সিউড়ি সদর হাসপাতালে জখম নেগেল। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।
সারদা-কাণ্ডে পুলিশ তাঁকেই প্রথম গ্রেফতার করেছিল। মাঝে বেশ কয়েক জন অভিযুক্ত জামিন পেলেও ৩৭ মাস জেলে কাটিয়ে জামিন পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, বুধবার ফের তাঁর জেল হাজত হওয়ার পরেই আদালত চত্বরে হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন মনোজ নেগেল। খাতায়-কলমে যিনি সারদা গোষ্ঠীর অন্যতম ডিরেক্টর।
এ দিন দুপুের সিউড়ি আদালতে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অলিভা রায়ের এজলাসে তোলা হয়েছিল মনোজকে। তার পরেই ওই কাণ্ড! মনোজকে সিউড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সুপার শোভন দে বলেন, ‘‘ওঁকে হাসপাতালের পুলিশ সেলে রাখা হয়েছে। শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।’’
২০১৩-য় সারদার ঝাঁপ বন্ধ হওয়ার পরেই সল্টলেক মিডল্যান্ড পার্ক অফিস থেকে নেগেলকে ধরে পুলিশ। পরে ধরা পড়েন সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায়। অন্যগুলিতে জামিন পেলেও একটিতে জামিন না হওয়ায় তিনি ছাড়া পাননি। অথচ পরে গ্রেফতার হয়েও জামিন পেয়েছেন সৃঞ্জয় বসু, রজত মজুমদার, দেবব্রত (নিতু) সরকারেরা। জুনে শ্রীরামপুর আদালতে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছিলেন। ২০১৪-র নভেম্বরে জেলা হাজতে থাকাকালীনই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সারদা-কাণ্ডে অভিযুক্ত কুণাল ঘোষ।
কুণাল এখনও জেলে। কিন্তু, বহু টানাপড়েনের পরে কয়েক মাস আগে কলকাতা হাইকোর্ট মনোজের জামিন মঞ্জুর করে। বীরভূমের রাজনগর থানায় দায়ের হওয়া সারদা সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে সোমবার সিউড়ি আদালতে হাজিরা ছিল তাঁর। মামলার সরকারি আইনজীবী বিকাশ পৈতণ্ডী জানান, কারণ না দেখিয়েই অনুপস্থিত থাকায় বিচারক মনোজের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এ দিন আত্মসমর্পণ করেন মনোজ। শুনানির দিন দুর্গাপুর আদালতে থাকায় তিনি সিউড়িতে আসতে পারেননি দাবি করে নিজের আইনজীবী চঞ্চল সেন মারফত বিচারকের কাছে জামিন চান। বিচারক মনোজকে ১৪ দিনের জেল হাজতে পাঠান। চঞ্চলবাবুর বক্তব্য, ‘‘আগের দিন শুনানিতে যে আসতে পারবেন না, তা আমাকে জানাতে দেরি করেন মনোজ। তত ক্ষণে বিচারক পরোয়ানা জারি করেছেন। সেই বিষয়টিই এ দিন আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে গিয়েছে।’’
ফের জেলে যেতে হবে শোনার পরেই নিজের কাছে থাকা ব্লেড জাতীয় কিছু দিয়ে বাঁ হাতের শিরা কাটার চেষ্টা করেন মনোজ। ঠিক কখন এই ঘটনা ঘটেছে, তা জানেন না বলে দাবি দু’পক্ষের আইনজীবীরই। বিকাশবাবু বলেন, ‘‘বিচারকের নির্দেশের পরেই অন্য এজলাসে কাজে ছিলাম। পরে ঘটনার কথা শুনেছি।’’ পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তকে জেল হাজতে নিয়ে যাওয়ার সময়েই বিষয়টি নজরে আসে। বিচারকের নির্দেশে মনোজকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তখন মনোজ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘এক জন কী করে একই দিনে দু’টো আদালতে হাজির থাকবে! জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা এসে গিয়েছে। তাই নিজেকে শেষ করতে চেয়েছিলাম।’’
দুর্গাপুরের বাড়িতে মনোজের ভাই বনজ নেগেলের দাবি, ‘‘দাদার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সামান্য টাকা আছে। প্যান কার্ড না দেখালে বাজেয়াপ্ত হওয়া অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা যাবে না বলে জানিয়েছে ব্যাঙ্ক। বাজেয়াপ্ত থাকা প্যান কার্ড উদ্ধার করতেই দাদা সোমবার দুর্গাপুর আদালতে যান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy