Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
মাদ্রাসায় পাশের হারে রাজ্য-সেরা পূর্ব মেদিনীপুর

জেলায় প্রথম মুক্তার

হাইমাদ্রাসায় জেলার ছাত্র-ছাত্রীদের পাশের হার ৯৬ শতাংশ। যদিও রাজ্যের মেধা তালিকায় প্রথম দশের মধ্যে স্থান পাননি পূর্ব মেদিনীপুরের পড়ুয়ারা।

শেখ মুক্তার মহম্মদ (৭২৬)।

শেখ মুক্তার মহম্মদ (৭২৬)।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৯ ০১:১৪
Share: Save:

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশের হারে গত কয়েক বছর ধরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ছাত্র-ছাত্রীরা সেরার স্থান দখল করে এসেছে। যা আলোড়ন ফেলেছে রাজ্যের শিক্ষামহলে। আগামী ২১ মে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ। এবারও পূর্ব মেদিনীপুর সেরার স্থান দখল করতে পারবে কিনা তা নিয়ে কৌতুহল রয়েছে শিক্ষামহলে। তবে তার আগে বৃহস্পতিবার হাইমাদ্রাসা ও আলিম, ফাজিল পরীক্ষার ফলে পূর্ব মেদিনীপুরের ছাত্র-ছাত্রীরা এবার পাশের হারে সেরার স্থান দখল করে নিয়েছে।

হাইমাদ্রাসায় জেলার ছাত্র-ছাত্রীদের পাশের হার ৯৬ শতাংশ। যদিও রাজ্যের মেধা তালিকায় প্রথম দশের মধ্যে স্থান পাননি পূর্ব মেদিনীপুরের পড়ুয়ারা। তবে পাশের হারে সেরার স্থান দখল করায় খুশি জেলার ছাত্রছাত্রী থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা। হাইমাদ্রাসা পরীক্ষায় অন্য বছরের মতো এবারও জেলায় প্রথম সারিতে রয়েছে কাঁথির গিমাগেড়িয়া ওয়েলফেয়ার হাইমাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীরা। ৭২৬ নম্বর পেয়ে জেলার মেধা তালিকায় প্রথম স্থান পেয়েছে গিমাগেড়িয়া ওয়েলফেয়ার হাইমাদ্রাসার ছাত্র শেখ মুক্তার মহম্মদ। প্রথম ও দ্বিতীয়-সহ মেধা তালিকায় মোট সাতটি স্থানে রয়েছে এখানকার পড়ুয়ারা। মেয়েদের মধ্যে জেলায় প্রথম ও মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থানে কসবাগোলা এফওবি হাইমাদ্রাসার ছাত্রী রেশমি খাতুন। সে পেয়েছে ৭০৬। এছাড়াও রামনগরের কাঁটাবনি আটমহল হাইমাদ্রাসার ছাত্রী সফিকা পারভিন ৬৮৮ নম্বর পেয়ে জেলার মেধা তালিকায় ষষ্ঠ স্থান দখল করেছে। ঢেকুয়া ফারুকিয়া হাইমাদ্রাসার ছাত্র শেখ মহম্মদ কুরবান আলি ৬৬৭ নম্বর পেয়ে মেধা তালিকায় সপ্তম স্থান লাভ করেছে।

জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার মেধা তালিকায় প্রথম স্থান পাওয়া শেখ মুক্তার মহম্মদ ৯০. ৭৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। নন্দীগ্রামের ছেলে মুক্তারের বাবা শেখ আব্দুল রশিদ পেশায় দর্জি। মুক্তার পঞ্চম শ্রেণি থেকে স্কুলের ছাত্রাবাসে থেকে পড়াশোনা করত। ক্লাসে বরাবরই প্রথম হত। এই হাইমাদ্রাসারই ছাত্র শেখ শাহনওয়াজ হোসেন ৭১৫ নম্বর পেয়ে জেলার মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছে। হলদিয়ার ছেলে শাহনওয়াজের বাবা একটি বেসরকারি কারখানার শ্রমিক। শাহনওয়াজও বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে থেকে পড়াশোনা করত।

সাফল্যের-হাসি: ফল প্রকাশের পর। বৃহস্পতিবার কাঁথিতে। নিজস্ব চিত্র

গিমাগেড়িয়া হাইমাদ্রাসার মোট ৬৩ জন ছাত্রছাত্রীর সকলেই পাশ করেছে। ছাত্রছাত্রীদের এমন সাফল্যের কারণ নিয়ে প্রধানশিক্ষক আহমেদ হোসেন বলেন, ‘‘স্কুলে পড়ুয়াদের দৈনন্দিন পড়াশোনা ছাড়াও নিয়মিত মোটিভেশন ক্লাস করানো হয়। ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন অসুবিধার কথা জেনে তাদের সাহায্য করা হয়। ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় আগ্রহ ও পরীক্ষায় ভাল ফলের জন্য পরিশ্রমেই এমন সাফল্য এসেছে। তবে রাজ্যের মেধা তালিকায় আমাদের পড়ুয়ারা স্থান না পাওয়ায় একটু আফসোস থেকে গেল।’’

কাঁটাবনি আটমহল হাইমাদ্রাসার প্রধানশিক্ষক হাসানুজ্জামান খান বলেন, ‘‘দরিদ্র পরিবারের মেয়ে সফিকা পারভিন স্কুলের হস্টেলে থেকে পড়াশোনা করে এমন সাফল্য পেয়েছে।’’

পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক আমিনুল আহসান বলেন, ‘‘হাইমাদ্রাসা পরীক্ষায় জেলার ছাত্রছাত্রীরা পাশের হারে রাজ্যে প্রথম স্থান দখল করায় আমরা খুশি। পড়ুয়া, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের সম্মিলিত চেষ্টায় এমন সাফল্য এসেছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

East Midnapore High Madrasah Examination Madrasah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE