তিন দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বহিরাগত’ তাণ্ডব চলছিল বলে অভিযোগ। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও তৃণমূলের শিক্ষাকর্মী সংগঠন সারা বাংলা শিক্ষাবন্ধু সমিতির দিকেই অভিযোগের আঙুল উঠছিল। উপাচার্যের ঘরে ঢুকে নিরাপত্তা আধিকারিককে মারধরের অভিযোগও উঠেছিল। সে সবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে শুক্রবার ‘মৌনী মিছিল’ হল রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। শিক্ষক, আধিকারিক, শিক্ষাকর্মী, গবেষক, ছাত্রছাত্রী— সব অংশের প্রতিনিধিত্ব দেখা গেল মিছিলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক ও কর্মীরা যে ভাবে ‘শারীরিক নিগ্রহে’র শিকার হয়েছেন, তাতে নিরাপত্তার অভাব স্পষ্ট বলে দাবি করলেন মিছিলে অংশ নেওয়া শিক্ষকরা।
ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে ২০২৩ সাল থেকে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছেন হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়। টিএমসিপির অভিযোগ, মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পরেও ‘অবৈধ’ ভাবে উপাচার্য পদ আঁকড়ে রয়েছেন শুভ্রকমল। রবীন্দ্রভারতীর উপাচার্য হিসেবে কাজ চালানোর দায়িত্ব শুভ্রকমলকে দিয়েছিলেন রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য সিভি আনন্দ বোস। স্থায়ী উপাচার্য হিসেবে কারও নিযুক্তি না হওয়া পর্যন্ত শুভ্রকমল কাজ চালিয়ে যেতেই পারেন বলে রাজভবন সূত্রের দাবি। কিন্তু টিএমসিপি গত সোমবার থেকে জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসে উপাচার্যের ঘরের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে। শুভ্রকমলের নানা সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করে। মঙ্গলবার উপাচার্যের ঘরে তারা তালা মেরে দিয়েছিল। বুধবার টিএমসিপি এবং শিক্ষাবন্ধু সমিতির অনেকে উপাচার্যের ঘরে ঢুকে পড়েন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা আধিকারিককে শারীরিক ভাবে হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন:
এই পরিস্থিতির বিরুদ্ধেই রবীন্দ্রভারতীর বিটি রোড ক্যাম্পাসে (মরকতকুঞ্জ) শুক্রবার ‘মৌনী মিছিল’ হয়েছে। দুপুর দেড়টা নাগাদ মিছিল শুরু হয়। গোটা বিটি রোড ক্যাম্পাস পরিক্রমা করে মিছিলটি। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (আরবুটা)-র তরফে বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সকলে একজোট হয়ে বার্তা দিতে চাই যে, আমাদের তিনটি ক্যাম্পাসেই শিক্ষার পরিবেশ ও স্বাভাবিক সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ ফিরুক।’’