Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

সংগঠন বাঁচলে বাকি সব, বার্তা সিপিএমে

নোট-কাণ্ডে হরতালের ডাক লজ্জার কারণ হচ্ছে। একের পর এক বিষয় পেয়েও সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ানো যাচ্ছে না। বিজেপি-র বিরুদ্ধে ফায়দা নিয়ে চলে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাই।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও সাঁকরাইল শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:৩৭
Share: Save:

নোট-কাণ্ডে হরতালের ডাক লজ্জার কারণ হচ্ছে। একের পর এক বিষয় পেয়েও সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ানো যাচ্ছে না। বিজেপি-র বিরুদ্ধে ফায়দা নিয়ে চলে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাই। কোচবিহারের মতো এক কালের শক্ত ঘাঁটিতে বামফ্রন্টের বাক্সে জুটছে মাত্র ৬.৫% ভোট! রাজ্য রাজনীতিতে ক্রমশ পরিসর হারিয়ে ফেলার রূ়ঢ় বাস্তব বুঝে সংগঠন বাঁচানোকেই এখন মরিয়া লক্ষ্য হিসাবে হাতে নিচ্ছে সিপিএম।

আলিমুদ্দিনে দলের দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠকে উঠে এসেছে নানা দিকে সাম্প্রতিক কালে সিপিএমের ব্যর্থতার প্রসঙ্গ। জবাবি ভাষণে মঙ্গলবার দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র মেনে নিয়েছেন, সব সমস্যার মূলে আছে সাংগঠনিক দুর্বলতাই। নোট-কাণ্ডে রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করতে হরতাল ডাকার সিদ্ধান্তে কোনও ভুল ছিল না। কিন্তু মানুষের কাছে সেই কর্মসূচিকে নিয়ে যাওয়া যায়নি সংগঠনের দুর্বলতার জন্য। একই ভাবে, কোচবিহারে খারাপ ফলের আশঙ্কা বাম নেতাদের ছিলই। কিন্তু তা বলে এমন করুণ দশা হবে, আন্দাজ করা যায়নি!

বৈঠকে সূর্যবাবু পরিষ্কার করেই বলেছেন, সব মানুষ ভোট দিতে পারেননি বলে ফল খারাপ হয়েছে— এমন যুক্তি খাড়া করলে চলবে না। বুথে বুথে লোক রাখার কাজ নিজেদেরই করতে হবে।

সংগঠনে সঞ্জীবনী দিতে ঠিক হয়েছে, দলের সদস্যদের এ বার থেকে বছরে দু’বার করে কাজের মূল্যায়ন হবে। আগে সদস্যপদ নবীকরণের সময় বাৎসরিক এক বারই কাজের পর্যালোচনা হতো। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘দলের নেতা-কর্মীরা নিজেদের মূল্যায়ন করবেন প্রশ্নোত্তরের ভিত্তিতে। আবার সংশ্লিষ্ট কমিটিও তাঁদের মূল্যায়ন করবে। ছ’মাস অন্তর এই প্রক্রিয়া চলবে।’’ রাজ্য কমিটির সদস্যদের আত্মমূল্যায়ন রিপোর্ট নিয়ে এ বারের বৈঠকেই আলোচনা হয়েছে।

সঙ্ঘ পরিবারের বাড়বাড়ন্তের বিপরীতে সংখ্যালঘুদের পাশে পেতে মঞ্চ গড়ার কাজ দ্রুত করার নির্দেশও জারি করা হয়েছে দলে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট জন, শিক্ষাবিদদের সঙ্গে সেতু হিসাবে কাজ করবে ওই মঞ্চ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিতে এ দিনই রাজ্য কমিটির বৈঠকের ফাঁকে হাওড়ার ধূলাগড়ে গিয়ে সমাবেশ করেছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম, বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীরা। কয়েক দিন আগে ধূলাগড়িতে দুষ্কৃতীদের গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে ভাঙচুর, আগুন লাগানো হয় বেশ কিছু দোকানপাট ও বাড়িতে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও ওই ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন ইয়েচুরি। সমাবেশ থেকে ঘটনাস্থলের দিকে শান্তি মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন সেলিম, সুজনবাবু, সিপিআই নেতা মঞ্জুকুমার মজুমদার, ফরওয়ার্ড ব্লকের হাফিজ আলম সৈরানিরা। সামিল হয়েছিলেন বহু মানুষ। যদিও এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি আছে বলে ঘটনাস্থলের অনেক আগে মিছিল আটকে দেয় পুলিশ।

নোট-কাণ্ডে জনতার দুর্ভোগ অবসানের দাবিতে ১ থেকে ১০ জানুয়ারি রাজ্য জু়ড়ে প্রতিবাদ সভা, বিক্ষোভ-অবস্থানের কর্মসূচি নিয়েছে সিপিএম। ইয়েচুরি এ দিন বলেছেন, ‘‘অন্য কারও টাকা আমি লুঠ করছি না। ব্যাঙ্কে আছে আমারই পরিশ্রমের টাকা। সেটাও আমি তুলতে পারছি না!’’ এর ফলে গরিব মানুষই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে তাঁর বক্তব্য।

অন্য বিষয়গুলি:

CPIM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy