Advertisement
২০ জানুয়ারি ২০২৫
Sanjay Roy's sentence today

সঞ্জয় এবং নির্যাতিতার পরিবারের কথা শুনবেন বিচারক, দুপুরেই শাস্তি ঘোষণা শিয়ালদহ কোর্টে

শনিবার সঞ্জয়কে এজলাসে আনার পর ১২ মিনিটেই কোর্ট শেষ হয়। মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় তাঁর অপরাধ প্রমাণিত, জানান বিচারক। আরজি কর মামলায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

আরজি কর মামলায় দোষী সাব্যস্ত ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়।

আরজি কর মামলায় দোষী সাব্যস্ত ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৫ ০৭:৪৩
Share: Save:

আরজি কর-কাণ্ডে দোষী সঞ্জয় রায় কী শাস্তি পাবেন, সোমবার দুপুরের মধ্যেই তা পরিষ্কার হয়ে যাবে। শিয়ালদহ আদালতে বিচারক অনির্বাণ দাসের এজলাস বসবে বেলা সাড়ে ১২টায়। প্রথমে সঞ্জয় এবং তাঁর আইনজীবীর কথা শুনবেন তিনি। শোনা হবে নির্যাতিতার পরিবারের বক্তব্যও। তার পর দুপুরে শাস্তি ঘোষণা করা হবে। আরজি কর মামলায় সঞ্জয়কে শনিবারই দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। বিচারক তাঁকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাঁর অপরাধ প্রমাণিত। ফলে শাস্তি তাঁকে পেতেই হবে। এমনকি, যে যে ধারায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, তাতে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে সঞ্জয়ের, জানিয়েছেন বিচারক।

শনিবার সঞ্জয়কে এজলাসে আনার পর ১২ মিনিটেই কোর্ট শেষ হয়। বিচারক দাস জানান, গত ৯ অগস্ট ভোরে সঞ্জয়ই আরজি কর হাসপাতালে ঢুকেছিলেন। সেখানে মহিলা চিকিৎসককে আক্রমণ করেন এবং তাঁর যৌন হেনস্থা করেন। ওই চিকিৎসককে গলা টিপে খুনও করেন তিনি। সাক্ষীদের বয়ান, তদন্তকারী সংস্থার তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাঁর এই অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে।

সঞ্জয় অবশ্য শনিবারও দাবি করেছেন, তিনি নির্দোষ। তাঁকে ‘ফাঁসানো’ হয়েছে। এজলাসে দাঁড়িয়েই চিৎকার করে সঞ্জয় বলেন, ‘‘আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা আছে। এই মালা পরে আমি এই অপরাধ করব?’’ কিছু করলে তাঁর রুদ্রাক্ষের মালা ছিঁড়ে যেত বলেও দাবি করেছেন সঞ্জয়। হাতজোড় করে ‘স্যর’ ‘স্যর’ বলে চিৎকার করছিলেন সঞ্জয়। পুলিশ তাঁকে একপ্রকার জোর করেই আদালত কক্ষের বাইরে নিয়ে যায়। বিচারক তখনই জানিয়েছিলেন, তাঁর বক্তব্য সোমবার শোনা হবে।

সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করার পর বিচারকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান নির্যাতিতার বাবা এবং মা। তাঁরা এজলাসে দাঁড়িয়েই কেঁদে ফেলেন। জানান, বিচারক তাঁদের আস্থার পূর্ণ মর্যাদা দিয়েছেন। কিন্তু এই ঘটনায় আরও কেউ কেউ জড়িত বলে তাঁদের সন্দেহ। বিচারক তাঁদের বক্তব্যও সোমবার শুনবেন।

উল্লেখ্য, শনিবার আদালতে রুদ্রাক্ষের মালার কথা বলে নতুন তত্ত্ব খাড়া করতে চেয়েছেন সঞ্জয়। কিন্তু এই মামলায় এর আগে কখনও এই মালার প্রসঙ্গ আসেনি। আরজি করের সেমিনার হল থেকে চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পরের দিনই সঞ্জয়কে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। তার পর সিবিআই এই মামলার তদন্তভার নিলে তাদের হাতে সঞ্জয়কে তুলে দেওয়া হয়। তদন্তের পর সিবিআই যে চার্জশিট আদালতে জমা দিয়েছে, তাতে সঞ্জয়কেই একমাত্র অভিযুক্ত বলে চিহ্নিত করা হয়। ঘটনার দিন হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে সঞ্জয়কে দেখা গিয়েছিল। পুলিশ জানায়, সেমিনার হলে প্রবেশের সময়ে তাঁর গলায় একটি ব্লুটুথ হেডফোন ছিল। যা বেরিয়ে আসার সময়ে আর তাঁর গলায় ছিল না। ঘটনাস্থল থেকে ওই ছেঁড়া হেডফোন উদ্ধারও করে পুলিশ। তারা কোনও রুদ্রাক্ষের মালার কথা বলেনি। নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী অমর্ত্য দে জানান, এর আগে কখনও রুদ্রাক্ষের মালার প্রসঙ্গ ওঠেনি। ঘটনাস্থল থেকে বা গ্রেফতারির পরও তা বাজেয়াপ্ত করা হয়নি। এটা যদি এতই গুরুত্বপূর্ণ হত, তা হলে আগেই এর কথা জানানো উচিত ছিল।

(ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনায় যত ক্ষণ না অভিযুক্তকে ‘দোষী’ সাব্যস্ত করা হচ্ছে, তত ক্ষণ তাঁর নাম, পরিচয় প্রকাশে আইনি বাধা থাকে। আনন্দবাজার অনলাইন সেই নিয়ম মেনেই আরজি কর পর্বের প্রথম দিন থেকে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের নাম বা ছবি প্রকাশ করেনি। শনিবার আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করায় আমরা তাঁর নাম এবং ছবি প্রকাশ করা শুরু করছি।)

অন্য বিষয়গুলি:

RG Kar Protest RG Kar Case Verdict RG Kar Rape and Murder Case RG Kar Medical College and Hospital Incident Sanjay Roy Sealdah Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy