Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
school dropouts

School Dropouts: বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্কুলছুট ছাত্রদের ফেরাচ্ছেন শিক্ষক

এ কাজে আব্দুল হালিম বিশ্বাসকে সাহায্য করছে বিদ্যাপীঠের অন্য অনেক ছাত্রও।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়
বেলডাঙা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:৫৮
Share: Save:

মিড ডে মিলের লাইনে নিয়মিত নজর রাখেন মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার শ্রীশচন্দ্র বিদ্যাপীঠের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল হালিম বিশ্বাস। প্রথম দু’দিন যে সব ছাত্র স্কুলে আসে না, তাদের নাম লিখে রাখেন। বেশ কিছু দিন ধরে অভিভাবকেরাও আসা বন্ধ করে দিয়েছেন দেখলে, সেই ছাত্রের খোঁজে বেরিয়ে পড়েন তিনি। তাকে খুঁজে বার করে ফের পড়াশোনার জগতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন। ওই শিক্ষক বলেন, “এই ভাবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিয়ে প্রায় ২২ জন স্কুলছুট ছাত্রকে স্কুলমুখী করতে পেরেছি। অভিভাবকেরা কথা দিয়েছেন, তাঁরা তাঁদের সন্তানদের স্কুলছুট হতে দেবেন না।”

এ কাজে আব্দুল হালিম বিশ্বাসকে সাহায্য করছে বিদ্যাপীঠের অন্য অনেক ছাত্রও। স্কুলের বর্তমান ছাত্র ১১০০। তাঁর কথায়, মিড ডে মিলের লাইনে কোনও ছাত্রকে না দেখলে তিনি ওই ছাত্রের বন্ধুদের প্রথমে জিজ্ঞাসা করেন। তারা তাঁকে সব তথ্য সংগ্রহ করে দেয়। ওই শিক্ষক বলেন, ‘‘প্রত্যেক ছাত্রের পরিবারের মোবাইল নম্বর আমার সংগ্রহে রয়েছে। খবর পেয়ে সেই মতো তাদের ফোন করি।’’ মিড ডে মিল পৌঁছতে সোজা সেই সব ছাত্রের বাড়িতেই চলে যান আব্দুল হালিম। তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে জানতে চাই, ছাত্রের জ্বর বা অন্য কোনও সমস্যা রয়েছে কি না।’’ যদি জানেন, তা নয় তা হলে ছাত্রের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে চান। কিন্তু অনেক সময়ই শোনেন, ছাত্র বাড়ি নেই। অন্য কারও থেকে পাওয়া তথ্যে জানতে পারেন, কোনও কোনও ছাত্র পরিবারের কারও সঙ্গে ভিনরাজ্যে চলে গিয়েছে দিনমজুরি করতে। কেউ গ্রামেই দিনমজুরি করছে। কেউ দোকানে কাজ করছে, কেউ আইসক্রিম বিক্রি করছে। ওই শিক্ষক জানান, তখন তিনি পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। আব্দুল হালিম বলেন, ‘‘জানতে পারি পরিবারের নানা কথা। সেখান থেকে বেরিয়ে আসে যে কেন সেই ছাত্র স্কুলছুট।’’

এই এলাকার অনেক পরিবারই পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ আনসার আলি বলেন, ‘‘আমার ছেলে লকডাউনে ফিরে এসেছিল। অনেক দিন রোজগার ছিল না। আবার কেরল গিয়েছে। কিন্তু বহু টাকা ধার হয়েছে। তাই পরিবারের সকলেই চেষ্টা করছি দিনমজুরি করে সেই ঋণ শোধ করার। সঙ্গে সংসারটাও চালাতে হচ্ছে। তাই স্কুল বন্ধ বলে দিনমজুরি করছিল নাতিও।’’ আব্দুল হালিম বলেন, ‘‘ওই ছাত্রদের পরিবারকে বোঝাতে হয়, দিনমজুরির কোনও ভবিষ্যৎ নেই। পড়াশোনা করাতে হবে ছেলেদের। তাতে অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের ফের স্কুলমুখী করতে উদ্যত হয়।’’ নিরন্তর চেষ্টায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ছাত্রদের আবার স্কুলে ফিরিয়ে আনতেও পেরেছেন তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

school dropouts School Teacher
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE