তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনকে রাজ্যসভা থেকে সাসপেন্ড করার ঘটনায় বাগ্যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ল তৃণমূল আর বিজেপি। বাদল অধিবেশনের বাকি দিনগুলির জন্য শান্তনুকে সাসপেন্ড করেছেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু। তার পরেই প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন তৃণমূল সাংসদরা। ডেরেক ও’ব্রায়ান পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে প্রশ্ন তোলেন, একই ধরনের কাজ করা সত্ত্বেও বিজেপি-র মন্ত্রী যদি ছাড় পেয়ে যান, তা হলে তৃণমূলের সাংসদকে কেন শাস্তি দেওয়া হল। সাসপেনশন প্রত্যাহার করার আবেদনও জানানতৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেননি বেঙ্কাইয়া।
এর কিছু ক্ষণের মধ্যে সংসদের বাইরে বেরিয়ে কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণো বঙ্গসংস্কৃতির কথা তুলে মন্তব্য করে বসেন। তিনি বলেন,‘‘বাংলার সংস্কৃতি সংসদে আমদানি করেছে তৃণমূল। যেভাবে ভোট পরবর্তী হিংসায় বাংলায় বিজেপি কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন, সেভাবেই সংসদে আমাদেরউপর হামলা করেছেন তৃণমূল সাংসদ।”পাল্টা টুইট করেকৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের জবাব, ‘মাননীয় কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি বলেছেন যে তৃণমূল বাংলার সংস্কৃতি সংসদে নিয়ে এসেছে। ঠিকই বলেছেন। পতাকা উঁচু করে তুলে ধরতে পেরে আমরা গর্বিত। ঠিক বিজেপি যেমন ‘গুজরাত সাহিব’-এর ফোনে আড়িপাতার সংস্কৃতি দেশে ছড়িয়ে দিয়েছে।’
Hon’ble Min MeitY says TMC has brought Bengal’s culture to Parliament.
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) July 23, 2021
Yes Sir- proud to fly our flag high
.
Much like @BJP who’s taken Gujarat Sahib’s Snooping model National!
তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষও প্রতিবাদ করেন শান্তনুর সাসপেনশনের। টুইটে তিনি লেখেন, ‘পেগাসাস কেলেঙ্কারির প্রতিবাদ করে রাজ্যসভায় অপমানিত, লাঞ্ছিত, সাসপেন্ডেড সাংসদ শান্তনু সেন। আর অন্যের কল লিস্টকল রেকর্ডিং তাঁর রাছে আছে বলে প্রকাশ্যে আড়ি পাতা স্বীকার করেও বিরোধী দলনেতা ( লিমিটলেস অপারচুনিস্ট) গ্রেফতার নয় কেন? শান্তনুকে সাসপেন্ড করে প্রতিবাদের কণ্ঠরোধ করা যাবে না।’
বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় পেগাসাস বিতর্ক নিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছিলেনকেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী। তাঁর হাত থেকে বক্তৃতার কাগজ ছিনিয়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলেন শান্তনু। তার পর সেই ছেঁড়া কাগজ ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিংহের আসনের দিকে ছুড়ে দেন। এই ঘটনার জেরেই শুক্রবার শান্তুনুকে বাকি অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করেন বেঙ্কাইয়া। প্রতিবাদ করে ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, বৃহস্পতিবার কাগজ ছেঁড়ার ঘটনার পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী নিজের আসন ছেড়ে শান্তনুর দিকে তেড়ে গিয়েছিলেন। অসংসদীয় বাক্যও প্রয়োগ করেছিলেন। ডেরেকের প্রশ্ন, ‘‘অন্য অভিযুক্ত (হরদীপ) কেন ছাড় পেলেন?’’
পেগাসাস বিতর্ক নিয়ে যে তৃণমূল সংসদে মোদী সরকারে বিরুদ্ধে সুর চড়াবে, তা ২১ জুলাইয়ের ভার্চুয়াল সভা থেকেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তৃণমূলই নয়, কংগ্রেস-সহ আরও অনেক বিরোধী দলই এখন এই ইস্যুতে চড়া সুরে নিশানা করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে।
পেগাসাস কেলেঙ্কারির প্রতিবাদ করে রাজ্যসভায় অপমানিত, লাঞ্ছিত, সাসপেন্ডেড সাংসদ শান্তনু সেন। আর অন্যের কল লিস্ট, কল রেকর্ডিং তাঁর কাছে আছে বলে প্রকাশ্যে আড়ি পাতা স্বীকার করেও LOP (limitless opportunist) গ্রেপ্তার নয় কেন? শান্তনুকে সাসপেন্ড করে প্রতিবাদের কন্ঠরোধ করা যাবে না।
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) July 23, 2021