Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

BJP: বিজেপি-রই একটা অংশ রাজ্যে দলকে দুর্বল করতে চায়, জয়প্রকাশ ও রীতেশের আক্রমণ

বিদ্রোহ নিয়ে বেশি সরব দুই প্রাক্তন রাজ্য নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তিওয়ারিকে কারণ দর্শানোর চিঠি দেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

বিদ্রোহী দুই মুখ জয়প্রকাশ ও রীতেশ। মঙ্গলবার প্রেস ক্লাবে।

বিদ্রোহী দুই মুখ জয়প্রকাশ ও রীতেশ। মঙ্গলবার প্রেস ক্লাবে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২২ ১৫:১৮
Share: Save:

প্রকাশ্যে দলীয় নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন সাময়িক ভাবে বরখাস্ত হওয়া দুই বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তিওয়ারি। মঙ্গলবার প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করে তাঁরা দাবি করেন, গোটা বাংলাতেই নেতা, কর্মীদের মধ্যে নতুন রাজ্য কমিটি নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এখন তাই বর্তমান রাজ্য নেতারা পারলে জেলা সফর করে দেখান। তাঁরা কোনও বিক্ষোভের মুখে পড়বেন কি না, সে উত্তর না দিয়ে রীতেশদের আরও দাবি, ক্ষমতা থাকলে বর্তমান নেতৃত্ব বিদ্রোহীদের রাজ্য জুড়ে যে কর্মসূচি রয়েছে, তা রুখে দেখান। আর জয়প্রকাশ বলেন, ‘‘রাজ্যে বিজেপি-কে দুর্বল করার চেষ্টা দলেরই একাংশের, আগেই দিল্লিকে জানিয়েছি।’’

রাজ্য কমিটির বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জের সুরে জয়প্রকাশ বলেন, ‘‘যাঁরা বিজেপি-র পতাকা নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারেন তবে কাচের ঘরে থাকা দলের নেতাদের বিরুদ্ধেও কর্মীরা নামতে তৈরি। ভয় দেখিয়ে বন্ধ করা যাবে এমন অলীক স্বপ্ন দেখবেন না।’’

মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে জয়প্রকাশ বলেন, ‘‘বিজেপি-র একটা অংশ রাজ্যে দলকে দুর্বল করতে চায়। সেই উদ্যোগের পরিণতি ২০১৯ সালে লোকসভায় ১৮ আসনে জেতা বিজেপি খারাপ ফল করে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে। অন্য দলের নেতাদের নিয়ে এসে বাজিমাৎ করার চেষ্টা শুরু হয়। ভিন রাজ্যের নেতাদের নিয়ে এসে বাংলা দখলের কথা বলা হয়। এটা ভুল হচ্ছে বলে আমি আগেই জানিয়েছি।" ২ মে ফল ঘোষণার দিন বিধানসভা ভোটে হার বুঝতে পেরেই বিজেপি-র বড় বড় নেতারা বাংলা ছেড়ে পালাতে শুরু করেন বলে দাবি করেন জয়প্রকাশ। তিনি বলেন, "দিনের শেষে সাংবাদিক বৈঠকে উত্তর দেওয়ার সময় আমি ছাড়া কেউ ছিলেন না। ১১ জুন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি মুকুল রায় যখন তৃণমূলে ফিরে যান তখন অন্য কোনও নেতাকে সামনে দেখা যায়নি। সাংবাদিকদের সামনে আমাকেই এগিয়ে দেওয়া হয়।’’

মঙ্গলবার আরও বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন রীতেশ। তিনি বলেন, ‘‘ক’দিন আগেই রাজ্য সভাপতি সব কমিটি এবং সেল ঘোষিত ভাবে ভেঙে দিয়েছেন। তবে যে কমিটি আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে, তারই তো স্বস্তি নেই।" একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘দলের তৎকাল নেতাদের অনেকে কোনও দিন রাজনৈতিক স্বার্থ ত্যাগ স্বীকার করেননি। তৃণমূলের সাহায্য নিয়ে ব্যক্তিগত উন্নতি ঘটিয়েছেন। পেশা থেকে অনেক রোজগার করেছেন। এঁরা গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকে দলের ক্ষতি করতে এসেছেন।’’

২ মে ফল ঘোষণার দিন বিধানসভা ভোটে হার বুঝতে পেরেই বিজেপি-র বড় বড় নেতারা বাংলা ছেড়ে পালাতে শুরু করেন বলে দাবি করেন জয়প্রকাশ। তিনি বলেন,‘‘দিনের শেষে সাংবাদিক বৈঠকে উত্তর দেওয়ার সময় আমি ছাড়া কেউ ছিলেন না। ১১ জুন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি মুকুল রায় যখন তৃণমূলে ফিরে যান, তখন অন্য কোনও নেতাকে সামনে দেখা যায়নি। সাংবাদিকদের সামনে আমাকেই এগিয়ে দেওয়া হয়।’’

রাজ্য বিজেপি-র নিন্দা করতে গিয়ে জয়প্রকাশ দাবি করেন, বিধানসভা নির্বাচনের বিপর্যয় নিয়ে দলে কোনও আলোচনা হয়নি। যাঁরা আলোচনা করতে চেয়েছেন, তাঁদের বৈঠকে কথা বলতে দেওয়াই হয়নি। জেলায় জেলায় কর্মীরা মার খেলেও তাঁদের পাশে না দাঁড়িয়ে আদালতে গিয়েছে দল। তাতে কর্মীদের মনোবল ভেঙে গিয়েছে বলে দাবি করে জয়প্রকাশ জানান, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে তিনি বারবার এ নিয়ে জানিয়েছিলেন। বর্তমান নেতাদের আক্রমণ করে জয়প্রকাশ বলেন, ‘‘কাচের ঘরে বসে যাঁরা অন্যদের দিকে ঢিল ছুড়ছেন, তাঁরা সাধারণ কর্মীদের থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন।’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘এখনও সময় রয়েছে। যদি আত্মকেন্দ্রিকতা ভুলে বর্তমান দায়িত্বশীলরা সাধারণ কর্মীদের পাশে গিয়ে দাঁড়ান, বাংলার মানুষের পাশে যান। তবে দল ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।’’ একই সঙ্গে তাঁর আক্রমণ ছিল বিদ্যার্থী পরিষদ থেকে বিজেপি-তে এসে দায়িত্ব পাওয়া নেতাদের বিরুদ্ধে। প্রসঙ্গত, সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন), সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়-সহ অনেকেই বিদ্যার্থী পরিষদের প্রাক্তনী। তাঁদের দিকে আক্রমণ ছুড়ে দিয়ে জয়প্রকাশ বলেন, ‘‘এখন রাজ্যে স্কুল, কলেজ খোলা নিয়ে প্রাক্তন ছাত্রনেতাদের আন্দোলনে নামা উচিত।’’

বিজেপি-র বর্তমান রাজ্য কমিটিতে কোনও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ নেই কেন তা নিয়েও মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্ন তুলেছেন জয়প্রকাশরা। তিনি বলেন, "সংখ্যালঘু মোর্চার প্রধান করা হয়েছে একজন খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিকে। কিন্তু বাংলায় ৩০ শতাংশ ভোট যাঁদের রয়েছে, সেই মুসলিমদের একজনও নেই কেন?" দলের প্রবীণদের বাদ দেওয়া নিয়ে জয়প্রকাশের বক্তব্য, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য যাঁদের রাজ্য কমিটিতে রাখা হয়েছে, তাঁদের রাজনৈতির অভিজ্ঞতা একেবারেই কম।’’

এর আগে বিভিন্ন সময়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন রীতেশ, জয়প্রকাশরা। সেই সব কথা দলবিরোধী অভিযোগ তুলেই তাঁদের কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে রাজ্য বিজেপি। কিন্তু এ বার সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত জানার পরে সংগঠিত ভাবে দলের বিরোধিতা নিয়ে। কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করে দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিদ্রোহীদের কর্মসূচি ঘোষণা করলেন তাঁরা। মঙ্গলবার জয়প্রকাশ সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতেই বলেন, বুধবার সাধারণতন্ত্র দিবসের দিন থেকেই বিদ্রোহীদের কর্মসূচি শুরু হচ্ছে।

বিজেপি-র বর্তমান রাজ্য কমিটিতে কোনও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ নেই কেন তা নিয়েও মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্ন তুলেছেন জয়প্রকাশরা। তিনি বলেন, ‘‘সংখ্যালঘু মোর্চার প্রধান করা হয়েছে একজন খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিকে। কিন্তু বাংলায় ৩০ শতাংশ ভোট যাঁদের রয়েছে সেই মুসলিমদের একজনও নেই কেন?’’ দলের প্রবীণদের বাদ দেওয়া নিয়ে জয়প্রকাশের বক্তব্য, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য যাঁদের রাজ্য কমিটিতে রাখা হয়েছে, তাঁদের রাজনৈতির অভিজ্ঞতা একেবারেই কম।’’

রীতেশ মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘দলের যে নেতারা রাজ্যে দলের এত উন্নতি ঘটিয়েছে, তাদেরই বাদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এর ফলে ভাল হবে না।’’ তাঁদের দাবি, ২০১৯ সালে রাজ্যের নেতা, কর্মীরা ভোট লড়েছিল। কিন্তু পরে বিজেপি-র পথ বদলে যায়। অভিজ্ঞ সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে অনভিজ্ঞ অমিতাভকে বসানো হয়। বাইরেরের রাজ্যের নেতারা নির্বাচন পরিচালনা করলেন। তাঁরা হিন্দিতে কথা বলেন। রীতেশ ও জয়প্রকাশরা দাবি করেন, তাঁরা কোনও দলবিরোধী কথা বলেননি। কর্মীদের কষ্টের কথা তুলে ধরেছেন। সেটা অন্যায় ও দলবিরোধী নয় বলেই দাবি তাঁদের।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy