ফাইল চিত্র।
মন্ত্রিসভা থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে দেওয়ার পরেই সেখানে রদবদলের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সব ঠিকঠাক থাকলে, সোমবার বিষয়টি দানা বাঁধতে পারে। ওই দিন মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন মমতা।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের চার দিনের মধ্যে আবার সোমবার বৈঠক কেন, তা নিয়ে চর্চা তুঙ্গে। মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকার ফলে রদবদল-সম্ভাবনার পাশাপাশি একাংশের ধারণা, মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত মন্ত্রীকে এক সঙ্গে পদত্যাগ করিয়ে হয়তো মন্ত্রিসভা ঢেলে সাজানোর পথে হাঁটতে পারেন। পার্থ-কাণ্ড সামনে আসার পরে থেকেই এমন একটি সম্ভাবনার কথা হাওয়ায় ভাসছে। তৃণমূলের মধ্যে কেউ কেউ মনে করছেন, এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি, তাতে মন্ত্রিসভার খোলনলচে বদলে ফেলা সরকার ও দল উভয়ের পক্ষেই ভাল হবে।
দলীয় সূত্রে খবর, যে সব বিধায়কের নামে ‘রিপোর্ট’ রয়েছে, তাঁদের সঙ্গে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আলাদা করে কথা বলতে আগ্রহী। কয়েক দিনের মধ্যেই পর্যায়ক্রমে তাঁদের ডেকে অভিষেক এই প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেন।
এই অবস্থায় মন্ত্রিসভায় রদবদলের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার পরে সকলকে পদত্যাগ করিয়ে নতুন মন্ত্রিসভা গড়ার সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা এড়ানো যাচ্ছে না। শুক্রবার পর্যন্ত অবশ্য এ সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে কিছু জানা যায়নি। তবে নবান্নের শীর্ষকর্তা যা বলেছেন, তার সারমর্ম হল, এই মন্ত্রিসভার দুই মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও সাধন পাণ্ডে প্রয়াত। পার্থের দফতরগুলিও সব আপাতত মুখ্যমন্ত্রীর হাতে। তাই মন্ত্রীদের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টনের প্রয়োজন খুবই বেশি। মুখ্যমন্ত্রী হয়তো সেই কাজেই হাত দেবেন।
এটি করতে গিয়ে মমতা রাজনীতির ভাষায় ‘কামরাজ প্ল্যান’ –এর পথে যাওয়ার কথা ভাবছেন কি না, সেটিই এখন সব থেকে আগ্রহের বিষয়। ষাটের দশকে তৎকালীন কংগ্রেস নেতা কে কামরাজের পরিকল্পনা ছিল, সংগঠনের স্বার্থে কমিটির সদস্যেরা সবাই একযোগে পদত্যাগ করুন এবং নতুন করে কমিটি তৈরি হোক। ওই পরিকল্পনায় মন্ত্রী এবং দলীয় পদাধিকারীদের পৃথক করে রাখার ভাবনাও ছিল। উল্লেখ্য, তৃণমূলের অপসারিত মন্ত্রী পার্থ ছিলেন দলের মহাসচিব। দলের সিদ্ধান্ত, ওই পদ আর থাকবে না।
দলের অন্য একাংশ অবশ্য মনে করেন, সব মন্ত্রীকে পদত্যাগ না করিয়েও মুখ্যমন্ত্রী বড় সংখ্যক মন্ত্রীর দফতর অদলবদল করতে পারেন। সেই সূত্রেই মন্ত্রীদের যে স্থানগুলি শূন্য হয়েছে, তার ভিত্তিতে নতুন কয়েক জনকে মন্ত্রিসভায় আনা হতে পারে। এ ক্ষেত্রেও বিভিন্ন নাম নিয়েআলোচনা যথেষ্ট।
মন্ত্রিসভায় রদবদলের কথা বেশ কিছু দিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল। যেমন, শোনা গিয়েছে জেলা থেকে ব্লক স্তরে সাংগঠনিক রদবদলের সম্ভাবনাও। নানা কারণে এখনও সেগুলি হয়নি। তবে পার্থ-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে মন্ত্রিসভা পুনর্বিন্যাসের বিষয়টি এখন সামনে চলে এসেছে। কয়েকটি দফতরের গঠন ভেঙে দিয়ে তা একাধিক মন্ত্রীর হাতে দেওয়া হতে পারে বলেও শোনা যাচ্ছে। শিক্ষা তার অন্যতম। যদি তেমন হয়, সে ক্ষেত্রে আগের পদ্ধতি মতো স্কুলশিক্ষা ও উচ্চশিক্ষাকে হয়তো ভাগ করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া শিল্প-বাণিজ্য থেকে তথ্যপ্রযুক্তিকে আলাদা করা, পরিবহণ, আবাসন, পূর্ত ইত্যাদি দফতরের কাজ ভাগ করে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও শোনা যাচ্ছে।
রাতে একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্ত্রিদের শপথগ্রহণের ব্যাপারে রাজভবনকে অবহিত করে একটি বার্তা গিয়েছে। সেই বার্তায় সম্ভাব্য মন্ত্রীদের নাম এবং সংখ্যা আছে কি না, বা থাকলেও কী আছে, তার কিছুই অবশ্য এখনও স্পষ্ট হয়নি।
তবে সব কিছুই নির্ভর করছে মমতার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের উপরে। নবান্নের এক কর্তার মন্তব্য, ‘‘সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাবনা স্পষ্ট করার আগে কিছুই নিশ্চিত নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy