Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪
Russia Ukraine War

Russia Ukraine War: জঙ্গিপুর থেকে কিভ যত দূর, ইউক্রেন রাজধানী থেকে পোল্যান্ড সীমান্ত যেন তার থেকেও দূরে!

দূরে আগুনের ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। শব্দ শোনা যাচ্ছে মাঝে মধ্যেই। বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। বাড়িতে একটু খবরটা দেবেন, বিপদের মধ্যেও এখনও আমি ও মালদহের দুই বন্ধু নিরাপদে রয়েছি। তবে খাবার না পেলে সঙ্কট বাড়বে।

যুদ্ধক্ষেত্রে ট্যাঙ্ক।

যুদ্ধক্ষেত্রে ট্যাঙ্ক। —ফাইল চিত্র।

তোজাম্মেল হক আনসারি
কিভ শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৫:৫৮
Share: Save:

আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে বারবার পার্কিং এলাকার ছাউনির নীচে ঢুকে পড়তে হচ্ছে। ঝলকে ঝলকে উঠছে মিসাইলের আলো আর শব্দ। টানা পাঁচ-ছ মিনিটও কথা বলা যাচ্ছে না।

কিভ শহরে রাত তিনটে (ভারতীয় সময় শুক্রবার সকাল ৬টা)। প্রচণ্ড শব্দে কাঁপছে চারদিক। রাশিয়ার মিসাইল হানা শুরু হয়েছে ইউক্রেনে। আমি সেই শহরের কিভ মেডিক্যাল কলেজে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। হস্টেল থেকে জানিয়ে দেওয়া হল হস্টেল ছেড়ে যেতে হবে এখনই। বাঙালি বলতে আমরা তিন জন। আমি ছাড়া মালদহের হরিশচন্দ্রপুরের জুমানা ইয়াসমিন ও ইংলিশবাজারের ছেলে মাসুম হামিদ পারভেজ।

হস্টেল থেকে বেরিয়েই বেসমেন্টে যাওয়ার পথেই বাড়িতে ফোন করলাম। বাবাকে শহরের পরিস্থিতির কথা জানিয়ে বললাম, আর বোধ হয় যোগাযোগ করা যাবে না। কিভ শহরে পাশাপাশি দু’টি মেডিক্যাল কলেজের প্রায় ৫৫ ছাত্রছাত্রী আশ্রয় নিয়েছেন সেখানে। এদের মধ্যে অনেক দেশের ছেলেমেয়েরাই আছে। বেসমেন্ট বলতে কলেজ থেকে ১০০ মিটার দূরে একটি কার পার্কিং এলাকা। খবর এল রাস্তা দিয়ে ট্যাঙ্ক ঢুকছে রাশিয়ার। ভারতীয় দূতাবাস থেকে ফোন করে জানানো হয়েছে, দেশে ফিরতে হলে যে করেই হোক পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরির সীমান্তে পৌঁছতে হবে। সেখান থেকে ভারতীয়দের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু সেই সীমান্তের দূরত্ব কিভ শহর থেকে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার। কোনও গাড়ি নেই রাস্তায়।

কিভ অত্যন্ত জনবহূল শহর। কিন্তু এই মুহূর্তে সুনসান। গাড়ি নেই। কিন্তু বেলা বাড়লেও রাস্তা প্রায় জনশূন্য। একটা দোকান পর্যন্ত খোলা নেই। খাবার বলতে সকলের সঙ্গে কয়েক বোতল জল, আর কয়েক প্যাকেট বিস্কুট, পাঁউরুটির মতো শুকনো খাবার। তাতে আজকের দিনটা হয়ত চলে যাবে কোনও রকমে। কিন্তু কাল কী হবে, কিছুই জানি না। বেসমেন্টের মধ্যে টাওয়ার নেই। তাই বাইরে এসে ফোন করছি। দূরে আগুনের ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। শব্দ শোনা যাচ্ছে মাঝে মধ্যেই। বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। বাড়িতে একটু খবরটা দেবেন, বিপদের মধ্যেও এখনও আমি ও মালদহের দুই বন্ধু নিরাপদে রয়েছি। তবে খাবার না পেলে সঙ্কট বাড়বে।

লেখক কিভ মেডিক্যাল কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র, বাড়ি মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে।

অন্য বিষয়গুলি:

Russia Ukraine War Ukraine Russia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy