Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

কুমির ঠেকাতে হাঙর নয়, ত্রিপুরা দিয়েই বোঝাচ্ছেন মানিক

বাম সংগঠনের প্রতি তাঁর আহ্বান, নিরবচ্ছিন্ন ভাবে মানুষকে সংহত করার কাজ করে যেতে হবে। বিমর্ষ না হয়ে মানুষের জীবন যন্ত্রণা নিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলনে থাকতে হবে।

মঙ্গলবার ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে ত্রিপুরার বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। নিজস্ব চিত্র।

মঙ্গলবার ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে ত্রিপুরার বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। নিজস্ব চিত্র।

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৯ ০১:১২
Share: Save:

লোকসভা ভোটের প্রচারে তাঁরা যা বলেছিলেন, মানুষ তা বিশ্বাস করেননি। কিন্তু মানুষের উপরে তাঁদের বিশ্বাস রাখতে হবে। কুমির তাড়াতে হাঙর ডেকে আনলে দু’দিক থেকেই যে আক্রমণের মুখে পড়তে হবে, এই কথা বুঝিয়ে যেতেই হবে। মানুষও নিজেদের অভিজ্ঞতায় বামেদের কথা মিলিয়ে নেবেন। এমনই অভিমত ত্রিপুরার বিরোধী দলনেতা মানিক সরকারের।

বাংলায় লোকসভা ভোট মিটে যাওয়ার পরে এই প্রথম এ রাজ্যে কর্মসূচিতে এসেছিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। যে রাজ্যে এসেছেন, সেখানে লোকসভা ভোটে বিজেপি ১৮টি আসন পেয়েছে। আবার যে রাজ্য থেকে এসেছেন, সেখানে এই মুহূর্তে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৮৬% আসন বিজেপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে নিয়েছে! দুই রাজ্যের তুলনামূলক চিত্র সামনে রেখেই সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মানিকবাবু বলছেন, ‘‘ভোটের সময়ে এখানে মানুষের মধ্যে কিছু বিভ্রান্তি ছিল। প্রচারে যা বলেছিলাম, মানুষ শোনেননি। কিন্তু কুমিরকে ঠেকাতে গিয়ে হাঙর ডেকে আনলে দু’টোর আক্রমণেই পড়তে হবে শেষ পর্যন্ত! এটা তো হতে পারে না। এটা মানুষের কাছে বলতেই হবে।’’ তৃণমূলের ‘বিপদ’ থেকে বাঁচতে বিজেপিকে বিকল্প ভাবা যে উচিত নয়, তা-ই বোঝাতে চেয়েছেন মানিকবাবু।

সরকারি কর্মচারী, শ্রমিক, শিক্ষকদের যুক্ত আন্দোলনের ‘১২ জুলাই কমিটি’র ৫৩ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ‘ভারত কোন পথে’ শীর্ষক আলোচনায় মঙ্গলবার ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে ত্রিপুরার বিরোধী দলনেতা বলেছেন, পুলওয়ামা-বালাকোটের জেরে এক ধরনের জাতীয়তাবাদী উন্মাদনা এবং তার সঙ্গে সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত বিভাজনের কৌশল যোগ হয়ে লোকসভা নির্বাচনের ফল বিজেপির পক্ষে গিয়েছে। কিন্তু অর্থনীতি-সহ নানা ক্ষেত্রে জীবনের সঙ্কট সামনে এলে বিজেপির ‘ঘোর’ কেটে যাবে বলে মানিকবাবুর বিশ্বাস। বাম সংগঠনের প্রতি তাঁর আহ্বান, নিরবচ্ছিন্ন ভাবে মানুষকে সংহত করার কাজ করে যেতে হবে। বিমর্ষ না হয়ে মানুষের জীবন যন্ত্রণা নিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলনে থাকতে হবে।

ত্রিপুরায় অবশ্য লোকসভার দু’টি আসনই বিজেপি জোর করে জিতেছে বলে অভিযোগ বিরোধী দলনেতার। অনুষ্ঠানের পরে এই বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘দু’টো আসনই ওরা দখল করেছে। এর পরে পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষকে ভোট দিতে দিলে অন্যায় ধরা পড়ে যাওয়ার ভয় ছিল। তাই ত্রিপুরায় ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের ৮৬% আসনে বিরোধীদের প্রার্থীই দিতে দেওয়া হয়নি।’’ আর অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘‘ত্রিপুরাকে গণতন্ত্র সংহারের পরীক্ষাগার হিসেবে ব্যবহার করছে বিজেপি। সফল হলে সারা ভারতে তা-ই করবে!’’

কংগ্রেস বামেদের সঙ্গে সমঝোতায় রাজি হলে লোকসভা ভোটে বাংলায় ফল এত খারাপ হত না, সেই ইঙ্গিতও এ দিন দিয়েছেন মানিকবাবু। জাতীয় স্তরে বিজেপি-বিরোধী ঐক্য গড়তে কংগ্রেসের ভূমিকার সমালোচনাও করেছেন। একই সঙ্গে নিজেদের প্রতি এই পলিটব্যুরো সদস্যের বার্তা, ‘‘নিজের কোমরের জোর বাড়াতেই হবে। একে ধরে, ওকে ধরে শুধু হবে না। কারও কাঁধে চেপে গাছে উঠলে তিনি যদি নীচে থেকে সরে যান, তা হলে নামব কী করে? তাই হাত-পায়ের ছাল-বাকল উঠে গেলেও গাছে ওঠা শিখতেই হবে!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Manik Sarkar CPM West Bengal BJP Tripura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy