Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Boat Capsized

শমসেরগঞ্জে গঙ্গায় আচমকা ঝড়ে এক জনের দেহ উদ্ধার

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি এই এলাকায় গঙ্গায় প্রচুর ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। ডিঙি নৌকা করে অনেকেই দিনভর ভরা গঙ্গায় মাছ ধরছেন। আচমকা ঝড় ওঠার সময় তাই গঙ্গায় অনেক নৌকাই ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:০৭
Share: Save:

বুধবার আচমকা ঝড়ে শমসেরগঞ্জ ও ফরাক্কার ভরা গঙ্গায় একাধিক নৌকো ডুবে যায় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছিল। সেই ঘটনায় বৃহস্পতিবার এক জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। তবে তাঁর পরিচয় জানা যায়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি এই এলাকায় গঙ্গায় প্রচুর ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। ডিঙি নৌকা করে অনেকেই দিনভর ভরা গঙ্গায় মাছ ধরছেন। আচমকা ঝড় ওঠার সময় তাই গঙ্গায় অনেক নৌকাই ছিল। তবে ঠিক ক’টা নৌকা ছিল ও কত জন গঙ্গায় পড়ে গিয়েছিলেন, তা জানা যায়নি। স্থানীয় সূত্রে খবর, একটি যাত্রিবাহী নৌকাও ছিল। আসছিল শোভাপুর থেকে শিকদারপুরে। সেই নৌকাও ধুলিয়ানের কাছে উল্টে যায়। ওই নৌকার ৫ জন ফরাক্কার অর্জুনপুরের কাছে পাড়ে ওঠেন। দু’জনকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করেন লোহরপুরে। সরকারি ভাবে তিন জন নিখোঁজ বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিশের কাছে কোনও নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়নি।

ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র জন্য ফরাক্কা ও শমসেরগঞ্জ এলাকায় সমস্ত ফেরিঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গঙ্গায় বৃহস্পতিবারও ডিঙি নিয়ে ইলিশ ধরতে মৎস্যজীবীদের ভিড় দেখা গিয়েছে। পুলিশ ও বিএসএফের নিষেধ সত্ত্বেও এমনটা ঘটায় প্রশাসনের উদ্বেগ বেড়েছে।

কিন্তু বুধবার সন্ধ্যায় আচমকা ওই ঝড় তৈরি হল কেন? বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ওই ঝড়ের সঙ্গে ‘দানা’র কোনও সম্পর্ক নেই। জঙ্গিপুর কলেজের ভূগোলের অধ্যাপিকা রিয়া বিশ্বাস বলেন, ‘‘মিনিট দশেকের ঝড় কার্যত সাইক্লোন নয়। কিন্তু কোনও জায়গায় যদি তাপমাত্রা দ্রুত কমবেশি হয়, তাতে টর্নেডোর মতো ঝড় তৈরি হয়। এ ধরনের ঝড় মুর্শিদাবাদ ও আশপাশের জেলায় এর আগেও ঘটেছে। গোকর্ণেও এমনটাই ঘটেছিল।’’ তিনি বলেন, ‘‘আবহাওয়ার মধ্যে যে সব উপকরণ রয়েছে, তার মধ্যে কোনও বৈপরীত্য তৈরি হলে এমনটা ঘটে। শমসেরগঞ্জের ক্ষেত্রেও সে ভাবেই আচমকা প্রচণ্ড ঝড়ের সৃষ্টি হয়েছে বলেই মনে হয়।’’

বুধবার নৌকা নিয়ে গঙ্গায় মাছ ধরতে বেরিয়েছিলেন লোহরপুরের অসীম শেখ। রাত ৮টা নাগাদ ভরা গঙ্গা সাঁতরে বাড়ি ফিরেছেন। তিনি বলেন, ‘‘দুপুরে আবহাওয়া ছিল সুন্দর। মাঝ নদীতে পৌঁছে সবে জালটা ফেলেছি, তখনই আচমকা তুমুল ঝড়। একের পর এক নৌকা উল্টে যাচ্ছিল। আমাদের টিনের তৈরি ডিঙি, জালও ডুবে ভেসে গিয়েছে বাংলাদেশের দিকে। ৩ ঘণ্টা ধরে জলের সঙ্গে লড়াই করে উঠি মালদহের পারলালপুর ঘাটে। ৭ জন ছিলাম। সকলেই সাঁতার জানতাম। তাই অত ঢেউয়ের মধ্যেও ৭ জনই পাড়ে উঠি। তবে ১০-১২ বছরের ছেলেরাও জলে পড়েছে। তাদের কী হয়েছে জানি না।”

ওই এলাকারই কামাল হোসেন বলেন, ‘‘হঠাৎই বাংলাদেশের দিক থেকে ঘুরতে ঘুরতে একটা ঝড় আসতে দেখলাম। নিমেষের মধ্যেই ডিঙিগুলো জলে উল্টে যেতে থাকে। দু’জন ভেসে যাচ্ছেন দেখে জলে নেমে তাঁদের ধরি। অনুপনগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করি। তাঁদের মুখেই জানলাম ৫ জন ছিল নৌকোয়। বাবা পাড়ে উঠেছেন। কিন্তু দুই ৯ ও ১২ বছরের ছেলের খোঁজ পাননি আজও।” পুলিশ জানিয়েছে, এই এলাকায় গঙ্গার ধারের সব জায়গায় নজর রাখা হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Samserganj
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy