ফাইল চিত্র
শেষ পর্যন্ত হাজিরা দিলেন। বয়ান দিলেন। কলকাতা হাই কোর্টে কৌঁসুলি থেকে বিচারপতি পর্যন্ত নানা জনের বিস্তর প্রশ্নের মুখেও পড়লেন এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিংহ। স্কুলশিক্ষক নিয়োগের মামলায় দেওয়া তাঁর বয়ানে অসঙ্গতিও ধরা পড়েছে বলে উচ্চ আদালত সূত্রের খবর।
শুক্রবার বেলা ২টোয় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে উপস্থিত হন শান্তিপ্রসাদ। তাঁর বয়ান দেওয়ার সময় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য-সহ মামলার আবেদনকারীর আইনজীবীরা নানা ধরনের প্রশ্ন করেন। পরবর্তী শুনানি ২৫ মার্চ।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ মামলা যে-পথে এগোচ্ছে, তা কার্যত নজিরবিহীন বলে মনে করছেন আইনজীবীদের একাংশ। কারণ, সাম্প্রতিক অতীতে এ ভাবে কোর্টে ডেকে বয়ান নথিভুক্ত করার ঘটনা ঘটেনি। অনেক কৌঁসুলির বক্তব্য, যা যা অসঙ্গতি এ-পর্যন্ত উঠে এসেছে, তা নিয়োগে দুর্নীতিরই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
স্কুলে নিয়োগের একাধিক মামলায় ইতিমধ্যেই সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তার মধ্যে দু’টি মামলায় প্রাক্তন বিচারপতি নেতৃত্বাধীন কমিটিকে তদন্তভার দিয়েছে বিচারপতি হরিশ টন্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ। দু’টি মামলা এখনও ডিভিশন বেঞ্চের বিচারাধীন। এ দিন সেই দু’টি মামলায় বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, আদালতে জমা পড়া নথিপত্র দেখে হিমশৈলের চুড়ো মনে হচ্ছে। এই ধরনের অনিয়ম সত্ত্বেও কমিশন নিজেরা এফআইআর করেনি কেন, সেই প্রশ্নও তুলেছে ডিভিশন বেঞ্চ। তবে এই ধরনের মামলা নির্ধারিত ডিভিশন বেঞ্চ না-হওয়ায় বিচারপতি সেন আপাতত দু’দিনের স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। মঙ্গলবার বিচারপতি টন্ডন এবং বিচারপতি সামন্তের বেঞ্চে এই দু’টি মামলার শুনানি হতে পারে।
শান্তিপ্রসাদ এ দিন কোর্টে যা জানিয়েছেন, তার সারসংক্ষেপ হল, উপদেষ্টা হিসেবে তিনি নিয়োগ সংক্রান্ত নজরদার কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। নিয়োগে নানা অভিযোগ এলে তিনি কমিশনের ‘এগজ়ামিনেশন সেল’ বা পরীক্ষা সেলের কাছে সেগুলি পাঠাতেন। এই প্রসঙ্গে একটি নিয়োগপত্রের কথা সামনে এসেছে। সেই সময় সেটি শান্তিপ্রসাদের কাছে পাঠিয়েছিলেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অফিসার-অন-স্পেশাল ডিউটি (ওএসডি)। এগজ়ামিনেশন সেলের কোন কোন কর্মী ওই নথিপত্র সামলাতেন, তাঁদের নামও বলেছেন শান্তিপ্রসাদ। ওএসডি কেন চেয়ারম্যানকে না-জানিয়ে সরাসরি শান্তিপ্রসাদকে বললেন, এ দিন সেই প্রশ্নও ওঠে কোর্টে। প্রসঙ্গত, ওই ওএসডি-ও নিয়োগ সংক্রান্ত নজরদার কমিটির সদস্য ছিলেন।
নথিপত্র অনুযায়ী, নিয়োগের সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছিল ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি। অথচ ১৩ জানুয়ারি কমিশনের চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার ওই পদ থেকে সরে যান। তা হলে ১৪ জানুয়ারি নিয়োগের সুপারিশপত্রে তাঁর সই কী ভাবে পাওয়া গেল, শান্তিপ্রসাদকে সেই প্রশ্ন করেন বিচারপতি। শান্তিপ্রসাদ জানান, চেয়ারম্যানের অনুমতিক্রমে নজরদার কমিটির বৈঠক দু’বার ডাকা সত্ত্বেও কোরাম না-হওয়ায় তা বাতিল হয়ে যায়। তা হলে শান্তিপ্রসাদ কী ভাবে সেই কমিটির হয়ে কাজ করলেন, প্রশ্ন করেন বিচারপতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy