জুনিয়র ডাক্তারদের সমর্থনের কথা জানালেন সিনিয়র ডাক্তারেরা। ছবি: পিটিআই।
জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে রয়েছেন তাঁরা। আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কোনও রকম শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে কর্মবিরতির পথে যাবেন বলে জানিয়ে দিলেন সিনিয়র ডাক্তারেরাও। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ভবনের সামনে সাংবাদিক বৈঠক করে ১০টি চিকিৎসক সংগঠনের সদস্যেরা জানালেন, প্রয়োজনে সরকারি এবং বেসরকারি দুই হাসপাতালেই কর্মবিরতি শুরু করবেন তাঁরা।
স্বাস্থ্য ভবনের সামনে মঙ্গলবার দুপুর থেকে অবস্থান করছেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারেরা। আন্দোলনস্থলে দাঁড়িয়ে তাঁদের সমর্থনের কথা জানিয়ে দিল সিনিয়র চিকিৎসকদের সংগঠন। মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টারের রাজ্য সম্পাদক বিপ্লব চন্দ বলেন, ‘‘আমরা সিনিয়র চিকিৎসকেরা কাজ করছি। রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে যতটা সম্ভব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছি। সরকারের কাছে আবেদন করছি, সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তারদের এমন কিছু করতে বাধ্য করবেন না, যাতে মানুষের স্বাস্থ্য প্রশ্নের সামনে দাঁড়িয়ে যায়।’’ তিনি দাবি করেছেন, রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় দুর্নীতি রয়েছে। এই দু্র্নীতি দমনের জন্য তাঁরা আবেদন করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থার রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি প্রবেশ করেছে। মাথা পর্যন্ত দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। যত পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানো হচ্ছে, দুর্নীতি বেরিয়ে আসছে। আমরা সরকার এবং তদন্তকারী সংস্থার কাছে এই দুর্নীতিকে উৎপাটনের আবেদন করছি। সরকার এমন কোনও ঘটনা ঘটাবে না, যাতে চিকিৎসকদের আন্দোলন হাতের বাইরে বেরিয়ে যায়।’’
‘জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টর্স’-এর সদস্য সুশান্ত চৌধুরী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি ‘ন্যায়সঙ্গত’। তিনি বলেন, ‘‘জুনিয়র জাক্তারেরা এমন কোনও দাবি করেননি, যা মানা যাবে না। এই দাবি মানার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সদিচ্ছা থাকা দরকার।’’ ওই সংগঠনের সদস্য তমোনাশ চৌধুরী বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষকে সুস্থ পরিষেবা দেওয়ার জন্য এই আন্দোলন। দুঃখের ঘটনা, আমাদের বোনের মৃত্যু পর আগুন জ্বলেছে, তবে এই আগুন দীর্ঘদিন ধরে জ্বলছে।’’ দুর্নীতির বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়েছে আইএমএ (ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন)। আইএমএ-র অ্যাকশন কমিটি সদস্য সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, আইএমের পক্ষ থেকে তাঁদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়েছে। সদস্যপদ খারিজ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য ভবনের কাছে অভিযোগ লিপিবদ্ধ করেছি। তদন্ত কমিটি তৈরি হচ্ছে। সেই কমিটিতে অধ্যক্ষেরা রয়েছেন।’’
সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার কথা বলেছিল। তার পরেও জুনিয়র ডাক্তারেরা নিজেদের অবস্থানে অনড় ছিলেন। জানিয়েছিলেন, পাঁচ দফা দাবি পূরণ না হলে তাঁদের আন্দোলন চলবে। মঙ্গল এবং বুধবার নবান্নের তরফে মেল করে তাঁদের যেতে বলা হয়েছিল। যদিও আন্দোলনকারীরা যাননি। স্বাস্থ্য ভবনের কাছে তাঁদের অবস্থান চলছে। এই আবহে হাসপাতালে কে কাজে যোগ দিলেন, তা বৃহস্পতিবার খতিয়ে দেখছে স্বাস্থ্য ভবন। বিভিন্ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে স্বাস্থ্যভবনের তরফে। বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টো পর্যন্ত কারা কাজে এসেছেন, নির্দিষ্ট করে জানাতে হবে। যদিও স্বাস্থ্যভবন দাবি করেছে, এটা রুটিন প্রক্রিয়া। এর পরেই সিনিয়র চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিলেন, আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলে কর্মবিরতির পথে যাবেন তাঁরাও। চিকিৎসক সংগঠনগুলির দাবি, সরকারি হাসপাতালের সঙ্গে বেসরকারি হাসপাতালেও হবে ‘শাটডাউন’। মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টারের রাজ্য সম্পাদক বিপ্লব বলেন, ‘‘বিচারের দাবি উঠেছে সব জায়গায়। জুনিয়র ডাক্তারদের পাঁচ দফা দাবি বিবেচনা করা দরকার। মুখ্যমন্ত্রীকে এখনই বসতে হবে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে, নয়তো বার্তা যাবে তিনি চাইছেন না যে, এই অচলাবস্থা দূর হোক। আমরা চাইছি যে, সাধারণ মানুষ চিকিৎসা পান। কিন্তু ন্যায়বিচারও দরকার।’’ সিনিয়র ডাক্তারদের সাংবাদিক বৈঠকের পরেই আবার রাজ্যের তরফে মেল করে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা জানানো হয়েছে। এই প্রতিবেদন প্রকাশ করার সময় পর্যন্ত স্পষ্ট নয়, জুনিয়র ডাক্তারেরা এর পর কী করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy