প্রকাশ কারাটের মন্তব্য নিয়ে নানা মত সিপিএমের মধ্যে। —ফাইল ছবি।
গত কয়েক বছর ধরে সে ভাবে বৃদ্ধি হয়নি সিপিএমের। কলকাতায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের দ্বিতীয় দিনের পরে এ হেন মন্তব্য করেছেন সিপিএমের পলিটব্যুরোর কো-অর্ডিনেটর প্রকাশ কারাট। সেই সূত্রেই দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছে, কারাট কি তা হলে সদ্যপ্রয়াত সীতারাম ইয়েচুরির নেতৃত্বাধীন সময়কালকেই ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন?
কারাট সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব ছাড়ার পরে ১১ বছর আগে সেই পদের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ইয়েচুরি। গত সেপ্টেম্বরে তিনি কিছু দিনের অসুস্থতার পর প্রয়াত হন। তার পর কারাটকেই আগামী এপ্রিলে অনুষ্ঠিতব্য পার্টি কংগ্রেস পর্যন্ত সমন্বয়কের দায়িত্ব দিয়েছে দল। নিউ টাউনে শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। যা রবিবার দুপুরে শেষ হবে। এই বৈঠক থেকেই পার্টি কংগ্রেসের রাজনৈতিক রণকৌশলগত খসড়া চূড়ান্ত হবে।
এক ভিডিয়োবার্তায় কারাট শনিবার বলেন, ‘‘সিপিএমের নিজস্ব শক্তি না বৃদ্ধি পেলে হিন্দুত্ব এবং কর্পোরেটমুখী উদারবাদী অর্থনীতির বিরুদ্ধে প্রকৃত আন্দোলন গড়ে তোলা যাবে না।’’ এখানে না থেমে কারাট এ-ও বলেন, ‘‘গত বেশ কয়েক বছর ধরে সিপিএম এবং বামেদের সে ভাবে অগ্রগতি হয়নি। পার্টি কংগ্রেসে সে বিষয়েও আমাদের দিশা খুঁজতে হবে।’’
সিপিএমের একটি অংশের বক্তব্য, দলে সীতারামের আমলেই বিজেপি এবং কংগ্রেসের থেকে সমদূরত্বের নীতি পরিত্যায্য হয়েছিল। রাজ্যে রাজ্যে ‘বাস্তবতা’ অনুযায়ী নির্বাচনী কৌশলের নীতিও সীতারামেরই মস্তিষ্কপ্রসূত ছিল। কিন্তু এই পর্বেই বাংলায় সিপিএম শূন্য হয়েছে। ত্রিপুরায় ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হয়েছে তাদের। জাতীয় রাজনীতিতে ক্রমশ অপ্রাসঙ্গিক হয়েছে দল। হয়তো কারাট সে দিকেই ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন।
অন্য অংশের বক্তব্য, কারাট কোনও আমলকে বলতে চাননি। তিনি সামগ্রিক ভাবে সিপিএম এবং বামেদের বিপন্নতা নিয়ে উদ্বেগের কথা বলেছেন। কারণ তিনিও জানেন, তাঁর আমলে ২০১১ সালে বাংলা এবং কেরলে সরকারের পতন হয়েছিল। কেরলে ফিরতে পারলেও বাংলায় ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু হয়েছে। আবার সীতারামের আমলেই রেকর্ড ভেঙে পর পর দু’বার কেরলের ক্ষমতায় এসেছে দল। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘কোনও সঙ্কীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কারাট ওই কথা বলেননি। তিনি দলের বাস্তব পরিস্থিতি বলেছেন। যা সত্য।’’
সিপিএমের পরবর্তী পার্টি কংগ্রেস হবে আগামী এপ্রিলে তামিলনাড়ুর মাদুরাই শহরে। কলকাতায় তিন দিনের বৈঠক থেকেই রাজনৈতিক খসড়া গৃহীত হবে। তার পর ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের আগেই সর্বসমক্ষে তা আনবে সিপিএম। যেখানে দলীয় সদস্য থেকে সাধারণ মানুষ সংশোধনী পাঠাতে পারেন। শেষ পর্যন্ত তা গৃহীত হবে পার্টি কংগ্রেসে। কিন্তু রাজনৈতিক লাইনের ভিত্তিতে গৃহীত নির্বাচনী কৌশল সংক্রান্ত পর্যালোচনা এত দিন ‘অবারিত’ হত না। এ বার সেটাও করতে চলেছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy