ফাইল চিত্র।
প্রায় চার মাস ধরে নিজেদের স্কুলের পড়ুয়াদের সঙ্গে অন্য স্কুলের আগ্রহী পড়ুয়াদেরও বিনা মূল্যে অনলাইনে পড়াচ্ছেন পশ্চিম বর্ধমানের বারাবনির রামকিঙ্কর শৈবলিনী ইনস্টিটিউশনের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, পশ্চিম বর্ধমান ছাড়া, রাজ্যের নানা জেলার পড়ুয়ারাও তাঁদের ‘ভার্চুয়াল’ ক্লাসে যোগ দিচ্ছে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক তুষার বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কোভিড-পরিস্থিতিতে স্কুল বন্ধ থাকায় সরকারি নির্দেশে অনলাইন-ক্লাস চলছে। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাই (২৭ জন) ঠিক করেন, নিজেদের স্কুলের পড়ুয়াদের অন্য স্কুলের আগ্রহী পড়ুয়াদেরও বিনা খরচে ক্লাস নেবেন। তুষারবাবু বলেন, ‘‘সামগ্রিক ভাবে পড়ুয়াদের উপকারের কথা ভেবে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। তা ছাড়া, নানা সূত্রে জানতে পারি, অনেক জায়গায় অনলাইন ক্লাস ঠিকমতো করানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় এ বিষয়ে প্রচার করে অন্য স্কুলের আগ্রহী পড়ুয়াদের থেকে আবেদন চাওয়া হয়।’’
স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, বিষয়টি প্রচার করার দিন কয়েকের মধ্যেই অন্য স্কুলের শতাধিক পড়ুয়া তাঁদের অনলাইন ক্লাসে যোগ দিতে চেয়ে আর্জি জানায়। ওই সব পড়ুয়াদের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর নিয়ে স্কুলের তরফে একটি ‘গ্রুপ’ গড়া হয়। ক্লাস শুরুর আগে, ‘গুগল-মিট’-এর ‘লিঙ্ক’ ওই গ্রুপে দিয়ে দেওয়া হয়। সে ‘লিঙ্ক’-এর মাধ্যমে পড়ুয়ারা অনলাইনে পড়াশোনা করছে। তুষারবাবুর দাবি, ‘‘শুরুতে অল্প কয়েকজন যোগ দিলেও, এখন প্রায় ১৬টি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে তিন হাজারেরও বেশি অন্য স্কুলের পড়ুয়া রয়েছে।’’ পশ্চিম বর্ধমানের পাশাপাশি, পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ, হুগলির বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়ারাও এই স্কুলের ক্লাসে যোগ দিয়েছে। এই সুযোগ পাচ্ছে অন্য স্কুলের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা।
কেন এই ক্লাস? স্কুলের বিজ্ঞানের শিক্ষক কল্যাণ মৌলিক বলেন, ‘‘অন্য স্কুলের পড়ুয়াদের অনলাইনে ক্লাস নিতে আমাদের বাড়তি পরিশ্রম হচ্ছে না। সামাজিক দায়বদ্ধতার জন্য সরকারি নির্দেশকে আরও সফল ভাবে বাস্তবায়িত করতে আমরা এই পদক্ষেপ করেছি।’’ একই কথা জানান গৌতম মাজি, প্রতিমা সাধু-সহ স্কুলের অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকারাও।
বারাবনির স্কুলটির এই উদ্যোগে খুশি অন্য স্কুলের পড়ুয়ারাও। পুরুলিয়ার সরবড়ি এলাকার নবম শ্রেণির স্কুল ছাত্রী মেঘনা কর, বাঁকুড়ার নিউ তাঁতিপাড়ার একটি স্কুলের দশম শ্রেণির প্রিয়া সূত্রধর, মুর্শিদাবাদের সামসাবাদ হাইস্কুলের দশম শ্রেণির আরমান শেখরা বলে, ‘‘বন্ধুদের কাছ থেকে এই খবরটা পাই। বারাবনির স্কুলের অনলাইন ক্লাসে যোগ দিয়ে উপকার পেয়েছি।’’ তারা অবশ্য জানায়, তাদের স্কুলেও অনলাইন ক্লাস চলছে। তা হলে এখানে পড়ছে কেন? পড়ুয়াদের জবাব, ‘‘বাড়তি ক্লাস করলে, সুবিধে হয়।’’ বিষয়টিকে অন্য স্কুলের শিক্ষকেরা স্বাগত জানালেও, তাঁরা মুখ খুলতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy