Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Saha Institute of Nuclear Physics

কষতে পারে অঙ্ক, ইংরেজির স্বরবর্ণ চিনতে পারে ‘বুদ্ধিমান’ অণুজীব, নয়া সাফল্য শহরের বিজ্ঞানীদের

কলকাতার সাহা ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার ফিজ়িক্স-এর বিজ্ঞানীদের এই গবেষণাই আগামী দিনে ‘বায়ো-কম্পিউটারের’ নতুুন দিশা দেখাচ্ছে।

ব্যাকটিরিয়া সংক্রান্ত গবেষণায় সাহা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী দল। বাঁ দিক থেকে বিয়াস মুখোপাধ্যায়, রাজকমল শ্রীবাস্তব, সৌরভ দত্ত, সংগ্রাম বাগ, শাশ্বত চক্রবর্তী, অরিজিৎ পাল, দীপ্র বন্দ্যোপাধ্যায়।

ব্যাকটিরিয়া সংক্রান্ত গবেষণায় সাহা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী দল। বাঁ দিক থেকে বিয়াস মুখোপাধ্যায়, রাজকমল শ্রীবাস্তব, সৌরভ দত্ত, সংগ্রাম বাগ, শাশ্বত চক্রবর্তী, অরিজিৎ পাল, দীপ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:২০
Share: Save:

মানবদেহের পরিচিত ব্যাকটিরিয়া। তাকেই কারিকুরি করে এমন এক ‘নেটওয়ার্ক’ তৈরি হয়েছে যা নানা অঙ্ক কষতে পারে। চিনতে পারে ইংরেজির স্বরবর্ণ বা ভাওয়েলও! কলকাতার সাহা ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার ফিজ়িক্স-এর বিজ্ঞানীদের এই গবেষণাই আগামী দিনে ‘বায়ো-কম্পিউটারের’ নতুুন দিশা দেখাচ্ছে। সম্প্রতি এ বিষয়ের উপরে তাঁদের গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে ‘নেচার কেমিক্যাল বায়োলজি’ পত্রিকায়।

এই গবেষণাপত্রের মুখ্য লেখক ওই প্রতিষ্ঠানের তিন গবেষক বিয়াস মুখোপাধ্যায়, শাশ্বত চক্রবর্তী এবং দীপ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। দলে ছিলেন অধ্যাপক সংগ্রাম বাগ এবং আরও তিন গবেষক রাজকমল শ্রীবাস্তব, সৌরভ দত্ত এবং অরিজিৎ পালও। অধ্যাপক বাগ জানান, মানবদেহের অতি পরিচিত ‘ই-কোলাই’ ব্যাকটিরিয়াকে বিশেষ ভাবে কারিকুরি করে একটি ‘নেটওয়ার্ক’ তৈরি করা হয়েছিল এবং দেখা গিয়েছে যে মৌলিক সংখ্যা চেনা, কিছু যোগ-বিয়োগ ইত্যাদি অঙ্কের উত্তর দিতে পারছে তারা। এ ছাড়াও, ইংরেজির স্বরবর্ণ চিনতে পারছে। মূলত একটি টেস্টটিউবে নিয়ে রাসায়নিক সঙ্কেত পাঠালে উত্তরে সবুজ (হ্যাঁ) অথবা লাল (না) বর্ণের মাধ্যমে জবাব দিচ্ছে পরীক্ষাগারে সৃষ্ট এই ‘বুদ্ধিমান’ অণুজীবেরা।

এই গবেষণার সাফল্য আগামী দিনে বায়ো-কম্পিউটারের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা নেবে বলে দাবি করেছেন গবেষকেরা। তাঁদের বক্তব্য, ব্যাকটিরিয়ার মতো অতি ক্ষুদ্র (মাইক্রন) স্তরে কম্পিউটার তৈরি করা যায়নি। সে দিক থেকে এই প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে তা করা সম্ভব। এই ধরনের প্রযুক্তি চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিশেষ কাজে আসতে পারে। কারণ, এই বিশেষ প্রযুক্তিতে তৈরি ব্যাকটিরিয়ারা নিজেরা যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তার ফলে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে শরীরে ঢুকিয়ে দিলে নির্দিষ্ট রোগচিহ্নিত করে তার প্রতিরোধী ব্যবস্থা তৈরিতে সক্ষম হবে।

এ ছাড়াও, ভিন্‌ গ্রহে মানুষের আবাসযোগ্য স্থান তৈরিতে এই ধরনের প্রযুক্তি কাজে আসতে পারে। অধ্যাপক বাগের বক্তব্য, ভিন্‌ গ্রহে বিভিন্ন রসদ বা সম্পদ তৈরিতে পৃথিবী থেকে তা বয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। ওই গ্রহের মাটিতেই সেখানের রসদ কাজে লাগিয়ে তা তৈরি করতে হবে। সে ক্ষেত্রে এই ধরনের অতি ক্ষুদ্র বায়ো-কম্পিউটার প্রযুক্তি কাজে লাগতে পারে। কেমিক্যাল প্ল্যান্টে বিষাক্ত রাসায়নিক ধ্বংস করতেও এই ধরনের ‘বুদ্ধিমান’ ব্যাকটিরিয়া কাজে লাগবে। এমনকি, কোনও সেতুর ছোটখাটো ফাটল স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে সারাই করতেও এই প্রযুক্তি কাজে আসতে পারে বলে অধ্যাপক বাগ জানান।

অন্য বিষয়গুলি:

Saha Institute of Nuclear Physics Scientist
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy