গ্রেফতার হলেন অভিষেকের নিযুক্ত করা কালচিনির ব্লক সভাপতি। ফাইল চিত্র
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ জাহাঙ্গির খানের নিরাপত্তার প্রত্যাহার নিয়ে জল্পনা চলতে চলতেই গ্রেফতার হলেন কালচিনি ব্লক তৃণমূলের সভাপতি পাশাং লামা। রবিবার সন্ধ্যায় আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাটের বীরপাড়ার কাছে রাঙালিবাজনায় ৪৮ নম্বর এশিয়ান হাইওয়ের টোল গেট থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
পাশাংয়ের গ্রেফতারের ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে তীব্র শোরগোল শুরু হয়েছে।কারণ, তৃণমূলের অন্দররে একাংশের দাবি, পাশাংকে নিয়োগ করেছিলেন অভিষেকই। যদিও এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কেউই মুখ খুলতে নারাজ। ফলে পাশাং অভিষেকের ‘ঘনিষ্ঠ’ কি না, সে বিষয়টিরও কোনও আনুষ্ঠানিক সমর্থন মেলেনি।
আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূলের সভাপতি প্রকাশ চিক বরাইক শুধু বলেছেন, ‘‘প্রশাসনের কাজ প্রশাসন করছে। এ নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই।’’ তবে জল্পনা থামছে না। কারণ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা রাজনীতিতে অভিষেকের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত জাহাঙ্গিরের নিরাপত্তা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া চলতে চলতেই গ্রেফতার হয়েছেন পাশাং।
প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক ২০১৯ সালে তৃণমূলের সঙ্গে কাজ শুরু করার সময় তাদের নজরে আসেন পাশাং। প্রশান্তর সংস্থা খেয়াল করে, দক্ষিণবঙ্গের তুলনায় উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বিজেপি-র অবস্থান পোক্ত। তাই একাধিক পুলিশি মামলায় নাম থাকা সত্ত্বেও কালচিনি ব্লকে বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করতে আইপ্যাকের পরামর্শেই পাশাংকে দলে নেয় তৃণমূল।দেখা যাযায়, লোকসভা ভোটে ওই এলাকায় হারানো জমি কিছুটা হলেও উদ্ধার করতে সফল হন পাশাং। ফলে২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে তাঁকেই প্রার্থী করা হয় বিজেপি-র বিশাল লামার বিরুদ্ধে।
পাশাংয়ের ‘বাহুবলী’ ভাবমূর্তি কাজে লাগিয়েই আলিপুরদুয়ার জেলায় ভাল ফল করতে চেয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু কালচিনি-সহ আলিপুরদুয়ার জেলার পাঁচটি আসনেই জয় পায় বিজেপি। ২৮,৫৭৬ ভোটে বিজেপি প্রার্থী বিশালের কাছে পরাজিত হন পাশাং। কিন্তু ততদিনে জেলার রাজনীতিতে নিজের হাত শক্ত করে নিয়েছিলেন তিনি। তাই ভোটের পর ব্লক সভাপতি মনোনয়নের সময় তাঁকেই কালচিনি ব্লকের সভাপতি বেছে নিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
ঘটনাচক্রে, সেই ব্লক সভাপতি পাশাংকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ-ও ঘটনাচক্র যে, গত বৃহস্পতিবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলিপুরদুয়ার জেলার পুলিস সুপার ওয়াই রঘুবংশীকে প্রকাশ্যে বলেছিলেন, ‘‘কালচিনিতে অবৈধ ব্যবসা, হেরিটেজ সম্পত্তি বিক্রি করা হচ্ছে। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন!’’
এরপরেই তাৎপর্যপূর্ণভাবে পুলিশ ও বনদফতর যৌথ অভিযান চালিয়ে কালচিনির বোকেনবাড়ি এলাকায় পাশাংয়ের ভাই নিমা লামার বাড়িতে হানা দিয়ে প্রচুর অবৈধ চোরাই সেগুন কাঠ ও কাঠের আসবাবপত্র উদ্ধার করে। পুলিশই ওই অভিযানের কথা এবং চোরাই কাঠ এবং কাঠের আসবাবপত্র উদ্ধারের কথা জানিয়েছিল। পুলিশই জানিয়েছে, কাঠের আসবাবপত্র তৈরির কারখানাটি সেইদিনই‘সিল’ করে দিয়েছে তারা।
তারপর থেকেই বেপাত্তা ছিলেন তৃণমূলের নেতা পাশাং।রবিবার রাতে তাঁর গ্রেফতারির পর আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার রঘুবংশী বলেন, ‘‘পাশাং লামাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।তাঁর বিরুদ্ধে চোরাইকাঠ পাচারের অভিযোগ রয়েছে।পাশাং লামার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছিল।’’ ে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy