Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
অবৈধ প্র্যাক্টিসের নালিশ
medical

Medical: ২৫% পেরোচ্ছে না পাশের হার, দেশের পরীক্ষায় হোঁচট খাচ্ছেন বিদেশি ডিগ্রিধারী ডাক্তাররা

এ দেশে মেডিক্যাল পড়ার সুযোগ না-পেয়ে প্রতি বছর গাদা গাদা পড়ুয়া বিদেশের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে টাকা খরচ করে ডাক্তারি পড়তে যান।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:৪৮
Share: Save:

নামের সঙ্গে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের এমবিবিএস ডিগ্রি থাকলেই এ দেশে ডাক্তারি করা যায় না। তার জন্য দিতে হয় একটি পরীক্ষা, যার নাম ‘এগ্‌জ়িট টেস্ট’। আর সেই পরীক্ষাতেই হোঁচট খেয়ে পড়ছেন বিদেশি ডিগ্রিধারী অধিকাংশ পড়ুয়া। কোনও বছরেই পাশের হার ২৫% পেরোচ্ছে না।

এ দেশে মেডিক্যাল পড়ার সুযোগ না-পেয়ে প্রতি বছর গাদা গাদা পড়ুয়া বিদেশের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে টাকা খরচ করে ডাক্তারি পড়তে যান এবং এমবিবিএস ডিগ্রি নিয়ে ফেরেন। কিন্তু এ দেশে প্র্যাক্টিস শুরু করার পরীক্ষায় তাঁদের অসাফল্যের এমন ম্লান ছবি দেখা যাচ্ছে ১০ বছর ধরে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরের নেওয়া এগ্‌জ়িট টেস্টের ফল বেরিয়েছে সপ্তাহ দুয়েক আগে। তাতেও একই হাল। ২৩,৩৪৯ জন পরীক্ষা দিয়েছিলেন। উত্তীর্ণের সংখ্যা মাত্র ৫৭৪২। অকৃতকার্য হয়েছেন ১৭,৬০৭ জন।

এগ্‌জ়িট টেস্টের নাম ‘ফরেন মেডিক্যাল গ্র্যাজুয়েট এগ্‌জ়ামিনেশন’ বা ‘এফএমজিই’। এই পরীক্ষা নেয় ‘ন্যাশনাল বোর্ড অব এগ্‌জ়ামিনেশন’ বা এনবিই। প্রতি বছর দু’বার, জুনে ও ডিসেম্বরে এই পরীক্ষা হয়। কোনও পড়ুয়া বিদেশের মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করে আসার পরে ভারতে মোট তিন বার এই পরীক্ষায় বসতে পারেন। এতে পাশ করলে তবেই তিনি ভারতে প্র্যাক্টিসের লাইসেন্স পান। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ পরীক্ষার্থী তিন বারের চেষ্টাতেও এই বৈতরণী পেরোতে পারছেন না।

অভিযোগ, অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের অনেকেই উপায়ান্তর না-পেয়ে অবৈধ ভাবে বিনা লাইসেন্সে নামের সঙ্গে ‘এমবিবিএস’ লিখে প্রাইভেট প্র্যাক্টিস চালিয়ে যাচ্ছেন বা কোনও বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত হয়ে রোগী দেখছেন। এমবিবিএস পড়ার জন্য পাঁচ-পাঁচটা বছর এবং কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয় করে ফেলেছেন তাঁরা। ২০২১ সালের প্রথম এগ্‌জ়িট টেস্ট হয় জুনে। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮ হাজার। অকৃতকার্য ১৩ হাজার।

দেশের মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ না-পেয়েই অনেক ছাত্রছাত্রী চিন, ফিলিপিন্স, নেপাল, বাংলাদেশ, রাশিয়া, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান, কেনিয়া, ইউক্রেন, জর্জিয়া প্রভৃতি দেশে এমবিবিএস পড়তে যান। কোর্স ফি ১২ থেকে ১৬ লক্ষ। বিদেশে পাশ করলেও দেশে ফিরে তাঁদের অধিকাংশই এগ্‌জ়িট টেস্টের হার্ডল পেরোতে ব্যর্থ হন। তা সত্ত্বেও প্রতি বছর বিদেশে এমবিবিএস পড়তে যাওয়া ভারতীয় পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়ছে। ২০১৯ সালে সংখ্যাটা ছিল ১৫ হাজারের বেশি, ২০২০-তে ১৯ হাজারের বেশি, ২০২১-এ ২৩ হাজারের বেশি।
প্রশ্ন উঠছে, ওঁদের বেশির ভাগই দেশে ফিরে এগ্‌জ়িট টেস্টে ঠেকে যাচ্ছেন কেন?

এসএসকেএম হাসপাতালের প্রাক্তন শিক্ষক-চিকিৎসক তথা কলকাতায় মেডিক্যাল পঠনপাঠনের একটি কোচিং সেন্টারের সঙ্গে ৩২ বছর ধরে যুক্ত অমিয়কুমার মাইতির ব্যাখ্যা: প্রথমত, যাঁরা দেশে মেডিক্যাল পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন না, তাঁদের বেশির ভাগই মেধায় পিছিয়ে। ২২টি বিষয়ের পাঁচ বছরের পড়া এগ্‌জ়িট টেস্টের জন্য একসঙ্গে ‘রিভিশন’ করতে বা ঝালিয়ে নিতে ব্যর্থ হচ্ছেন তাঁরা। দ্বিতীয়ত, অনেক বিদেশি মেডিক্যাল কলেজের পঠনপাঠনের পদ্ধতি, পাঠমান, পাঠ্যক্রম ভারতের থেকে আলাদা। তৃতীয়ত, ভারতে নিট (ইউজি)-এ ৫০ পার্সেন্টাইলে পাশ। যা পার্সেন্টেজ বা শতকরার হিসেব থেকে অনেকটাই কম। আর বিদেশ থেকে মেডিক্যাল পাশ করে আসা পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে এগ্‌জ়িট পরীক্ষায় ৫০ শতাংশ নম্বরে পাশ। সেটা পাওয়া বেশ কঠিন।

অন্য বিষয়গুলি:

medical
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy