ফাইল চিত্র।
বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষকপদের পাশাপাশি ‘গ্রুপ সি’ বা তৃতীয় শ্রেণি এবং ‘গ্রুপ ডি’ বা চতুর্থ শ্রেণির কর্মী-পদে নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতির হদিস তো মিলছেই। তেমনই শিক্ষা দফতরের নিয়োগের বিষয়টি দেখভালের জন্য নির্দিষ্ট অফিসারদের একাংশ ছাড়াও দায়িত্বপ্রাপ্ত না-হওয়া সত্ত্বেও অন্য কিছু অফিসার ওই দুর্নীতি চক্রে রয়েছেন বলে জানাচ্ছে সিবিআই। তাদের অভিযোগ, বিকাশ ভবনে উচ্চশিক্ষা দফতরে কর্মরত এক মহিলা করণিকও ওই চক্রে যুক্ত। সিবিআই জানাচ্ছে, নিয়োগের দায়িত্বপ্রাপ্তলোকজনই মূলত নিয়োগ সংক্রান্ত কাজ করেন। কিন্তু তাঁরা ছাড়াও অন্য স্তরের কিছু অফিসার-কর্মী যে দুর্নীতিতে জড়িত, তদন্তে একের পর এক সেই সব নতুন তথ্য উঠে আসছে সিবিআইয়ের হাতে।
এই সূত্রেই বিকাশ ভবনে উচ্চশিক্ষা দফতরের ওই মহিলা করণিক এসে গিয়েছেন তদন্তকারীদের আতশ কাচের নীচে। তিনিও বেআইনি ভাবে নিয়োগের চক্রের অন্যতম সক্রিয় সদস্য বলে সিবিআইয়ের দাবি। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ওই মহিলা রাজ্যের শাসক দলের কর্মী সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত। সাংস্কৃতিক ও বিনোদন জগতের সঙ্গেও তাঁর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। এসএসসি সংক্রান্ত বিভিন্ন বেআইনি নিয়োগের ক্ষেত্রে ওই মহিলার সক্রিয় ভূমিকার কথা তদন্তে উঠে এসেছে বলে সিবিআইয়ের দাবি।
স্কুলে তৃতীয় শ্রেণির কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের উপদেষ্টা কমিটির প্রধান শান্তিপ্রসাদ সিংহ-সহ পাঁচ জন এবং আরও অজ্ঞাতপরিচয় কয়েক জনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি এফআইআর করেছে সিবিআই। তদন্তকারীদের ধারণা, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী (বর্তমান শিল্পমন্ত্রী) পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ কয়েক জন সরকারি অফিসার ও কর্মীর নাম তদন্তের পরবর্তী পর্যায়ে এফআইআরের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
সিবিআইয়ের দাবি, সব নিয়োগের ক্ষেত্রেই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নির্দেশে ওই দুর্নীতি চক্র বেআইনি ভাবে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে। আদালতের নির্দেশে দুর্নীতির মামলায় প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বাধীন কমিটি রিপোর্ট পেশ করেছে তাদের অনুসন্ধানের ভিত্তিতে। সিবিআইয়ের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘বাগ কমিটির তরফে শিক্ষা দফতরের বেশ কিছু আধিকারিক ও কর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সেই সব জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিয়ো রেকর্ডিং রয়েছে। বাগ কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করা হয়েছিল। তখনই নিয়োগের দায়িত্বের বাইরে থাকা অফিসারদেরও এই দুর্নীতিতে জড়িত থাকার তথ্যপ্রমাণ হাতে আসে এবং এখনও আসছে।’’
শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদেও বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে এসেছে বলে তদন্তকারীদের দাবি। তাঁরা জানাচ্ছেন, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এক সরকারি অফিসার বেআইনি নিয়োগের মূল চক্রী বলে তদন্তে উঠে এসেছে। তদন্তকারীদের আরও দাবি, আদালতের নির্দেশে পার্থবাবুর তৎকালীন ব্যক্তিগত সচিব সুকান্ত আচার্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সেই জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে দুর্নীতি চক্রের কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
তদন্তের স্বার্থে শিক্ষাসচিবকে চিঠি দিয়ে বিশেষ কিছু নথি তলব করা হয়েছে। সেই সব নথি যাচাইয়ের পরে ধাপে ধাপে শিক্ষা দফতরের ওই মহিলা কর্মী এবং আরও কয়েক জন আধিকারিক ও কর্তাকে তলব করা হবে বলে সিবিআই সূত্রের খবর।
নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি চক্র কী ভাবে সক্রিয় ছিল, পরেশবাবুকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদে তা কিছুটা স্পষ্ট হয়েছে বলে তদন্তকারীদের দাবি। তবে পরেশবাবুকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান তাঁরা। তদন্তকারীরা জানান, পার্থবাবুকেও বুধবার ফের তলব করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy