Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Dilip Ghosh

BJP Poll Disaster: সংখ্যালঘু ভাঙনের মুখে বিজেপি, তৃণমূলের দিকে পা বাড়িয়ে কাশেম, পারভেজ, কবিরুলরা

পরাজিত বিজেপি প্রার্থীদের অনেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব রাখছেন। তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে যাওয়া সংখ্যালঘু নেতাদের একাংশ পুরনো দলে ফিরতে উদ্যোগী।

বাঁ দিক থেকে দিলীপ ঘোষ(বিজেপি রাজ্য সভাপতি),শেখ পারভেজ রহমান,কাশেম আলি ও কবিরুল ইসলাম।

বাঁ দিক থেকে দিলীপ ঘোষ(বিজেপি রাজ্য সভাপতি),শেখ পারভেজ রহমান,কাশেম আলি ও কবিরুল ইসলাম।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২১ ১৫:৫৪
Share: Save:

বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পরে বিপর্যস্ত রাজ্য বিজেপি। পরাজিত প্রার্থীদের একাংশ ইতিমধ্যেই দলের সঙ্গে দূরত্ব রাখতে শুরু করেছেন। এর মধ্যেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া সংখ্যালঘু নেতাদের একাংশ তৃণমূলে ফেরার তোরজোড় শুরু করে দিয়েছেন। এই দলের নেতৃত্বে রয়েছেন বিজেপি-র সংখ্যালঘু মোর্চার রাজ্য সহ-সভাপতি কাশেম আলি।

২০১৭ সালে মুকুল রায়ের সঙ্গেই বিজেপি-তে আসেন কাশেম। রাজ্য স্তরের দায়িত্বও পান তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন নেতা। এখন তিনি ফিরে যেতে চান পুরনো দলে। বিজেপি-র করোনা আক্রান্ত এই মুসলিম নেতা রবিবার বলেন, “বড় ভুল করেছি। শরীরটা ঠিক হলেই নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চেয়ে আসব। আমি তৃণমূলেই ফিরে যেতে চাই।” কাশেমের বক্তব্য, “বুঝতে পারছি বিজেপি দলটা মুসলিমদের জন্য নয়। আমি একা নই, আমার সঙ্গে অনেকে যোগাযোগ করছে। সবাই ফিরতে চাইছে। সবারই বক্তব্য, বিজেপি ভোটের প্রচারে যে ভাবে সংখ্যালঘুদের আক্রমণ করেছে সেটা বাংলার মানুষ ভাল ভাবে নেয়নি।”

শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে গত বছর ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় বিজেপি-তে যোগ দেন হুগলির পুরশুড়া আসনের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক শেখ পারভেজ রহমান। ইতিমধ্যেই গেরুয়া শিবিরের অবস্থান নিয়ে তিনি বীতশ্রদ্ধ। ওই আসনে এ বার বিজেপি জিতেছে। তবু বিজেপি-তে না থেকে পুরনো দলে গিয়েই কাজ করতে চান পারভেজ। তবে দল তাঁকে ফিরিয়ে নেবে কি না, তা নিয়ে নিশ্চিত নন। তিনি বলেন, “আমাদের মতো পুরনোরা না থাকাতেই আরামবাগ লোকসভা এলাকায় ৪টি আসনে তৃণমূল হেরে গিয়েছে। অভিমানে দল ছেড়েছিলাম। আশা করি এখন দল আমাদের ফিরিয়ে নেওয়ার কথা ভাববে।” একই দিনে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া হুগলির আর এক প্রাক্তন তৃণমূল নেতা আলমগির মোল্লাও ফেরার কথা ভাবছেন বলে জানা গিয়েছে। তবে তিনি স্পষ্ট ভাবে তা স্বীকার করেছেন না। আপাতত যে রাজনীতি থেকে দূরত্ব রেখে চলেছেন তা মেনে নিয়ে চণ্ডীতলা ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন খাদ্য সরবরাহ কর্মাধ্যক্ষ বলেন, “এখনই কিছু মনস্থ করিনি। কারণ, এখন চারদিকে অস্থিরতা চলছে। আপাতত চুপচাপ থাকছি। পরিস্থিতি ঠিক হলে সিদ্ধান্ত নেব।”

মেদিনীপুর অমিত শাহর ‘মেগা যোগদান মেলা’-য় বিজেপি-তে যাওয়া তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক কবিরুল ইসলামও এখন ঘরওয়াপসি চাইছেন। সে কথা স্বীকার করে নিয়ে তিনি বলেন, “বিজেপি-তে এসে ভুল করেছি। মোহভঙ্গ হয়েছে। যে দলের রাজ্য সভাপতি বলেন, মুসলিমদের দরকার নেই, সেখানে থাকতে যাব কেন?” কবিরুলের আরও দাবি, “বিজেপি দলটার দুটো রূপ। নেওয়ার আগে এক, পরে আর এক। এই দল বাংলায় কোনও দিন প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। সচেতন বাঙালি ভ্রাতৃত্ববোধের বন্ধনে থাকতে চায়।”

এখন কী করবেন এঁরা? কবিরুলের বক্তব্য, “আমাদের রক্ষা করতে পারেন ববিদা (ফিরহাদ হাকিম)। ওঁর হাত ছাড়াটা আমার রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত জীবনের বড় ভুল।‍‍” ববি হাকিমের দিকে তাকিয়ে আছেন কাশেমও। তিনিও করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন। এই বিষয়ে আনন্দবাজার ডিজিটালের পক্ষে ফিরহাদের প্রতিক্রিয়া জানার চেষ্টা করা হলেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে কাশেম থেকে কবিরুল সকলেই আশায় আছেন, ববিদা, ঠিক হাত বাড়াবেন তাঁদের দিকে।

রাজ্য বিজেপি নেতাদের প্রায় কেউই এখন এ নিয়ে মতামত দিতে রাজি হননি। কারও কারও বক্তব্য, তৃণমূল এঁদের উপরে চাপ তৈরি করছে বলেই কেউ কেউ ফেরার কথা ভেবে থাকতে পারেন। তবে সেটাকে দলের পক্ষে বড় কিছু ক্ষতি বলে মানতে রাজি নন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই নেতারা।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC Dilip Ghosh Politics
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy