Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন, অনাস্থাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা সব্যসাচীর

সব্যসাচী মামলায় যুক্ত করেছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর, সেই দফতরের মন্ত্রী এবং বিধাননগর পুরসভার কমিশনারকে। অনাস্থার নোটিসের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ চেয়েছেন তিনি।

কলকাতা হাইকোর্টে সব্যসাচী দত্ত। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

কলকাতা হাইকোর্টে সব্যসাচী দত্ত। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

শমীক ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৯ ০৩:১৮
Share: Save:

তৃণমূল বিধায়ক তথা বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তের বাড়িতে বৃহস্পতিবার ‘স্ট্র্যাটেজি’ নিয়ে আলোচনা করতে যান বিজেপি নেতা মুকুল রায়। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মেয়র হিসেবে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অনাস্থার নোটিসকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করলেন সব্যসাচী। শুক্রবার বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের আদালতে তিনি ওই মামলা দায়ের করেন। সোমবার মামলাটির শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।

সব্যসাচীর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে আগামী বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই বিশেষ বৈঠক ডেকেছেন বিধাননগর পুরসভার কমিশনার। নোটিস দিয়ে তা জানানোও হয়েছে। সেই নোটিসের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে এ দিন সব্যসাচীর দায়ের করা আবেদনে। সব্যসাচী মামলায় যুক্ত করেছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর, সেই দফতরের মন্ত্রী এবং বিধাননগর পুরসভার কমিশনারকে। অনাস্থার নোটিসের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ চেয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সব্যসাচীর সল্টলেকের বাড়িতে যান মুকুলবাবু। মিনিট ৩৫ বৈঠক করে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘সব্যসাচী আমার ভাইয়ের মতো। ওর বিরুদ্ধে অনাস্থার নোটিস দেওয়া হয়েছে। স্ট্র্যাটেজি আলোচনা করতে এসেছিলাম।’’ পরে সব্যসাচীও বলেন, ‘‘মুকুলদা আইনটা ভাল বোঝেন। তাই ওঁর সঙ্গে আলোচনা করলাম। নোটিসও ওঁকে দেখিয়েছি।’’ সূত্রের খবর, ওই দিন দুপুরে মামলা করার বিষয়েই আলোচনা হয় দু’জনের।

এ দিন আদালতে দাখিল করা ৮৯ পৃষ্ঠার আবেদনে সব্যসাচী বলেছেন, পুরসভার কমিশনার বিশেষ বৈঠকের যে নোটিস দিয়েছেন, তার আইনি বৈধতা নেই। নোটিসটি ভেবেচিন্তে লেখা হয়নি। সেটি লেখা হয়েছে একেবারেই ‘যান্ত্রিক ভাবনা’য়। সেই কারণে তা খারিজ করা উচিত।

মামলার আবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিশেষ বৈঠক ডেকে ৯ জুলাই নোটিস দিয়েছেন কমিশনার। কিন্তু তিনি কার্যত ২৭ জুন থেকেই ছুটিতে। ছুটিতে থেকেও তিনি নোটিসে সই করলেন কী ভাবে? ওই সই জাল কিনা, সেই প্রশ্নও তুলেছেন সব্যসাচী।

আবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, রাজ্য সরকার প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ষড়যন্ত্র করে কয়েকজন কাউন্সিলরকে দিয়ে ওই নোটিস তৈরি করেছে। কী কারণে বিশেষ বৈঠক ডাকা, কারা ওই বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছেন, তার বিস্তারিত উল্লেখ নেই ওই নোটিসে। পুর আইন অনুযায়ী এই ধরনের নোটিসে সে কথা বিস্তারিত বলা দরকার। তা ছাড়া, পুর আইনে বলা রয়েছে, বিশেষ বৈঠক ডাকার প্রস্তাব দিয়ে চিঠি এলে, সেই চিঠি যাচাই করে তবেই বৈঠকের নোটিস দিতে হবে পুরসভার কমিশনারকে। এ ক্ষেত্রে বিশেষ বৈঠক ডাকার আগে কমিশনার কোনও ভাবনাচিন্তা করেননি বলে দাবি করা হয়েছে সব্যসাচীর আবেদনে।।

পাশাপাশি তাঁর আবেদনে বিধাননগর পুরসভার কিছু কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে কায়েমি স্বার্থ বজায় রাখার অভিযোগ এনেছেন সব্যসাচী। তিনি বলেছেন, ২০১৫ সালে বিধাননগর মিউনিসিপ্যালিটি, রাজারহাট-গোপালপুর মিউনিসিপ্যালিটি এবং মহিষবাথান-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা মিলে বর্তমান বিধাননগর মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন তৈরি হওয়ার পরে দেখা যায়, পুরনো রাজারহাট-গোপালপুর পুর এলাকায় বহু অবৈধ নির্মাণ হয়েছে। পুর আইন অনেক ক্ষেত্রেই সেখানে মানা হয়নি। এই ধরনের বেআইনি কাজে মদত দেওয়া কাউন্সিলররাই তাঁকে সরাতে চান বলে সব্যসাচীর অভিযোগ।

বিধাননগরের মেয়রের পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সব্যসাচী যা করছেন তা ঠিক করছেন না। দলের তরফে আমরা নজর রাখছি। উনি মামলা কেন করতে গেলেন জানি না। দলের ভাবমূর্তি যদি কেউ নষ্ট করার চেষ্টা করেন, তা হলে দলের নিয়মেই তাঁকে শাস্তি পেতে হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy