের অংশগ্রহণ নিয়ে বিতর্ক চলছে তারও আগে থেকে। ডিসেম্বরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনে যোগ দিতে গিয়ে গেট থেকে ফিরে আসতে হয়েছিল রাজ্যপালকে। তৃণমূলের শিক্ষাবন্ধু সমিতির বিক্ষোভের ফলে ক্যাম্পাসে ঢুকতেই পারেননি তিনি। তার পরে, জানুয়ারিতে নজরুল মঞ্চে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিক্ষোভের মধ্যে গেট দিয়ে ঢুকতে পারলেও সমাবর্তন মঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছতে পারেননি ধনখড়। প্রেক্ষাগৃহে তুমুল বিক্ষোভ চলতে থাকায় গ্রিনরুম থেকে রাজভবনে ফিরে যান তিনি।
শিক্ষা-রাজনীতি শিবিরের পর্যবেক্ষণ, রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত প্রশমনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি রাজভবনে ধনখড়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। দ্বন্দ্ব মেটাতে পরে রাজভবনে গিয়ে কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। তার পরেও রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যোগদান নিয়ে ধনখড়ের টুইট এবং বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের নীরবতা নতুন জল্পনার জন্ম দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy