রবীন্দ্র সরোবরের অরক্ষিত একটি গেট। —নিজস্ব চিত্র
খুব ভোর থেকেই মানুষের আনাগোনা রবীন্দ্র সরোবরে। তেমনই সেখানে নিত্য বিচরণ দুষ্কৃতীদের। ছিনতাই থেকে শুরু করে নানা ধরনের অসামাজিক কাজকর্ম লেগেই থাকে। কিছু রক্ষী থাকলেও তাঁদের টহলের গাড়ির ব্যবস্থা হয়নি দীর্ঘদিনেও। ফলে ওই সরোবরের নিরাপত্তা গভীর জলে।
রবীন্দ্র সরোবরের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য অনেক দিন আগেই মোটরচালিত ভ্যান কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ঠিক ছিল, নিরাপত্তারক্ষীরা সেই গাড়ি চড়েই সরোবরের বিস্তীর্ণ এলাকায় নজরদারি চালাবেন। গাড়ির জন্য টাকাও বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু ওই পর্যন্তই। পরিকল্পনা করে টাকা বরাদ্দ করা সত্ত্বেও গাড়ি কেনা হল না কেন, সেই প্রশ্ন তো উঠছেই। তার থেকেও বড় প্রশ্নের মুখে রবীন্দ্র সরোবরের সুরক্ষা।
রবীন্দ্র সরোবর কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট বা কেআইটি-র অধীন। কেআইটি-কর্তৃপক্ষ ওই সরোবরের প্রায় আ়ড়াই কিলোমিটার এলাকায় ৬০ জন নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করেছেন। ১৭টি গেটে রক্ষীরা আছেন। তাঁদের বক্তব্য, গাড়ি ছাড়া এত বড় এলাকায় নজর রাখা সম্ভব নয়। গেট ছাড়াও সরোবরের বিস্তীর্ণ অংশ ফাঁকা পড়ে রয়েছে। পাঁচিল টপকে অনেক উটকো লোক যখন-তখন ভিতরে ঢুকে পড়ে। রক্ষী থাকা সত্ত্বেও সরোবরে নানা ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা লেগেই থাকে।
পুলিশি সূত্রের খবর, কিছু দিন আগেই ওই সরোবরে ভরদুপুরে দু’জন যুবকের কাছ থেকে মোবাইল ও মানিব্যাগ ছিনতাইয়ের চেষ্টা হয়। বাধা দেওয়ায় মারধরও করা হয় তাঁদের। প্রাতর্ভ্রমণকারীদের একাংশের অভিযোগ, ভোরে ফাঁকা এলাকায় প্রায়ই ছিনতাইয়ের চেষ্টা হয়েছে। সরোবরের টালিগঞ্জ স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় নানা ধরনের অসামাজিক কাজকর্ম চলে। টহল আগের চেয়ে বেড়েছে বলে পুলিশের দাবি। কিন্তু ভুক্তভোগীদের অভিজ্ঞতা অন্য রকম। কেআইটি-কর্তৃপক্ষ জানান, রবীন্দ্র সরোবরের সংস্কার ও সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পে পাঁচিলের একাংশের সংস্কার হলেও টালিগঞ্জ স্টেশন সংলগ্ন বিশাল অংশ এখনও অরক্ষিত। ওই অংশের নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে রেল। অরক্ষিত ওই অংশ দিয়েই উটকো লোকজন সরোবরে ঢোকে।
রক্ষীরা জানাচ্ছেন, গাড়িতে নিয়মিত টহল ছাড়া দুষ্কর্ম বন্ধ করা মুশকিল। গাড়ি কেনা হয়নি কেন?
কেআইটি-র এক আধিকারিক জানান, রবীন্দ্র সরোবরের নিরাপত্তার জন্য দীর্ঘদিন আগে কলকাতা পুলিশের তরফে দু’টি গাড়ি দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে একটি গাড়ি কিছু দিন চলার পরেই খারাপ হয়ে যায়। তার জায়গায় নতুন কোনও গাড়ি আনা হয়নি। এখন সরোবরে মাত্র একটি গাড়ি চালানো হয়। একটি গাড়ির সাহায্যে অত বড় এলাকায় নজরদারি চালানো সম্ভব নয়। আরও অন্তত দু’টি গাড়ি কেনা জরুরি। এই দু’টি গাড়ি কেনার জন্যও অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। দু’টি গাড়ির মূল্য প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। এ বার দরপত্রের মাধ্যমে নতুন দু’টি গাড়ি কেনা হবে।
‘‘গাড়ি কেনার জন্য সরকার অনেক আগেই অর্থ বরাদ্দ করেছিল। কিন্তু পদ্ধতি মেনে গাড়ি কিনতে সময় লাগে। ইতিমধ্যে নির্বাচন এসে যাওয়ায় বিষয়টি থমকে যায়। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে,’’ বলছেন রাজ্যের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy