অবিভক্ত বর্ধমানের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক অমল হালদার।—ফাইল চিত্র।
জোট এবং সংগঠনের প্রশ্নে আলিমুদ্দিনের সঙ্গে সংঘাত ছিল বর্ধমান জেলা সিপিএমের। এ বার জেলাতেই দলের মধ্যে বিদ্রোহের সুর! বাম রাজনীতিতে বর্ধমানের মতো প্রভাবশালী জেলায় যে ঘটনা অভাবনীয় বলেই মনে করছেন অনেকে।
দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে জায়গা ফাঁকা হওয়া সত্ত্বেও কৃষক সভার নেতা এবং অবিভক্ত বর্ধমানের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক অমল হালদারকে সেখানে নেওয়া হয়নি রাজ্য নেতৃত্বের বড় অংশের আপত্তিতে। সেই সিদ্ধান্ত ঘিরে রাজ্য ও জেলা পার্টির সংঘাতের বাতাবরণের মধ্যেই এ বার জেলার অন্দরে গোলমাল বেধেছে নতুন মুখ নেওয়ার উদ্যোগকে কেন্দ্র করে। জেলার যুব ও কৃষক সংগঠন থেকে দীপঙ্কর দে ও বিনোদ ঘোষকে পূর্ব বর্ধমানের জেলা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তে আপত্তি তুলেছেন বেশ কিছু নেতা। নতুন দুই মুখই জেলা নেতৃত্বের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত। সংগঠনের অন্দরে বিদ্রোহের রেশ বাইরে টেনে এনে আবার জেলা নেতৃত্বের রোষের মুখে পড়েছেন দুই যুব নেতা। তার পাল্টা হিসেবে জেলার যুব ও ছাত্র সংগঠনে গণ-ইস্তফার তোড়জোড় শুরু হয়েছে বলেও দলীয় সূত্রের খবর।
সিপিএম সূত্রের খবর, দুই নতুন মুখ নেওয়ার প্রস্তাব পূর্ব বর্ধমান জেলা নেতৃত্ব পেশ করার পরেই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন প্রাক্তন সাংসদ সাইদুল হক, বামাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, অভিজিৎ কোঙার, অয়নঅংশু সরকারের মতো একাধিক জেলা কমিটির সদস্য। কাটোয়া, কেতুগ্রাম, ভাতার, গলসি, মেমারি, মন্তেশ্বর, জামালপুরের মতো এলাকা থেকে প্রতিবাদের স্বর উঠেছে। তাঁদের আপত্তির কারণ, এসএফআই জেলা কমিটিতে দু’বছর আগে যে দু’জনের ভূমিকা নিয়ে সংগঠনেই প্রভূত অভিযোগ ছিল, তাঁরা কেন দলের জেলা কমিটিতে জায়গা পাবেন?
জলঘোলা সেখানেই থামেনি। জেলায় দল যে ভাবে পরিচালিত হচ্ছে, তাতে কাজ করা দুরূহ হয়ে উঠছে— এই মর্মে সামাজিক মাধ্যমে একের পর এক মন্তব্য করা শুরু করেন সিপিএমেরই নানা স্তরের কর্মীরা। দলের একটি সূত্রের দাবি, প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেওয়ায় যুব সংগঠনের জেলা সম্পাদক অয়নঅংশু এবং জেলা সভাপতি প্রলয় আইচের ডানা ছেঁটে দেওয়ার তৎপরতা শুরু হয়েছে। দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার দায়ে জেলায় সৌমেন কার্ফা ও মনসিজ হোসেনকে বছরদুয়েক কোনও ফ্রন্টের সঙ্গে যুক্ত না করে কার্যত বসিয়ে রাখা হয়েছে বলে দলের অন্দরে ইতিমধ্যেই ক্ষোভ রয়েছে। এখন জেলা কমিটির সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করে সামাজিক মাধ্যমে মন্তব্য করায় চন্দন সোমকেও শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে পড়তে হবে দলীয় সূত্রের ইঙ্গিত।
এই ঘটনাপ্রবাহের প্রেক্ষিতে জেলার যুব নেতৃত্ব আলোচনা করে ঠিক করেছেন, তাঁরা সংগঠনের কর্মসূচি তাঁদের মতো সাজাবেন এবং রাজ্য নেতাদের প্রয়োজনমতো নিয়েও আসবেন। ঘরের বিবাদ প্রসঙ্গে পূর্ব বর্ধমানের জেলা নেতৃত্বের কেউ প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি। তবে জেলা কমিটির এক নেতার মতে, ‘‘আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার সময়ে যে কূটকচালি চলছে, তা একেবারেই কাঙ্খিত নয়!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy