জাতীয় মানবধিকার কমিশন। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যে ভোট-পরবর্তী ‘সন্ত্রাস’ নিয়ে বিতর্ক বিস্তর। তারই মধ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিদের পরিদর্শন শুরু হয়েছে। কোচবিহার থেকে বসিরহাট— বৃহস্পতিবার দিনভর ‘আক্রান্ত’ বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে যান তাঁরা। তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃত্ব অবশ্য এ-সবই চক্রান্ত বলে সরব হয়েছেন।
কলকাতায় এসেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তিন সদস্য—ডিএসপি রাজেন্দ্র সিংহ, ডিএসপি মুনিয়া উপ্পল ও ইনস্পেক্টর জিন্টু সাকিয়া। এ দিন উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ায় যান তাঁরা। শিলিগুড়িতে যায় আট সদস্যের দল। ছিলেন ডিএসপি রাজবীর সিংহ, কুলবীর সিংহ, লাল বাহাদুর, কুলবন্ত সিংহ প্রমুখ। তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত অফিসে বসেই ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাসের কাহিনি শোনান 'আক্রান্তেরা'।
বিকেলে কোচবিহারের দিনহাটা হয়ে জামাদরবস এলাকায় যান দলের অন্য সদস্যেরা। ওই এলাকায় এক বিজেপি কর্মীকে খুনের অভিযোগ রয়েছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন কমিশনের প্রতিনিধিরা। তাঁরা অবশ্য সংবাদমাধ্যমকে কিছু বলতে চাননি। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, "কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থা নিরপেক্ষ নয়। বাংলাকে হেয় করাই উদ্দেশ্য। উত্তরপ্রদেশে কিন্তু কমিশনকে দেখা যায় না!" দিনহাটার প্রাক্তন বিধায়ক, শাসক দলের নেতা উদয়ন গুহও বলেন, "আশা রাখি, কমিশনের সদস্যেরা আক্রান্তদের সবার কাছেই পৌঁছবেন। নইলে বুঝতে হবে, নিরপেক্ষতা নেই।" ভোট-পরবর্তী হামলায় উদয়নবাবুও আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ। কিন্তু রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় কোচবিহার সফরে গিয়ে বলেছিলেন, তিনি উদয়নবাবুর ঘটনাটা জানেন না। তৃণমূল তখন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তোলে। কয়েক দিন কোচবিহারে থেকে কমিশনের দলটি আলিপুরদুয়ারেও যেতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিরা এ দিন উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমাতেও ‘আক্রান্ত’ বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলেন। হাড়োয়া ও ন্যাজাট থানায় গিয়েছিলেন তাঁরা। দলের দুই সদস্য হা়ড়োয়ার সোনাপুকুর-শঙ্করপুর পঞ্চায়েত অফিসে যান। সেখানে ‘ক্ষতিগ্রস্ত’ বিজেপি পরিবারের জনা কুড়ি সদস্য ছিলেন। তৃণমূলের প্রধান ফরিদ জমাদারও সেখানে দাঁড়িয়েই বলেন, ‘‘অপপ্রচার চলছে। ৪৪ জনের একটি তালিকা তৈরি হয়েছিল, যাঁরা গন্ডগোলের আশঙ্কায় বাইরে চলে গিয়েছিলেন। বেশির ভাগই ফিরে এসেছেন।’’ ‘আক্রান্তদের’ মধ্যে স্বপন মণ্ডল, গফ্ফর গাজিরা বলেন, ‘‘ভোটের ফল বেরোনোর পরে দুষ্কতীরা ভাঙচুর করে। লুটপাট করে বাড়ি। খড়ের গাদায় আগুন লাগিয়ে দেয়। আমরা ভয়ে বারাসতে পালিয়ে যাই।’’ পুলিশি পাহারায় তাঁদের এ দিন গ্রামে ফেরানো হয়েছে। ‘ক্ষতিগ্রস্তদের’ অনেকের সঙ্গে মোবাইলেও কথা বলেন কমিশনের প্রতিনিধিরা। বিজেপির বসিরহাট জেলা কার্যনির্বাহী সভাপতি তারক ঘোষ তাতে কিছুটা সন্তুষ্ট। সন্দেশখালির তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার মাহাতো বলেন, ‘‘পরিকল্পনা করে বিজেপি গোলমাল পাকাচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy