Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Sehgal Hossain

Sehgal Hossain: কোটি টাকার জমি-বাড়ি সহগল-আত্মীয়দের! মামাকে ছ’তলা বাড়ি ‘দান’ ঘিরে প্রশ্ন

ডোমকল বাজারেই ববিনের মামা হাবিবুর রহমানের ছ’তলা বাড়ি। পরিবার সূত্রে দাবি, হাবিবুরকে বাড়িটা দান করেছেন সহগলের মা লতিফা বেওয়া।

সহগলের মামা হাবিবুর রহমানের বাড়ি।

সহগলের মামা হাবিবুর রহমানের বাড়ি। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস
ডোমকল শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২২ ০৫:২২
Share: Save:

ববিনের বিষয়আশয় কত? সিবিআইয়ের চার্জশিটে বলা আছে ৪ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। শুনেই হেসে ফেলছেন মুর্শিদাবাদের ডোমকলের মানুষ। এখানেই মামাদের বাড়ি ববিনের। সে সব বাড়ি দেখিয়ে স্থানীয় মানুষজনই বলেন— আত্মীয়স্বজনের কাছে ববিনের যে টাকা ছড়িয়ে রয়েছে, তার হিসেব ধরলেই অঙ্কটা বেড়ে যেতে পারে।

ববিনকে সকলেই চেনেন সহগল হোসেন নামে। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী তিনি। এখন রয়েছেন সিবিআই হেফাজতে।

ডোমকল বাজারেই ববিনের মামা হাবিবুর রহমানের ছ’তলা বাড়ি। পরিবার সূত্রে দাবি, হাবিবুরকে বাড়িটা দান করেছেন সহগলের মা লতিফা বেওয়া। স্বামীর পেনশন ছাড়া লতিফার নিজের তেমন কোনও আয় নেই। এই এলাকায় এখন এক শতক জমির দাম খুব কম করে ধরলেও ১০ লাখ টাকা। অন্তত পাঁচ শতক জমির উপরে তৈরি হয়েছে বাড়িটি। এলাকার মানুষের দাবি, জমি-বাড়ি মিলিয়ে কোটি টাকার সম্পত্তি। কেন তাঁকে এত বড় বাড়ি উপহার দিলেন তাঁর দিদি? হাবিবুরের বক্তব্য, ‘‘দিদি কেন দান করেছেন, সেটা তিনিই ভাল বলতে পারবেন। তবে আমাকে দিদি ভীষণ স্নেহ করেন, এইটুকু বলতে পারি।’’ লতিফা বেওয়াকে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি।

লতিফা বেওয়ার স্বামী আমজাদ আলি ছিলেন রাজ্য পুলিশের এসআই। দীর্ঘ দিন চাকরি করে ডোমকল বাজারে এক চিলতে বাড়ি করেছিলেন কোনও ক্রমে। সহগলের চার বছর বয়সে মারা যান আমজাদ। অনেক কষ্ট করে একমাত্র ছেলেকে বড় করেছেন লতিফা। সহগলও পরে রাজ্য পুলিশেই কনস্টেবল পদে চাকরি পান। বিভিন্ন সূত্রের দাবি, বীরভূমের পুলিশ লাইন থেকে তাঁকে অনুব্রত বেছে নেওয়ার পরেই, সহগলের উন্নতি শুরু হয়। ডোমকল বাজারেই সেহগালের প্রাসাদোপম বাড়ি রয়েছে। গোটা বিষয়টি প্রসঙ্গে সিপিএমের জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা বলেন, ‘‘দুর্নীতিপরায়ণেরা নিজেদের নামে কত আর সম্পত্তি রাখবে? তারা আত্মীয়দের নামেই সম্পত্তি ভাগ করে রেখে দেয়।’’

জলঙ্গির ভাদুড়িয়া পাড়াতেও হাবিবুরের নিজের বিরাট বাড়ি উঠছে। টাকা কোথায় পাচ্ছেন? হাবিবুরের যুক্তি, ‘‘আমার বাবার প্রচুর জমিজমা রয়েছে। নিজের একটি ইটভাটাও রয়েছে। সেখান থেকে যা আয় হয়, তাতে এমন বাড়ি তৈরি করা কঠিন নয়।’’ হাবিবুরেরা পাঁচ ভাই। এলাকার লোকজনের প্রশ্ন, জমি থেকে চাষবাস করে কতটাই বা আয় করা যায়? জেলার ইটভাটা মালিকদেরও দাবি, গত কয়েক বছর ধরে ইটভাটা চালিয়ে বাড়ি হাঁকানো তো দূরের কথা, সংসার চালানোই কঠিন হয়ে পড়ছে।

সহগলের স্ত্রী সুমাইয়া খন্দকারের দাবি, ‘‘আমি নিজে শিক্ষকতা করি। ববিনের সম্পদ নিয়ে আমার কিছুই জানা নেই। আর আমি তা জানার চেষ্টাও করিনি।’’ সেই সঙ্গে সুমাইয়া বলেন, ‘‘ববিনকে গ্রেফতারের পদ্ধতিতেও গলদ আছে। উপরতলার প্রভাব খাটানো হচ্ছে। না হলে এত দিন জামিন পেয়ে যেত।’’

তৃণমূলের জেলার সাংসদ আবু তাহের খানেরও বক্তব্য, ‘‘সহগল আমাদের দলের কর্মী নন। আইন আইনের পথে চলবে। সহগলের কত সম্পত্তি আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ, তা তদন্ত করে দেখা হোক। তবে তদন্ত হোক নিরপেক্ষ।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Sehgal Hossain CBI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy