আগামী সোমবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর ২টোর সময় শুভেন্দুকে বিধানসভায় তাঁর ঘরে এসে সশরীরে, স্বহস্তে পদত্যাগপত্র পেশ করতে বলেছেন স্পিকার। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
বিধায়ক পদ থেকে শুভেন্দু অধিকারীর ইস্তফা গ্রহণ করলেন না রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার তিনি বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী নিয়ম মেনে পদত্যাগপত্র দেননি। রাজ্য বিধানসভার কোনও সদস্য যদি পদত্যাগ করতে চান তাঁকে ব্যক্তিগত ভাবে স্পিকারের সামনে হাজির হয়ে ইস্তফাপত্র পেশ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। তাই আমি পদত্যাগপত্র গ্রহণ করতে পারছি না।’’
আগামী সোমবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর ২টোর সময় শুভেন্দুকে বিধানসভায় তাঁর ঘরে আসতে বলেছেন স্পিকার। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁকে (শুভেন্দু) জিজ্ঞাসাবাদ করে, নিশ্চিত হয়েই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’’ তিনি জানান, শুভেন্দু স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন, এ বিষয়ে নিশ্চিত হলেই তা গৃহীত হবে। প্রসঙ্গত, আনন্দবাজার ডিজিট্যাল আগেই লিখেছিল, শুভেন্দুর স্পিকার যদি আবার ডেকে পাঠান, তিনি ফের বিধানসভা ভবনে গিয়ে স্বহস্তে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন।
বুধবার বিকালে শুভেন্দু যখন বিধানসভা ভবনে তাঁর পদত্যাগপত্র পেশ করতে যান তখন স্পিকার তাঁর ঘরে ছিলেন না। শুভেন্দু স্পিকারের সচিবের কাছে তাঁর ইস্তফাপত্র জমা দিয়ে সেটির একটি প্রতিলিপি ‘রিসিভ’ করিয়ে নিয়ে আসেন। তার পরেই ওই ইস্তফপত্রের ‘বৈধতা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলা শুরু হয়। পদত্যাগপত্রে উল্লিখিত তারিখ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
স্পিকারের এই সিদ্ধান্তের জেরে রাজ্য রাজনীতিতে পরিস্থিতি বদলের কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। বিধায়ক পদ ছাড়ার পরে বৃহস্পতিবার তৃণমূলের যাবতীয় সাংগঠনিক পদ এমনকি প্রাথমিক, সদস্যপদও ছেড়েছেন শুভেন্দু। ফলে এই ‘টেকনিক্যাল’ কারণ তাঁর রাজনৈতিক গন্তব্যের পথে অন্তরায় হয়ে উঠতে পারে, এমন সম্ভবনা কম।
তবে স্পিকারের এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে ‘রাজনৈতিক বার্তা’ দেখছেন অনেকে। তাঁদের মতে, এর ফলে শুভেন্দুর সামনে একটি নীতিগত প্রশ্ন উঠে আসতে পারে। কারণ, কাগজে-কলমে তৃণমূলের বিধায়ক রয়ে গেলেন। স্পিকারও বলেছেন, ‘‘যতক্ষণ পর্যন্ত পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত উনি (শুভেন্দু) পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য এবং তৃণমূলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি।’’ আবার রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনা, শনিবার দুপুরে মেদিনীপুরের কলেজ মাঠে বিজেপি নেতা অমিত শাহের জনসভায় যোগ দেবেন শুভেন্দু। কিন্তু সদ্য তৃণমূলত্যাগী নেতা বরাবরই ‘নীতি’ মেনে রাজনীতি করার কথা বলেন। তাই তৃণমূলের বিধায়ক পদে থেকে তাঁর পক্ষে বিজেপি-র মঞ্চে উঠবেন কি না, তা নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি রয়েছে।
তৃণমূলের একটি অংশ অবশ্য মনে করছে, শুভেন্দুর রাজনৈতিক গতিবিধির সঙ্গে স্পিকারের সিদ্ধান্তের কোনও সম্পর্ক নেই। বিমান পরিষদীয় আইন মেনেই তাঁর কর্তব্য পালন করেছেন। নিয়মানুযায়ী, কোনও আইনসভা থেকে কোনও জনপ্রতিনিধিকে ইস্তফা দিতে হলে তাঁকে সশরীরে সেই আইনসভার স্পিকার (লোকসভা এবং বিধানসভার ক্ষেত্রে) বা চেয়ারম্যানের (রাজ্যসভার ক্ষেত্রে) কাছে গিয়ে ইস্তফা দিতে হয়। না হলে তা ‘গ্রাহ্য’ না-ও করতে পারেন সংশ্লিষ্ট স্পিকার বা চেয়ারম্যান। বস্তুত, বুধবারই পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বলেছিলেন, ‘‘শুভেন্দু আমার কাছে তাঁর ইস্তফা দেননি। আমি বিধানসভায় গিয়ে শুভেন্দুর ইস্তফাপত্র দেখব। তবে এটা রীতি নয়।’’ শুক্রবার তিনি বলেন, ‘‘আমি ভারতীয় সংবিধান এবং পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার নিয়মাবলী পর্য়ালোচনা করে দেখেছি। দু’টি ক্ষেত্রেই বলা হয়েছে, কোনও সদস্য ইস্তফা দিতে চাইলে তাঁকে স্পিকারের সামনে পদত্যাগপত্র লিখে সই করতে হবে।’’
আরও পড়ুন: মুখ্যসচিব-ডিজিকে তলবের পর ভিডিয়ো প্রস্তাবে কেন্দ্রের সম্মতি
আরও পড়ুন: নতুন ‘ইনিংসে’ শুভেন্দুকে ‘জেড’ নিরাপত্তা, পাচ্ছেন বুলেটপ্রুফ গাড়িও
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy