Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
soumitra khan

ইস্তফা ঘোষণা করে হোয়াট্‌সঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়লেন সৌমিত্র খাঁ, বিজেপি সরগরম

যুব মোর্চার জেলা কমিটিগুলি শুক্রবার ভেঙে দিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তার জেরেই সৌমিত্রের এই সিদ্ধান্ত বলে জল্পনা।

সৌমিত্র খাঁ— ফাইল চিত্র।

সৌমিত্র খাঁ— ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২০ ১১:২৫
Share: Save:

ডামাডোল আরও বাড়ল রাজ্য বিজেপিতে। যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি পদ থেকে তিনি ইস্তফা দিচ্ছেন বলে জানিয়ে দিলেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। সংগঠনের পদাধিকারিদের নিয়ে তৈরি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে মহাষ্টমীর সকালে সৌমিত্র বেরিয়ে গিয়েছেন। তবে বিতর্ক তাতে থামেনি। যুব মোর্চার অন্য শীর্ষ নেতারাও এ বার তোপ দাগতে শুরু করেছেন সৌমিত্রের বিরুদ্ধে।

যুব মোর্চার রাজ্য পদাধিকারিদের নিয়ে যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে সেটির নাম ‘বিজেওআইএম ওয়েস্টবেঙ্গল অফিসিয়াল’। শনিবার সকাল ৯টা ৪ মিনিট নাগাদ ওই গ্রুপে সৌমিত্র লিখেছেন, ‘শুভ মহাষ্টমী। সকলে ভাল থাকবেন। আপনাদের খুবই সহযোগিতা পেয়েছি। আমি চাই বিজেপিকে সরকারে আনতেই হবে। তাই হয়ত আমার অনেক ভুল ছিল যাতে দলের ক্ষতি হচ্ছিল। তাই আমি ইস্তফা দেব আর সকলে ভাল থাকবেন। যুব মোর্চা জিন্দাবাদ, বিজেপি জিন্দাবাদ, মোদীজি জিন্দাবাদ’।

যুব মোর্চার জেলা কমিটিগুলি শুক্রবার দুপুরেই ভেঙে দিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। জেলা সভাপতিদেরও দিলীপ বরখাস্ত করে দিয়েছিলেন। ওই সব জেলা সভাপতি এবং জেলা কমিটিগুলিতে মনোনীত করেছিলেন সৌমিত্রই। যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি হিসেবে জেলা সভাপতিদের বেছে নেওয়ার অধিকার সৌমিত্রের রয়েছে। কিন্তু যুব সংগঠনের জেলা সভাপতিদের বেছে নেওয়ার আগে বিজেপির সংশ্লিষ্ট জেলা সভাপতিদের সঙ্গে সৌমিত্র কোনও আলোচনা করছিলেন না বলে দলের একাংশের দাবি। বিভিন্ন জেলা থেকে দিলীপের কাছে অভিযোগ পৌঁছচ্ছিল। তার প্রেক্ষিতেই মহাসপ্তমীর দুপুরে দিলীপ কঠোর পদক্ষেপ করেন। সৌমিত্রর তৈরি সব জেলা কমিটি তিনি ভেঙে দেন। দিলীপের সেই পদক্ষেপের পরে ২৪ ঘণ্টাও কাটল না। সৌমিত্র ইস্তফা দেবেন বলে ঘোষণা করলেন। সংগঠনের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়েও গেলেও।

আরও পড়ুন: সৌমিত্রের ঘোষিত সব কমিটি ভাঙলেন দিলীপ, ডামাডোল চরমে রাজ্য বিজেপি-তে

বিষ্ণুপুরের সাংসদের এই ঘোষণা রাজ্য বিজেপির অন্দরে চলতে থাকা ডামাডোলকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। দলের একটি অংশ সৌমিত্রের প্রতি সহানুভূতি দেখাচ্ছেন ঠিকই। তবে সেই অংশ নেহাতই সংখ্যালঘু। বিজেপিতে দিলীপের উল্টো শিবিরে অবস্থান করছেন, এমন নেতারাও সৌমিত্র খাঁয়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। দলে রাজ্য কমিটির সদস্য তথা যুব মোর্চার রাজ্য সহ-সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা এ দিন বলেন, ‘‘সৌমিত্র খাঁ অত্যন্ত অপরিণত রাজনীতি করছেন। সামনেই নির্বাচন। তার আগে গোটা দলকে ঐক্যবদ্ধ করে তোলাই নেতাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।’’ শঙ্কুর মতে, জেলা কমিটিগুলি গঠনের ক্ষেত্রে সৌমিত্রের আরও ‘যত্নবান’ হওয়া উচিত ছিল, পুরনো কর্মীদের আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া জরুরি ছিল।

আরও পড়ুন: মৃত্যুর পর তাঁর সব সৃষ্টি যেন ধ্বংস করা হয়, ইচ্ছাপত্রে ইচ্ছাপ্রকাশ সুমনের

একা শঙ্কু নন, যুব মোর্চার আরও অনেক শীর্ষ নেতা মুখ খুলতে শুরু করেছেন। তাঁদের মধ্যে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দাস অন্যতম। দিলীপের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত প্রকাশ এখনও সংবাদমাধ্যমে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে সংগঠনের অন্দরে তিনি সৌমিত্রের বিরুদ্ধে ‘তীব্র বিষোদগার’ শুরু করেছেন বলে যুব মোর্চা সূত্রের খবর।

কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই বিজেপিতে পরিচিতি সৌমিত্রের। এ বারের ডামাডোলে সেই কৈলাস-মুকুল গোষ্ঠীও খোলাখুলি ভাবে সৌমিত্রের পাশে দাঁড়াতে পারেনি। ওই গোষ্ঠীর আরেক ঘনিষ্ঠ শঙ্কুদেবের মন্তব্যেই সে কথা স্পষ্ট। তবে দিলীপের পদক্ষেপকেও পুরোপুরি সমর্থন করছেন না শঙ্কুরা। যুব মোর্চার রাজ্য সহ-সভাপতির কথায়, ‘‘সমস্যার সমাধান দিলীপদা অন্য ভাবেও করতে পারতেন। দলের ভিতরে কথা বলে সমস্যা মেটানো যেত। আচমকা যুব মোর্চার সব জেলা কমিটিকে বরখাস্ত করে দিয়ে সংগঠনের রাজ্য সভাপতিকে দিলীপদা যে অস্বস্তির মুখে ফেললেন, সেটা না হলেই ভাল হত।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy