Advertisement
E-Paper

ধর্নামঞ্চে গরহাজির মমতা ঠাকুর, জল্পনা

মতুয়াদের নিয়ে কর্মসূচি অথচ দু’দিনের এই কর্মসূচিতে দেখা গেল না বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুরকে। মমতার অনুপস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তৈরি হয়েছে।

মমতা ঠাকুর

মমতা ঠাকুর

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৪১
Share
Save

মতুয়াদের নিয়ে কলকাতার গাঁধীমূর্তির পাদদেশে ‘তৃণমূলের’ দু’দিনের ধর্না কর্মসূচি শেষ বুধবার। কর্মসূচির দাবি ছিল এনআরসি ও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) বাতিল করতে হবে। সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসঙ্ঘের ব্যানারে কর্মসূচি আয়োজিত হলেও তৃণমূলই বকলমে সব কিছু আয়োজন করে।

মতুয়াদের নিয়ে কর্মসূচি অথচ দু’দিনের এই কর্মসূচিতে দেখা গেল না বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুরকে। মমতার অনুপস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তৈরি হয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগনার জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক নিজে মমতাকে কর্মসূচিতে যোগ দিতে অনুরোধ করেছিলেন। তারপরেও মমতা না যাওয়াতে দলীয় নেতৃত্ব হতাশ। যদি অন্য কোনও রাজনৈতিক সমীকরণের কথা উড়িয়ে দিয়েছেন জ্যোতিপ্রিয়। তাঁর কথায়, ‘‘মমতা অসুস্থতার কারণে কর্মসূচিতে আসতে পারেননি। তবে উনি আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন। তৃণমূলের বাইরে তিনি যাবেন না।’’

মমতা নিজেও ওই কর্মসূচিতে না যাওয়ার কারণ হিসাবে অসুস্থতার কথা বলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক আমাকে যেতে বলেছিলেন। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে যেতে পারিনি। আমরা মালদহ-তে যাওয়ার কথা ছিল। সেটাও বাতিল করতে হয়েছে। চিকিৎসকেরা ‘বেড রেস্ট’ নিতে বলেছেন।’’

বুধবার অবশ্য মমতা ঘর থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাও বলেছেন। তৃণমূলের ধর্না কর্মসূচি নিয়ে সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘে আলোচনা করা হয়নি জানিয়ে মমতা বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে আলোচনা করা হলে আমি নিজে যেতে না পারলেও মতুয়া ভক্তদের পাঠাতে পারতাম।’’

তা হলে কর্মসূচিতে যাওয়া মতুয়ারা কারা?

মমতার কথায়, ‘‘কিছু মতুয়া ব্যক্তিগত ভাবে গিয়েছেন বোধ হয়। যাঁরা গিয়েছেন সেটা তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয়।’’

রাজনৈতিক মহল ও মতুয়া ভক্তদের একাংশ মনে করছেন, সিএবি নিয়ে মমতা উভয় সঙ্কটে পড়েছেন। কারণ, দীর্ঘদিন ধরেই ওপার বাংলা থেকে আসা উদ্বাস্তুদের নিঃশর্ত নাগরিকত্বের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন মতুয়ারা। সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান উপদেষ্টা প্রয়াত বীণাপানি ঠাকুরও এই বিষয়ে আন্দোলন করেছিলেন। মমতা নিজেও সেই আন্দোলনের শরিক ছিলেন। লোকসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঠাকুরবাড়িতে এসেছিলেন। মতুয়াদের তরফে তখনও তাঁর কাছে তাঁদের নাগরিকত্ব দাবি করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন।

এখন কেন্দ্র সরকার সিএবি লোকসভায় পাশ করিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়ে দিয়েছেন, ওই বিল পাশ হওয়ার ফলে প্রতিবেশী তিন দেশের অমুসলিম সংখ্যালঘু শরণার্থীরা দেশের নাগরিকত্ব পাবেন।

কেন্দ্রের তরফে এটাও বলা হয়েছে, অমুসলিম শরণার্থীদের জন্য কোনও নথিপত্র লাগবে না। তাঁরা আবেদন করলেই ভারতীয় নাগরিকত্ব পাবেন।

কেন্দ্রর এই ঘোষণায় খুশি মতুয়া ভক্তদের একটা বড় অংশ। তাঁরা মনে করছেন, এতদিন পরে কেন্দ্র তাঁদের দাবি মেনে কাজ করছে। যদিও তৃণমূল কেন্দ্রের ওই বিল বাতিলের দাবি করছে। স্বাভাবিক ভাবেই মমতা ঠাকুর সমস্যায় পড়ে গিয়েছেন।

মতুয়ারাদের নিঃশর্ত নাগরিকত্বের বিষয়ে মমতা বলেন, ‘‘আমরা চাই কোনও নথিপত্র ছাড়া নাগরিকত্ব দেওয়া হোক। তবে ওই বিলে আমাদের দাবি কতটা পূরণ হল তা না জেনে মন্তব্য করা যাবে যাবে না। আমরা ২০০৩ সালে আন্দোলন করেছিলাম, তখন দাবি ছিল জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব দিতে হবে। শুনেছি এই বিলে তেমন কিছু নেই। তা ছাড়া কারা ২০১৪ সালের আগে এসেছে সেটা কী ভাবে বোঝা যাবে?’’

জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘সিএবি হচ্ছে এনআরসি-র একটা ধাপ। আমরা দু’টোই বাতিলের দাবি করেছি।’’ সিএবি নিয়ে বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর বলেন, ‘‘আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে ভারত সরকার কোনও নথিপত্র ছাড়া নিঃশর্ত নাগরিকত্বের যে বিল এনেছেন তাকে আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে
ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’’

TMC Mamata Thakur Matia Mahasangha

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}