বৈঠকে: সূর্যকান্ত মিশ্র। নিজস্ব চিত্র
শিলিগুড়িতে পুর নির্বাচনের লড়াই এবং তৃণমূল, বিজেপি বিরোধিতায় বিভিন্ন কর্মসূচির জন্য বাম-কংগ্রেস ছাড়াও এনসিপি, আরজেডি-সহ ১৭টি দলকে নিয়ে বৃহত্তর জোট করা হচ্ছে। শুক্রবার শিলিগুড়ি হিলকার্ট রোডে দলীয় কার্যালয়ে এ কথা জানান, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।
তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল, বিজেপি বিরোধী ভোটকে একত্রিত করতে ব্যাপক ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। নির্বাচন কর্মসূচির বাইরে যে গণসংগ্রাম হচ্ছে যেমন প্রজাতন্দ্র দিবসের দিন, ৩০ জানুয়ারি যে সব কর্মসূচি রয়েছে, বা ধর্মঘট হচ্ছে সেখানেও বিরোধী ঐক্য দরকার।’’ তিনি জানান, শিলিগুড়ি পুর নির্বাচনে আসন রফা, প্রার্থী ঠিক করার ক্ষেত্রেও বাম-কংগ্রেস বৈঠক করে করবে। তার বাইরে যে সব বাম দল বা অন্য দল আছে তাদের সঙ্গে কথা বলবে। জেলা নেতৃত্ব প্রার্থী ঠিক করে রাজ্য নেতৃত্বকে জানাবে। দলের নিয়ম মেনেই তা ঠিক হবে বলে রাজ্য সম্পাদক জানান। পুর নির্বাচনে জয় নিয়েও তিনি আশাবাদী। তাঁর কথায়, ‘‘পুরবোর্ড কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও সাফল্যের সঙ্গে চালিয়েছে। রাজ্য সরকার বঞ্চনা বৈষম্য করা সত্ত্বেও তার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়েছেন। তাদের কেউ ভাঙতে পারেনি। এবারও বৃহত্তর ঐক্যের মধ্য দিয়ে সাফল্য আসবে।’’
দেশের ক্ষেত্রে বিজেপি’র এবং রাজ্যের ক্ষেত্রে তৃণমূলের নীতিকে দুষেছেন সিপিএমে রাজ্য সম্পাদক। তাঁর দাবি, দেশ জুড়ে ফ্যাসিস্ট কায়দায় যে আক্রমণ হচ্ছে তা গত ৯০ বছরে পৃথিবী তথা দেশ দেখেনি। স্বাধীনতা সংগ্রামের আগে যে ঐক্যের মধ্য দিয়ে ভারতের ধারণা গড়ে উঠেছিল, যার ভিত্তিতে সংবিধান তৈরি হয়েছিল তা আক্রান্ত হচ্ছে। দেশের সার্বভৌমত্ব, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র, ধর্ম নিরপেক্ষতা এবং সমাজতন্ত্র এই চারটি মৌলিক বোঝাপড়া আক্রান্ত। তাই বৃহত্তর ঐক্য দরকার। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যে বিজেপিকে আসার সুযোগ করে দিয়েছে তৃণমূলই। তিনি বলেন, ‘‘ঘাস, ঘাস ফুল থাকলে গরু আসবে। গো-বলয় থেকে এরাজ্যে সাম্প্রদায়িক শক্তি জায়গা করে নিয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনের পর তা আরও স্পষ্ট হয়েছে। অর্থনীতি ভেঙে পড়ছে। মানুষের মধ্যে বিভাজন করা হচ্ছে। তৃণমূল দুর্নীতি যুক্ত বলে সেই আক্রমণ ঠেকাতে ব্যার্থ। এ রাজ্যে তৃণমূল নিজেরাই গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকারের দাবি, ‘‘সিপিএম’কে এমনিতেই খুঁজে যাওয়া যায় না। তাই এসব নিয়ে কিছু বলতে চাই না।’’
সূর্যকান্তের প্রশ্ন, দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী চিদম্বরমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই একই বিষয়ে এ রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর ভাইপো ঘুরে বেড়াচ্ছে। কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পাকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। লালু প্রসাদ যাদবকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। তা হলে পশ্চিমবঙ্গে হবে না কেন? তাঁর অভিযোগ, ‘‘কী বোঝাপড়া হচ্ছে, দিল্লিতে গেলে কী বৈঠক হচ্ছে জানি না। ‘মোদী গো ব্যাক’-এর দিন রাজভবনে দু’জনের বৈঠক। তার পর কুর্তা, মিষ্টি দেওয়া নেওয়া। এরা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বে? এনআরসি, সিএএ’র বিরুদ্ধে কেরলে বিধানসভায় প্রস্তাব নেওয়া হল। তখনই আমরা বলেছিলাম এ রাজ্যেও তেমন প্রস্তাবের কথা। তা শুনতে চাননি। মুখ্যমন্ত্রীর সদিচ্ছার অভাব।’’ তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব বা বিজেপি নেতারা সিপিএমের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy