Advertisement
E-Paper

‘আপনাকে তাড়া করেছে?’ হাসপাতালে শুয়ে পর পর ফোন পাচ্ছেন পিংলার তৃণমূল বিধায়ক অজিত মাইতি

নাম মিলে যাওয়ায় পিংলার বিধায়ক অজিত মাইতিকে বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হয়েছে। তিনি বাইপাসের ধারের একটি হাসপাতালে গত আট দিন ধরে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালে শুয়েই রবিবার তাঁকে একাধিক ফোন ধরতে হয়েছে।

(বাঁ দিকে) সন্দেশখালির অজিত মাইতি। হাসপাতালে পিংলার তৃণমূল বিধায়ক অজিত মাইতি (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) সন্দেশখালির অজিত মাইতি। হাসপাতালে পিংলার তৃণমূল বিধায়ক অজিত মাইতি (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

শোভন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:৫০
Share
Save

শেক্সপিয়র লিখেছিলেন, নামে কী যায় আসে! পিংলার তৃণমূল বিধায়ক তথা পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন জেলা সভাপতি অজিত মাইতি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন, নামেই যায়-আসে! এবং কত কিছু যে যায়-আসে!

সন্দেশখালির তৃণমূলের এক অঞ্চল সভাপতি অজিত মাইতি রবিবার দুপুর থেকে সংবাদ শিরোনামে। তাঁকে স্থানীয়েরা এমন তাড়া করেছিলেন যে, এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বাড়িতে ঢুকে তাঁকে আশ্রয় নিতে হয়। চার ঘণ্টা সেই ‘নিরাপদ আস্তানা’য় ঘেরাও হয়ে থাকার পরে সন্দেশখালির সেই অজিত মাইতিকে সন্ধ্যার পর আটক করে পুলিশ। তার পর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মিনাখাঁ থানায়। সোমবার সকালে তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।

আর এক অজিত মাইতি সন্দেশখালি থেকে অনেক দূরে। তিনি বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধাীন। কিন্তু ওই যে, নামে যায়-আসে! স্রেফ নাম-পদবি মিলে যাওয়ায় পিংলার বিধায়ক অজিত মাইতিকে বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হয়েছে। হাসপাতালে শুয়েই রবিবার তাঁকে একাধিক ফোন ধরতে হয়েছে। যার প্রত্যেকটি থেকে একই উদ্বিগ্ন প্রশ্ন— ‘‘আপনাকে তাড়া করেছে নাকি?’’

সোমবার আনন্দবাজার অনলাইনকে পিংলার বিধায়ক অজিত মাইতি বলেন, ‘‘আমার লোকেরা কাল থেকে ফোন করছেন। সন্দেশখালির কোন এক অজিত মাইতিকে মানুষ নাকি তাড়া করে কার বাড়িতে ঢুকিয়ে দিয়েছে! তার পর তাঁকে নাকি পুলিশ আটক করেছে! আর ফোন আসছে আমার কাছে।’’

বিধায়ক অজিত আরও বলেন, ‘‘নামে মিল থাকায় অনেকেই গুলিয়ে ফেলে আমার ছবি দিয়ে সামাজিক মাধ্যমেও ভুল তথ্য ছড়াচ্ছেন। আমি অনুরোধ করব, তাঁরা যেন আমার ছবি সেখান থেকে সরিয়ে দেন। না হলে বুঝতে হবে তাঁদের অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে।’’ অজিত এখন পিংলার বিধায়ক। এক সময় ছিলেন জেলা সভাপতি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ‘পছন্দ’ করেন বলেই দলশ্রুতি। সেই অজিতের হৃদযন্ত্রে ‘ভাল্‌ভ’ প্রতিস্থাপিত হয়েছে। রবিবারই আইসিইউ থেকে তাঁকে সাধারণ কেবিনে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে শুয়েই সোমবার আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন অজিত। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা এটা করছেন, আমার ছবি দিচ্ছেন, ফোন করে বলছেন তাড়া খাওয়ার কথা, তাঁরা কি জানেন না যে, আমি কোনও দিন অঞ্চল সভাপতি ছিলাম না। আর আমি এক জন বিধায়ক। হতে পারে আমার নামটা পরিচিত বলে আমার ছবি কেউ কেউ দিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু তা দ্রুত সংশোধন করা হোক।’’

সূত্রের খবর, শুধু অজিত নন, তাঁর পুত্র এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের কাছেও পর পর ফোন আসছে। অজিত-পুত্রকে বলা হচ্ছে, ‘‘তোর বাবাকে নাকি তাড়া করেছে?’’

এমনিতে রাজনীতিতে ‘নামবিভ্রাট’ নতুন নয়। এক নাম নিয়ে বিড়ম্বনাও পরিচিত। জলপাইগুড়িতে এক সিপিএম নেত্রী ছিলেন। নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরসভা ভোটে একবার প্রার্থীও হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অজিতের ক্ষেত্রে বিষয়টি সামাজিক সম্মানের হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা নিয়ে অস্বস্তিতে পিংলার তৃণমূল বিধায়ক।

শেক্সপিয়র যা-ই লিখে গিয়ে থাকুন, নামে আসে-যায়!

Sandeshkhali Incident Pingla TMC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}