কোনও করদাতার দীর্ঘ বছর সম্পত্তিকর বকেয়া থাকলে তাঁর জমি, বাড়ি-সহ অস্থাবর সম্পত্তি সংযুক্ত (অ্যাটাচড) করে থাকে কলকাতা পুরসভা। এর পরে সেই সম্পত্তি নিলামে তোলা হয়। নিলামের আগে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির নিরপেক্ষ ও নির্ভরযোগ্য মূল্য নির্ধারণের জন্য সম্প্রতি কয়েকটি সংস্থাকে তালিকাভুক্ত করেছে পুরসভা। ১১টি এমন সংস্থা এখন থেকে পুরসভার হয়ে বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির মূল্য নির্ধারণ করবে।
সম্পত্তিকর বকেয়া থাকা বাসিন্দাদের বার বার সতর্ক করার পরেও তাঁরা যদি কর না মেটান, শুধুমাত্র সে ক্ষেত্রেই এই চরম পদক্ষেপ গ্রহণ করেন পুর কর্তৃপক্ষ। নিয়ম মতো, সরকার অনুমোদিত ভ্যালুয়ার অথবা চার্টার্ড ভ্যালুয়ার সার্ভেয়র বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির মূল্যায়ন করে থাকেন। তার ভিত্তিতে সংযুক্ত হওয়া সম্পত্তির ‘সেল প্রাইস’ (বিক্রয়মূল্য) এবং ‘রিজ়ার্ভ প্রাইস’ (ন্যূনতম মূল্য) নির্ধারণ করা হয়। নির্বাচিত ১১টি সংস্থা এখন থেকে সেই কাজই করবে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
কলকাতা পুর আইন, ১৯৮০-র ২২১এ এবং ২২১বি ধারা অনুযায়ী, কর না-মেটানোর জন্য সংযুক্ত সম্পত্তিগুলি বিক্রির আগে সেগুলির ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণে এই তালিকাভুক্ত সংস্থাগুলির কাছ থেকেই দরপত্র নেওয়া হবে। যে সংস্থা নির্বাচিত হবে, তাকে কাজের বরাত দেওয়া হবে।
পুর প্রশাসনের মতে, এই পদক্ষেপের ফলে এক দিকে সম্পত্তি মূল্যায়নের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যাবে। পাশাপাশি, ভবিষ্যতে যদি সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি নিয়ে আইনি বিতর্ক দেখা দেয়, তা হলে আদালতে নিরপেক্ষ মূল্যায়নের নথি প্রমাণ হিসাবেও দাখিল করা যাবে। কলকাতা পুরসভার তরফে এই সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে, মামলার প্রয়োজনে কোনও সংস্থাকে সাক্ষ্য দিতে হলে অতিরিক্ত পারিশ্রমিক ছাড়াই তা করতে হবে।
মূল্যায়নের নথি একটি নির্দিষ্ট ফরম্যাটে প্রস্তুত করতে হবে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। সেখানে থাকবে— সম্পত্তির বিবরণ (শিরোনাম, অবস্থা), ছবি, নকশা, সংশ্লিষ্ট এলাকার বাজার-প্রবণতা এবং একটি মূল্যায়ন-শংসাপত্র। পুরসভা জানিয়েছে, সংযুক্ত হওয়া সম্পত্তি বিক্রির আগে এই মূল্যায়ন প্রক্রিয়া বাধ্যতামূলক ভাবে মেনে চলতে হবে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)