অমিতাভ মালিক
‘বিমল গুরুঙ্গ পাকড়াও’ অভিযানে গিয়ে অমিতাভ মালিক মারা যান ঠিক সাত দিন আগে। এক সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পরেও কয়েকটি প্রশ্ন ঘুরছে তাঁর মৃত্যু ঘিরে। পুলিশ-প্রশাসনের একাংশও এই নিয়ে সংশয়ে।
যে প্রশ্নটি সবার আগে সামনে আসছে, তা হল— অমিতাভের মৃত্যুর ঘটনায় ফরেন্সিক পরীক্ষা হয়েছে কি? হয়ে থাকলে তার রিপোর্ট কোথায়? প্রাক্তন অনেক পুলিশকর্তা বলছেন, মৃত্যু কী ভাবে হয়েছে, তার অনেকটাই বোঝা যায় ফরেন্সিক পরীক্ষা থেকে। বুলেট আঘাতের জায়গায় পুড়ে যাওয়া চামড়া এবং চুল বা রোম পরীক্ষা করে আন্দাজ করা যায়, কত দূর থেকে গুলি করা হয়েছিল। কিন্তু অমিতাভর ক্ষেত্রে এই পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ভিসেরা ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
দ্বিতীয় প্রশ্ন, অমিতাভ কি তাঁর পিস্তল থেকে গুলি করেছিলেন? করলে ক’রাউন্ড? পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, এই তথ্য থেকে জানা যাবে, কতটা লড়াই চালিয়েছিলেন তিনি। পুলিশের একটি অংশ অবশ্য এখন দাবি করছেন, অমিতাভের কাছে শুধু নাইন এমএম পিস্তলই নয়, ছিল একে ৪৭-ও। সেই বন্দুক থেকেই অমিতাভ গুলি চালিয়েছিলেন বলে ওই অফিসারদের দাবি।
আরও পড়ুন: নয়া চার্জ শরিফের বিরুদ্ধে
তৃতীয়ত, জখম গাড়িচালক কুমার তামাঙ্গ জানিয়েছেন, তিনি অমিতাভের গাড়ি চালাননি। তা হলে অমিতাভের গাড়ি কে চালাচ্ছিলেন? অভিযানকারীদের দাবি, অমিতাভ ছিলেন আইসি-র গাড়িতে। কিন্তু সেই গাড়িটি কি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল? যদি না হয়ে থাকে, তা হলে কেন বলা হয়, অমিতাভর ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িটি টেনে আনতে যাচ্ছিলেন কুমার?
একই ভাবে অভিযানের দু’টি ফাঁকও নজরে এসেছে অভিজ্ঞ অফিসারদের একাংশের। তাঁদের বক্তব্য, কোনও সশস্ত্র ঘাঁটিতে হানা দিলে তা চার দিক থেকে ঘিরে ফেলাই নিয়ম। কিন্তু ১৩ তারিখ সিংলার জঙ্গলে ছোট রঙ্গিত নদীর দিকে কোনও বাহিনী ছিল না। ওই দিকটা সিকিমে। সিকিম পুলিশের কাছে সহযোগিতা চাইলে তা ফাঁস হয়ে যেতে পারত বলে মনে করছে রাজ্য পুলিশের একাংশ।
দ্বিতীয়ত, এ ধরনের অপারেশনে সবচেয়ে সামনে থাকা ‘অ্যাসল্ট ফোর্সে’ যাঁরা থাকেন, তাঁদের জীবনের আশঙ্কা সব থেকে বেশি। তাই প্রতিটি পদক্ষেপে অভিযানকারীদের ‘কভার’-এ রাখাটা বাধ্যতামূলক। অভিজ্ঞ অফিসারদের একাংশের মতে, ‘কভারিং’ নিশ্ছিদ্র ছিল না বলেই অমিতাভ নিহত হয়েছেন।
অভিযানে থাকা এক কর্তার দাবি, গোড়ায় সব ঠিকঠাকই হচ্ছিল। প্রথম সারিতে আইসি, অমিতাভর সঙ্গে সব মিলিয়ে ১৫-১৬ জন ছিলেন। পিছনে দু’টি ভাগে এসপি, এএসপি, ডিআইজি-সহ ১৮ জন ছিলেন। ‘কভার’ দেওয়ার কথা এই দলগুলিরই। ওই কর্তা দাবি করেন, সিংলায় ‘কভারিং’ হয়েছে। তবে তা যে পুরোপুরি নিখুঁত ছিল না, তা-ও মেনে নেন পুলিশ অফিসারদের অনেকে।
পুলিশের একাংশের দাবি, এই অভিযানের পুরোটাই ভিডিও-তে তুলে রাখা হয়েছে। যদিও এখানেও প্রশ্ন উঠেছে, ওই দুর্গম পাহাড়ি জঙ্গলে ভিডিও করা কি আদৌ সম্ভব? তবে পুলিশের এই অংশটি দাবি করেছে, তারা প্রয়োজনে ওই ভিডিও প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy