প্রত্যক্ষ ভাবে ভারতে হয়তো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আঁচ লাগছে না। কিন্তু ভারতেরই ‘বন্দে ভারত এক্সপ্রেস’ ট্রেনের কপালে যুদ্ধের ছায়াপাতের সমূহ আশঙ্কা তৈরি হয়ে গিয়েছে!
মহড়া দৌড়ের জন্য এক জোড়া বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের প্রোটোটাইপ রেক তৈরির কাজ প্রায় শেষ। কিন্তু তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ চাকাগুলি যেখান থেকে আসার কথা, দীর্ঘ যুদ্ধে সেই ইউক্রেন বিধ্বস্ত। যুদ্ধের জন্য সেই চাকা এসে পৌঁছয়নি। রেল সূত্রের খবর, যুদ্ধের দরুন ইউক্রেন তাদের কারখানায় ট্রেনের চাকা তৈরির কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে একলপ্তে ৭৫টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের চাকার জোগান মিলবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
রেলকর্তারা জানান, ইউরোপে যাত্রিবাহী ও পণ্যবাহী ট্রেনের চাকার বাজারের ৭০% ইউক্রেনের দখলে। যুদ্ধের মধ্যে ১২৮ জোড়া চাকা ইউক্রেন থেকে স্থলপথে রোমানিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আকাশপথে ওই চাকা এনে প্রোটোটাইপ রেকের মহড়া দৌড় যাতে সময়মতো শুরু করা যায়, এখন সেই চেষ্টাই চালানো হচ্ছে।
জুন-জুলাইয়ে দু’টি রেকের মহড়া দৌড় শুরু হওয়ার কথা। রেল জানিয়েছে, প্রথম দু’টি নমুনা রেকের মহড়া দৌড় সময়মতো শুরু না-হলে মোট ৭৫টি রেকের উৎপাদন ব্যাহত হবে। কারণ, নকশা অনুযায়ী রেক তৈরির পরে কোথাও কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হয় প্রোটোটাইপ বা নমুনা রেকের কার্যকারিতা দেখে। তাই ওই প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হোক, তা কোনও ভাবেই চাইছেন না রেলকর্তারা।
বিকল্প হিসেবে আমেরিকা, পোল্যান্ড ও চেক প্রজাতন্ত্রে চাকার খোঁজও শুরু হয়েছে। কিন্তু ইউক্রেনে তৈরি চাকা যত সস্তায় পাওয়ার সম্ভাবনা, এ ক্ষেত্রে তা হবে না বলে রেলকর্তাদের আশঙ্কা। ইউক্রেনে চাকা তৈরি বন্ধ হওয়ার পরে সারা বিশ্বেই বিপুল চাহিদার তুলনায় জোগান কমে যাওয়ায় চাকার দাম বাড়তে বাধ্য বলে মনে করছেন তাঁরা। কমবেশি ১২৫ কোটি টাকায় প্রায় ৩৬ হাজার চাকার বরাত দেওয়া হয়েছিল ইউক্রেনকে। সেখানকার কৃষ্ণ সাগরের বিভিন্ন বন্দর থেকে মুম্বই বন্দরে পৌঁছনোর কথা ছিল সেই সব চাকার।
বেঙ্গালুরুতে রাষ্ট্রায়ত্ত রেল হুইল ফ্যাক্টরিতে চাকা জোড়া লাগানোর অ্যাক্সলও তৈরি হওয়ার পথে। চাকা-সঙ্কটের মধ্যে রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনয়কুমার ত্রিপাঠীর আশ্বাস, ‘‘ট্রেনের বাকি যন্ত্রাংশ নির্ধারিত সময় মেনেই তৈরি হচ্ছে। ট্রেন সময়ে বার করার ক্ষেত্রে বিলম্বের আশঙ্কা নেই।’’ রেলকর্তারা অবশ্য বলছেন, নমুনা রেক সময় মতো বার করা গেলে বাকি রেকের চাকা জোগাড়ের জন্য আরও দু’মাস সময় মিলবে। তবে সব কিছুই নির্ভর করছে নমুনা রেকের মহড়া সময়ে শুরু করতে পারা এবং অন্তর্বর্তী সময়ে চাকার জোগান নিশ্চিত করতে পারার উপরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy