সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সুপ্রিম কোর্টে পিছিয়ে গেল আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ এবং খুনের মামলার শুনানি। আগামী শুক্রবার মামলাটির শুনানি হওয়ার কথা ছিল শীর্ষ আদালতে। কিন্তু ওই দিন মামলাটি শুনছে না প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ। তার পরিবর্তে আগামী ১ অক্টোবর মামলাটির শুনানি হবে। এমনটাই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই।
পিটিআই প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের মন্তব্য উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, আগামী ১ অক্টোবর আরজি কর নিয়ে শীর্ষ আদালতেরই করা স্বতঃপ্রণোদিত মামলাটির শুনানি হবে। প্রতিবেদন অনুসারে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, “আমরা ১ অক্টোবর, অর্থাৎ পরবর্তী মঙ্গলবার মামলাটি শুনানির জন্য নথিবদ্ধ করব।”
গত ১৭ সেপ্টেম্বর আরজি কর মামলার শুনানিতে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য সরকার। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ জমা দেওয়ার কথা ছিল সিবিআইয়ের। সেই মতো রিপোর্ট দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শুনানিতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ওঠে। রাতে কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের নিয়ে রাজ্য সরকারের ‘বিতর্কিত’ বিজ্ঞপ্তি, জুনিয়র ডাক্তারদের চলতে থাকা কর্মবিরতি, পুলিশের ভূমিকা— নানা বিষয় নিয়ে সওয়াল-জবাব চলে। সিবিআইয়ের দেওয়া ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ পড়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিচারপতিরা।
রাতে মহিলাদের কর্মস্থল সংক্রান্ত ‘বিতর্কিত’ বিজ্ঞপ্তি মুছে ফেলার রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিলেও সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফা সংক্রান্ত দাবির প্রসঙ্গ খারিজ করে দেয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। গত শুনানিতে জুনিয়র ডাক্তারদের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ। তিনি বলেন, “জুনিয়র ডাক্তারদের আস্থা অর্জনের জন্য রাজ্যের সঙ্গে তাঁদের যে বোঝাপড়া, তা নথিবদ্ধ রাখা হোক। আমরা জানি, আমাদের সব দাবি এক দিনে পূরণ হবে না। জুনিয়র ডাক্তারেরা কাজে ফিরতে চান। এই বিষয়ে এখনই নজর দেওয়া দরকার।”
গত শুনানিতে মোট ছ’দফা নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। প্রথমত, উইকিপিডিয়া থেকে আরজি করে ধর্ষণ ও খুনের শিকার নির্যাতিতার নাম ও ছবি মুছে ফেলতে হবে। দ্বিতীয়ত, গত ১২ সেপ্টেম্বর তদন্ত সংক্রান্ত কয়েকটি বিষয় নিয়ে সিবিআইকে চিঠি দিয়েছিলেন নির্যাতিতার বাবা। ওই বিষয়গুলি গোপনীয়। তাই সেগুলি প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে না। সিবিআইকে সেগুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। তৃতীয়ত, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে জেলাশাসক, মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল ও সিনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা করে হাসপাতালে শৌচাগার এবং সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে হবে। চতুর্থত, মহিলা চিকিৎসকেরা সেমিনার হলে বিশ্রাম নিতে গেলে তাদের বায়োমেট্রিক নেওয়া দরকার। নিরাপত্তার জন্য স্বাস্থ্যসচিবকে এই বিষয়ে পদক্ষেপ করতে হবে। পঞ্চমত, ওই ঘটনার পরে হাসপাতালের পুরো সিসিটিভি ফুটেজ সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে হবে পুলিশকে। ফুটেজ নিয়ে যা সমস্যা তা মেটাতে হবে। তদন্তে পুলিশকে সহযোগিতা করতে হবে। এবং ষষ্ঠত, জুনিয়র ডাক্তারেরা বৈঠক করে কাজে যোগ দিলে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না রাজ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy