রেশন ‘দুর্নীতি’তে ধৃত বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য। —ফাইল চিত্র।
ফরেক্স সংস্থার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা বিদেশি মুদ্রায় পরিবর্তন করে দেশের বাইরে পাঠানো হয়েছে। বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যকে আদালতে হাজির করিয়ে এ কথাই জানিয়েছে ইডি। তাদের দাবি, প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাঠানো হয়েছে। ইডির নজরে রয়েছেন শঙ্করের আত্মীয়েরাও। কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রে খবর, শঙ্কর ছাড়াও তাঁর আট জন আত্মীয়ের নামে বিভিন্ন সংস্থা রয়েছে, যেগুলি টাকা পাচারের সঙ্গে যুক্ত।
শঙ্কর এবং তাঁর আত্মীয়দের সূত্রে ছ’টি সংস্থার নাম উঠে এসেছে বলে জানা গিয়েছে ইডি সূত্রে। তার মধ্যে শঙ্করের নামে একটিমাত্র সংস্থা রয়েছে, যার নাম ‘এসআর আঢ্য ফিন্যান্স প্রাইভেট লিমিটেড’। তাঁর স্ত্রীর নামও রয়েছে ওই সংস্থায়। এ ছাড়া শঙ্করের স্ত্রী জ্যোৎস্নার নামে রয়েছে ‘অর্পণ ফরেক্স প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে আরও এক সংস্থা। শঙ্করের পুত্র শুভ আঢ্যের নামে সংস্থাটির নাম ‘শঙ্কর ফরেক্স প্রাইভেট লিমিটেড’। শঙ্করের কন্যার নাম ঋতুপর্ণা আঢ্য। তাঁর নাম রয়েছে ‘অর্পণ ফরেক্স’-এ।
শঙ্করের ভাই মলয় আঢ্যের নামে ফরেক্স সংস্থা ছাড়াও রয়েছে একটি আইসক্রিম কারখানা। যার নাম ‘অঞ্জলি আইসক্রিম প্রাইভেট লিমিটেড’। ওই সংস্থায় নাম রয়েছে মলয়ের স্ত্রী তানিয়া আঢ্যেরও। ইডি যখন বনগাঁয় শঙ্করের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়েছিল, আধিকারিকেরা মলয়ের এই আইসক্রিম কারখানাতেও তল্লাশি চালান।
মলয়ের নামে যে ফরেক্স সংস্থাটি রয়েছে, তার নাম ‘আঢ্য ফরেক্স প্রাইভেট লিমিটেড’। সেখানে শঙ্করের মা শিবানী আঢ্যও রয়েছেন।
শঙ্করের শ্যালক অমিত ঘোষ। তিনি যুক্ত আছেন ‘শঙ্কর ফরেক্স প্রাইভেট লিমিটেড’-এর সঙ্গে। এ ছাড়া, মলয়ের স্ত্রী তানিয়ার নামে ‘ত্রিনয়নী ফরেক্স প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে আরও একটি সংস্থার কথা জানা গিয়েছে।
ইডির দাবি, রেশন ‘দুর্নীতি’র টাকা ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কাছ থেকে শঙ্করের এই সমস্ত সংস্থায় আসত এবং সেখান থেকে বিদেশি মুদ্রায় পরিবর্তন করে ওই টাকা দুবাইতে পাঠানো হত। কোনও কোনও ক্ষেত্রে সরাসরি, কখনও আবার বাংলাদেশের মাধ্যমে টাকা দুবাই পৌঁছত। জ্যোতিপ্রিয়ের গ্রেফতারির পর শঙ্কর তাঁর সঙ্গে হাসপাতালে চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগও করেছেন বলে দাবি ইডির। ওই চিঠি কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে এসেছে। সেখানে একাধিক নাম রয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছেন আধিকারিকেরা। চিঠির বয়ান বাংলা এবং ইংরেজি ভাষায়।
ইডি সূত্রে খবর, মলয় এবং শিবানীর ‘আঢ্য ফরেক্স প্রাইভেট লিমিটেড’-এর একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় ২,৭০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এই সংস্থা তাই বিশেষ ভাবে ইডির নজরে রয়েছে। এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। আদালতে শঙ্করের ৯০টি ফরেক্স সংস্থার কথা জানিয়েছে ইডি। যদিও তাঁর আইনজীবীর দাবি, শঙ্কর বিদেশি মুদ্রা কেনাবেচার বৈধ ব্যবসা করেন।
গত শুক্রবার সকালে রেশন ‘দুর্নীতি’র সূত্রে বনগাঁয় শঙ্করের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। প্রায় ১৭ ঘণ্টা চলে তল্লাশি। রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ শঙ্করকে গ্রেফতার করে গাড়িতে তোলা হয়। ওই সময়ে বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান শঙ্করের কয়েক জন অনুগামী। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা ভিড় খালি করেন। কেউ কেউ সিআরপিএফের লাঠির বাড়িও খেয়েছেন বলে অভিযোগ। ইডির গাড়ির দিকে ছোড়া হয়েছে ইট। এর পর শনিবার শঙ্করকে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে হাজির করানো হয়। তাঁকে ১৪ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy