Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

বন্ধ হোক শব্দবাজি, চায় শব্দ-শহিদের পরিবার

প্রদীপের ভাইঝি পিঙ্কির কথায়, ‘‘আমাদেরও সে দিন নিমাই আর তার পরিবারের লোকজন মারধর করেছিল।’’ ফোনে রাখির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিশেষ কথা এগোতে চাননি। শুধু বললেন, ‘‘অপরাধীর শাস্তি হয়েছে। আরও কোনও কথা বলব না।’’

বাহারি: পসরা সাজিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায়।

বাহারি: পসরা সাজিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায়।

সীমান্ত মৈত্র
গাইঘাটা শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৮ ০২:১৬
Share: Save:

কালীপুজো এলে এখনও আতঙ্ক চেপে বসে গাইঘাটার শিমুলপুর কলোনির রায় পরিবারে। মনে পড়ে যায় ২০১০ সালের ৬ অক্টোবর দিনটার কথা।

সে দিন শিমুলপুর কলোনির নিমাই বিশ্বাসের ছেলে প্রীতম শব্দবাজি ফাটাচ্ছিল প্রদীপ রায়ের বাড়ির উঠোনে। প্রদীপের শিশুপুত্র অসুস্থ থাকায় তিনি প্রীতমকে বাজি ফাটাতে বারণ করেন। কথা না শোনায় প্রদীপ তাকে বকাবকি করে বাড়ির বাইরে বের করে দেন।

তখনকার মতো সব মিটেই গিয়েছিল। কিন্তু সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ প্রীতমের বাবা নিমাই, তাঁর স্ত্রী ও পরিবারের লোকজন প্রদীপের বাড়ির সামনে এসে গালিগালাজ করতে থাকে। প্রদীপ প্রতিবাদ করলে তাঁকে নিমাই ও তাঁর স্ত্রী মারধর করে। প্রদীপ মাটিতে পড়ে গেলে নিমাই বাঁশ দিয়ে বেধড়ক পেটায়।

প্রদীপ জ্ঞান হারান। রক্ত বমি শুরু হয়। স্থানীয় চাঁদপাড়া ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। পরে বারাসত জেলা হাসপাতাল হয়ে আরজিকর। সেখান থেকে প্রদীপকে পাঠানো হয় এসএসকেএমে। সেখানেই
মারা যান তিনি।

প্রদীপের স্ত্রী রাখির অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ নিমাইকে গ্রেফতার করে। বনগাঁ মহকুমা আদালতে বিচার শুরু হয়। পুলিশ জানায়, চলতি বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর বনগাঁ মহকুমা আদালত নিমাইকে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলায় ৮ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে। রাজ্যে শব্দ-শহিদ হিসাবে চিহ্নিত হন প্রদীপ।

কালীপুজোর দিন কয়েক আগে তাঁর বাড়িতে গিয়ে জানা গেল, স্বামী মারা যাওয়ার পরে সন্তানদের নিয়ে বনগাঁর চাঁদা এলাকায় বাপের বাড়ি চলে গিয়েছেন রাখি। প্রদীপের ভাইয়ের স্ত্রী মীরা বলেন, ‘‘ঘটনাটা এখনও চোখের সামনে ভাসে। ভাসুর দিল্লিতে হাতুড়ে চিকিৎসকের কাজ করতেন। পুজোর ছুটিতে বাড়ি এসেছিলেন। তার পরে ওই কাণ্ড।’’ প্রদীপের ভাইঝি পিঙ্কির কথায়, ‘‘আমাদেরও সে দিন নিমাই আর তার পরিবারের লোকজন মারধর করেছিল।’’ ফোনে রাখির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিশেষ কথা এগোতে চাননি। শুধু বললেন, ‘‘অপরাধীর শাস্তি হয়েছে। আরও কোনও কথা বলব না।’’

এলাকার মানুষজন জানালেন, এলাকায় শব্দবাজির প্রকোপ গত কয়েক বছরে কিছুটা কমেছে। তবে একেবারে বন্ধ হয়নি। শব্দবাজি পুরোপুরি নিষিদ্ধ হোক, চায় রায় পরিবার।

অন্য বিষয়গুলি:

Pollution Environment Fire Crackers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy