Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
সুপ্রিম কোর্টে মত বদল কেন্দ্রের

গোপনীয়তার অধিকার নিয়ে সরব বাংলা

কেন্দ্রের যুক্তি শুনে প্রধান বিচারপতি খেহর বলেন, ‘‘এত দিন আধারের বিরুদ্ধে মামলাকারীরা বলেছেন, গোপনীয়তা মৌলিক অধিকার। আপনারা সরকারের পক্ষ থেকে বলেছেন, তা নয়।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৭ ০৪:৩৫
Share: Save:

নাগরিকদের গোপনীয়তার অধিকারের পক্ষে এ বারে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল শুরু করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। গোপনীয়তার অধিকার সাংবিধানিক অধিকার কি না, তা নিয়েও কেন্দ্রের বিপরীত অবস্থানই নিল পশ্চিমবঙ্গ।

প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের নেতৃত্বাধীন ৯ সদস্যের বেঞ্চে এখন গোপনীয়তার অধিকার নিয়ে শুনানি চলছে। পশ্চিমবঙ্গ ও কংগ্রেস-শাসিত তিন রাজ্যের হয়ে কপিল সিব্বল আজ সুপ্রিম কোর্টে যুক্তি দেন, গোপনীয়তা সংবিধান দেওয়া মৌলিক অধিকার। যে ভাবে প্রযুক্তির উন্নতি হচ্ছে, তাতে গোপনীয়তার অধিকারের দিকটি নতুন করে খতিয়ে দেখা উচিত।

কেন্দ্রীয় সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল এ দিন যুক্তি দিয়েছেন, সরকার গোপনীয়তাকে সাংবিধানিক অধিকারের একটা অংশ বলে মনে করে। গোপনীয়তার সব দিকই মৌলিক অধিকার নয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তা নির্ভর করবে। কিছু ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রণ জারি করতে পারে।

কেন্দ্র অবশ্য এই ক্ষেত্রে অবস্থান পরিবর্তন করেছে। কারণ এত দিন কেন্দ্রই যুক্তি দিয়েছে, গোপনীয়তার অধিকার সাধারণ আইনি অধিকার হলেও তা মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে না। সেই কারণেই আধারের সাংবিধানিক বৈধতা বিচার করার আগে এই প্রশ্নের সমাধান করার সিদ্ধান্ত নেয় সুপ্রিম কোর্ট।

কেন্দ্রের যুক্তি শুনে প্রধান বিচারপতি খেহর বলেন, ‘‘এত দিন আধারের বিরুদ্ধে মামলাকারীরা বলেছেন, গোপনীয়তা মৌলিক অধিকার। আপনারা সরকারের পক্ষ থেকে বলেছেন, তা নয়। সেই ৫ সদস্যের বেঞ্চে ফয়সালা হওয়ার আগে ৯ বিচারপতির বেঞ্চ তার বিচার করতে বসেছে। এখন আপনারা যদি বলেন, এ’টি মৌলিক অধিকার তা হলে তো এখনই শুনানি বন্ধ করে দিতে হয়।’’

বেণুগোপাল বলেন, ‘‘গোপনীয়তা মৌলিক অধিকারের অংশ হলেও তার নির্দিষ্ট সীমা থাকা উচিত।’’ তিনি যুক্তি দেন, সরকার মনে করে, কোনও নাগরিক আধারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে পারেন না। বলতে পারেন না যে তার গোপনীয়তায় হস্তক্ষেপ হচ্ছে। আধারের ক্ষেত্রে গোপনীয়তা চরম অধিকার নয়। তাতে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ জারি করতে পারে।

এ দিনের শুনানিতে জরুরি অবস্থার সময় মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপের প্রসঙ্গও বারবার উঠে এসেছে। বিচারপতিরা বলেন, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের মতো আইন জারি করে মৌলিক অধিকারে সব থেকে বেশি হস্তক্ষেপ হয়েছিল।

বেণুগোপাল পাল্টা যুক্তি দেন, আধারের ফলে ১০০ দিনের কাজের মতো বহু প্রকল্পে গরিবের কাছে সরাসরি টাকা যাচ্ছে। সরকারি ভর্তুকির সাশ্রয় হচ্ছে। ওড়িশার কলাহান্ডিতে যে মা’কে দারিদ্রের জন্য কন্যাসন্তান বেচে দিতে হয়, তার কাছে গোপনীয়তার অধিকার ধনীদের বিষয়। ভারতীয় বাস্তবতা থেকে বিষয়টিকে দেখা দরকার।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE