সপ্তাহান্তে দু’দিন ছুটি! চলো দিঘা।
আমবাঙালির চিরন্তন আকর্ষণ তো বটেই, ভিন রাজ্যের মানুষের কাছেও ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের ওই সৈকত-শহর। অথচ অভিযোগ, সেখানে মধ্যবিত্তদের থাকার বিস্তর ডেরা থাকলেও উচ্চবিত্তদের পছন্দমাফিক হোটেল-রিসর্ট বিশেষ নেই। যে কারণে দিঘায় পর্যটন বাবদ বড় আয়ের সুযোগ থেকে রাজ্য বঞ্চিত হচ্ছে বলে আক্ষেপ রয়েছে নানা মহলে। এ বার সেই ‘খরা’ কাটার একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
দিঘায় পাঁচতারা হোটেল বানাতে উদ্যোগী হয়েছেন এ রাজ্যেরই এক ব্যবসায়ী। যে উদ্দেশ্যে তিনি ওখানে জমিও নিয়েছেন।
শুধু সমুদ্রতট নয়। সূত্রের খবর, একই সংস্থা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পর্যটন-ব্যবসায়ে নামতে চলেছে। সুন্দরবন, ঘুম, দার্জিলিং ও মকাইবাড়িতে তারা বিলাসবহুল রিসর্ট বানানোর পরিকল্পনা করেছে।
এবং এতে রাজ্য সরকার আশাবাদী। কর্তাদের মতে, পর্যটন-মানচিত্রে পশ্চিমবঙ্গকে আকর্ষণীয় করে তোলার যে প্রয়াস চলছে, এ সব উদ্যোগে তা জোরদার হবে। পর্যটন বিকাশের তাগিদে ‘গল্ফ ট্যুরিজম’-এর উপরেও সরকার বিলক্ষণ জোর দিচ্ছে। জলপাইগুড়ির গজলডোবায় ৮০ একর জুড়ে গল্ফ কোর্স তৈরির জন্য রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা হয়েছে এক ব্রিটিশ কোম্পানির। যারা কিনা ওখানে ভিলাও বানাবে।
প্রসঙ্গত, উচ্চবিত্তদের কথা ভেবে গজলডোবার গল্ফ কোর্স লাগোয়া পাঁচ একর জমিতে রিসর্ট বানাচ্ছে বিশ্বখ্যাত এক সংস্থা। সরকারি সূত্রের খবর, রাজ্যের তরফে বুধবারই তাদের সংশ্লিষ্ট চুক্তিপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের বিন্নাগুড়ি-চালসায় কয়েকটি চা-বাগানে যে গোটা তিনেক পরিত্যক্ত গল্ফ কোর্স রয়েছে, সেগুলিকে চালু করে তার সঙ্গে পর্যটনকে জুড়ে দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা চলছে। ‘‘দেরিতে হলেও শুরুটা হয়েছে।’’— বলছেন পর্যটন দফতরের এক আধিকারিক।
ঘটনা হল, এই প্রথম গুজরাতের ধাঁচে পশ্চিমবঙ্গে পর্যটনের জন্য আলাদা নীতি তৈরি করছে তৃণমূল সরকার। তফাত একটাই— গুজরাত তাদের নীতি ফলাও করে জানিয়ে দিয়েছে, আর পশ্চিমবঙ্গ এখনও তা লুকিয়ে রেখেছে আস্তিনের তলায়। কী রকম?
আসন্ন দুর্গাপুজো উপলক্ষে দফতরের কী পরিকল্পনা, তা জানাতে এ দিন সাংবাদিক সম্মেলন ডেকেছিলেন রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেখানে কথায় কথায় পর্যটন-নীতির প্রসঙ্গ ওঠে। মন্ত্রী জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই ‘নীতি’র কথা ঘোষণা করবেন আগামী বছর, বিশ্ব বাংলা বিজনেস সামিটে। যেটুকু ইঙ্গিত, নীতিতে পাঁচতারা হোটেল, গল্ফ কোর্স ইত্যাদির উল্লেখ থাকবে। থাকতে পারে নতুন কিছু গন্তব্যের দিশাও।
এ দিকে গুজরাত কিন্তু পর্যটনের ময়দানে রীতিমতো দৌড় দিচ্ছে। গুজরাত পর্যটনের কর্তা কিংশুক বিশ্বাস আমদাবাদ থেকে জানাচ্ছেন, তাঁদের সাম্প্রতিক পর্যটন-নীতিতে প্রচুর ছাড়ের কথা বলা হয়েছে। হোটেল, রিসর্ট বা থিম পার্ক, যা-ই বানানো হোক না কেন, গুজরাত সরকার সে বাবদ বিলাস-কর, বিনোদন-কর, এমনকী বিদ্যুতের উপরে রাজ্যকে দেয় করেও ছাড় দিতে প্রস্তুত। পশ্চিমবঙ্গ কি সেই পথে হাঁটবে?
তা অবশ্য এখনও পরিষ্কার নয়। তবে অমিতাভ বচ্চন যেমন গুজরাত পর্যটনের হয়ে প্রচার করছেন, তেমন পশ্চিমবঙ্গ ব্যবহার করতে চলেছে শাহরুখ খানকে। মুখ্যমন্ত্রী বহু দিন আগেই ঘোষণা করেছেন, শাহরুখ হলেন এ রাজ্যের ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর।’ এ দিন ব্রাত্যবাবু জানিয়েছেন, শাহরুখকে কলকাতায় এনে পর্যটনের জন্য আলাদা ক্যাপসুল ফিল্ম তৈরি করা হবে, যার বাজেট ধরা হয়েছে আট কোটি টাকা। ‘‘শাহরুখ আমাদের মৌখিক ভাবে জানিয়েছেন, রাজ্যের পর্যটন প্রচারের জন্য তিনি নিজে কোনও টাকা নেবেন না।’’— মন্তব্য করেন দফতরের সচিব অজিত বর্ধন।
যদিও লিখিত ভাবে তাঁদের হাতে সেই আশ্বাস এখনও এসে পৌঁছয়নি বলে জানিয়েছেন সচিব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy