সাংবাদিকদের মুখোমুখি অমিত মিত্র। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র
গত বাজেটের তুলনায় প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয়বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তার মধ্যে ১১টি নতুন উপভোক্তাকেন্দ্রিক প্রকল্পের জন্য ব্যয় হবে পাঁচ হাজার কোটি টাকারও বেশি। ভোটের আগে এই জনমুখী বাজেটের প্রয়োজনে আয় বাড়াতে গিয়ে হিমসিম খেয়েছেন অর্থমন্ত্রী। সেই কারণে রাজকোষ ঘাটতি বেঁধে রাখার যে প্রবণতা তিনি নিজেই তৈরি করতে চেয়েছিলেন, তা থেকে সরে আসতে হয়েছে তাঁকে।
বেতন বৃদ্ধি, বুলবুলের ক্ষতিপূরণ, আয়ুষ্মান ভারত, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মানের মতো প্রকল্পগুলির পুরো বোঝা টানতে গিয়ে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে রাজকোষ ঘাটতি অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। বাজেট প্রস্তাবে রাজ্যের অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের তুলনায় রাজকোষ ঘাটতি ২.১০% বলা হলেও বছর শেষে তা ২.৬৩%-এ দাঁড়াতে পারে বলে বাজেট পুস্তিকায় জানানো হয়েছে। অর্থমন্ত্রী ২০২০-২১ অর্থবর্ষে রাজকোষ ঘাটতি ২.১৮%-এ বেঁধে রাখতে চেয়েছেন। যদিও নবান্নের কর্তাদের অনেকের ধারণা, বছর শেষে তা ৩% ছুঁয়ে ফেলতে পারে।
জিএসটি চালু হওয়ার পর রাজ্যের হাতে নতুন কর চাপানোর তেমন কোনও সুযোগ নেই। তাই স্ট্যাম্প ডিউটি, বকেয়া ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স (ভ্যাট), পরিবহণ করের উপরে চারটি ছাড়-প্রকল্প (ওয়েভার স্কিম) ঘোষণা করে কয়েক হাজার কোটি টাকা আয় করতে চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী। অর্থনীতিবিদদের অনেকের মতে, রাজ্যের রাজস্ব মদ ও লটারির উপরে অনেকটাই নির্ভরশীল। কিন্তু কর আদায়ের জন্য এই দু’টি বাণিজ্যে উৎসাহ দিলে সমাজে কুপ্রভাব পড়বে, এই অভিযোগ উঠতে পারে। তাই বাজেটে এই দু’টি ক্ষেত্রে জোর না-দিয়ে বকেয়া কর আদায়ে জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভোটের টানে নয়া ১১ প্রকল্প রাজ্য বাজেটে
এ দিন অর্থমন্ত্রী জানান, ২৫ হাজারেরও বেশি ‘কেস’ নিষ্পত্তির অপেক্ষায় পড়ে রয়েছে। ভ্যাট, সিএসটি-র ক্ষেত্রে আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে ২৫% দিয়ে বিবাদ নিষ্পত্তি করা যাবে। যাঁরা এই সুযোগ নিতে পারবেন না, তাঁরা ‘ডিসপিউটেড ট্যাক্স’-এর ১২.৫% এককালীন এবং তার পর ১৫% সর্বাধিক ৬টি মাসিক কিস্তিতে জমা দিয়ে বিবাদ মিটিয়ে ফেলতে পারবেন। বকেয়া বাণিজ্যকর আদায়েও একই প্রকল্প ঘোষণা করেছেন তিনি। অমিতবাবু আরও জানান, পরিবহণ করের বকেয়া জমা দিলে দেরির জন্য জরিমানা করা হবে না। আদালতে জমা দিতে হবে এমন জরিমানার ক্ষেত্রে ৫০% মকুব করা হবে। চা-বাগানের ক্ষেত্রে আগামী দু’টি অর্থবর্ষে কৃষি-আয়কর মকুব করার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy