বন দফতরের ট্র্যাপ ক্যামেরায় এই ছবিই ধরা পড়েছে। —নিজস্ব চিত্র
প্রচণ্ড ঠান্ডায় কাবু বাঘও! পাহাড়ের উপরে প্রচণ্ড ঠান্ডায় নীচে নেমে এসেই কি নেওড়াভ্যালিতে ক্যামেরাবন্দি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার? প্রাথমিক ভাবে বন কর্মীদের অনুমান তেমনই। ২০১৯ বর্ষশেষের দিনেই সামনে এল বন দফতরের ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা পড়া রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ছবি। আর তাতেই বন দফতরের কর্মী-অফিসার মহলে খুশির হাওয়া।
বন দফতর সূত্রে খবর, নেওড়াভ্যালি জাতীয় উদ্যানের ৬ মাইল এলাকার কাছে বন দফতরের পেতে রাখা ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা পড়েছে একাধিক ছবি। ওই জায়গাটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার ফুট উঁচুতে। লাভা থেকে কিছুটা উপরে। গত ১৭ ও ১৮ ডিসেম্বর প্রায় একই এলাকায় পর পর দু’টি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে বেশ কয়েকটি ছবি। বুধবার সেই ছবি প্রকাশ করল বন দফতর। দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, পূর্ণবয়স্ক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারটিকে প্রাথমিক ভাবে পুরুষ বলেই মনে করা হচ্ছে।
২০১৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর প্রথম নেওড়ার জঙ্গলে বাঘের দেখা মেলে। ওই সময় ট্র্যাপ ক্যামেরায় ছবি ধরা পড়েছিল। ২০১৮ সালেও একই ভাবে বাঘের বিচরণের প্রমাণ হাতে এসেছিল বন দফতরের। কিন্তু ২০১৯-এ এ পর্যন্ত খবর ছিল না। তবে এক্কেবারে বছরের শেষ লগ্নে এসে ধরা দেওয়ায় খুশি বনকর্মী-অফিসাররা।
উত্তরবঙ্গের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা আশাবাদী ট্র্যাপ ক্যামেরায় আরও ছবি ধরা পড়বে। বনকর্মীদের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।’’ অন্য দিকে রাজ্যের প্রধান বনপাল রবিকান্ত সিনহা বলেন, ‘‘খুব পরিষ্কার ছবি ধরা পড়েছে। প্রমাণ হচ্ছে, নেওড়াতে বাঘের বিচরণের এবং বসবাসের আদর্শ পরিবেশ রয়েছে। পর পর তিন বছর ছবি ধরা পড়ল। আরও অত্যাধুনিক ট্র্যাপ ক্যামেরা বসিয়ে জঙ্গলকে চারদিক থেকে ক্যামেরার নজরদারিতে বন্দি করা হবে।’’
পর পর তিন বছর বাঘের ক্যামেরাবন্দি হওয়ার ঘটনায় একটা অদ্ভুত মিল। কারণ, ২০১৭ সালে ছবি ধরা পড়েছিল ডিসেম্বর মাসে। আবার ২০১৮ সালেও একই সময়ে। এ বারও ধরা পড়ল সেই ডিসেম্বরেই। পাহাড়ের উপরের দিকে এই সময় প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়ে। পরিবেশ ও পশুপ্রেমী এবং আবহবিদরা মনে করছেন, এই সময় পাহাড়ের উপরের দিকে বাঘেদের থাকার জন্য পরিবেশ অত্যন্ত প্রতিকূল হয়ে ওঠে। তা ছাড়া বরফে ঢাকা পড়ে যাওয়ায় খাদ্যশৃঙ্খলও নষ্ট হয়। ফলে খাবারের সন্ধান এবং শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচা— দুই কারণেই বাঘ নেমে আসে নীচের দিকে। বনকর্মীরা বলছেন, যে ছবিগুলি ধরা পড়েছে, তাতেও বাঘের অভিমুখ পাহাড়ের নীচের দিকে। তা থেকেও এই তত্ত্বই জোরালো হচ্ছে।
নেওড়াভ্যালির জঙ্গল। —ফাইল চিত্র
পাহাড়ের কালিম্পং জেলার এই নেওড়াভ্যালি জাতীয় উদ্যানকে বলা হয় উত্তরপূর্বের সবচেয়ে সমৃদ্ধ বনাঞ্চল। প্রায় ৮৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা বিস্তৃত এই পাহাড়ি বনাঞ্চল রেড পান্ডাদের আদর্শ বিচরণক্ষেত্র। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ৬০০ থেকে ১০ হাজার ফুট পর্যন্ত। এই জঙ্গলে এখনও পর্যন্ত মানুষের পা পড়েনি। তাই বন্যপ্রাণীদের বিচরণ ও বসবাসের জন্য আদর্শ বলে মনে করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy