Advertisement
E-Paper

উত্তর থেকে দক্ষিণ, ভোটের দিন প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৫ জন, কেমন ফল হল সেই পঞ্চায়েতের আসনগুলিতে?

পঞ্চায়েত ভোটের দিন অর্থাৎ গত ৮ জুলাই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় মৃত্যু হয়েছিল মোট ১৫ জনের। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছিল মুর্শিদাবাদে। কেমন ফলাফল হল সেই সমস্ত পঞ্চায়েতে?

Image of panchayet election related violence

শুধুমাত্র ভোটের দিন ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল রাজ্যে। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

অনির্বাণ দাশ

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৩ ১৮:১৮
Share
Save

পঞ্চায়েত ভোটের গণনা শেষ হওয়ার পথে। বাকিদের বহু পিছনে ফেলে গ্রামবাংলায় নিজেদের দাপট কায়েম করে ফেলেছে তৃণমূল। কিন্তু এই ভোটপর্বে হানাহানিও কম হয়নি। ভোটপর্বে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৪৫ জনের। শুধুমাত্র ৮ জুলাই অর্থাৎ ভোটের দিন মুর্শিদাবাদ থেকে কোচবিহার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে উত্তর দিনাজপুর— মৃত্যু হয়েছিল ১৫ জনের। ভোট শেষে গণনাও শেষ হওয়ার পথে। কী ফল হল সেই সব পঞ্চায়েতের, যেখানে ভোটের জন্য প্রাণ গিয়েছিল ১৫ জনের?

ভোটের দিন মৃত ১৫ জনের মধ্যে ন’জনই তৃণমূলের সঙ্গে জড়িত। কেউ তৃণমূল প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট। কেউ তৃণমূল প্রার্থীর আত্মীয়। বাকি ছ’জন বিরোধী বিভিন্ন দলের। যদিও ভোটের ফলাফলে একটা বিষয় স্পষ্ট— প্রায় কোথাওই মৃত্যুর ঘটনা ভোটের ফলাফলে ছায়া বা প্রভাব ফেলেনি। এ বারের পঞ্চায়েত ভোটপ্রক্রিয়ার সময় জুড়ে বুধবার পর্যন্ত গোটা রাজ্যে মোট প্রাণ হারিয়েছেন ৪৫ জন। আরও চার জনের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে। তবে তাঁদের সকলেরই মৃত্যু হয়েছিল ভোটের আগের গোলমালে।

ভোটের দিন সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছিল মুর্শিদাবাদে। সেখানেই খুন হন মোট চার জন। ভোটের দিন মৃত্যুর সংখ্যার নিরিখে তার পরেই রয়েছে মালদহ। সেখানে তিন জনের মৃত্যু হয় ভোটের দিন। এ ছাড়া উত্তরের কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় দু’জন করে মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। নদিয়া এবং পূর্ব বর্ধমানে মৃত্যু হয়েছিল এক জন করে মোট দু’জনের।

মুর্শিদাবাদ

অধীর চৌধুরীর মুর্শিদাবাদে শুধুমাত্র ভোটের দিন প্রাণ হারিয়েছিলেন চার জন। খড়গ্রামে ভোটের দিন তৃণমূল কর্মী সাবিরউদ্দিন শেখকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছিল কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। মাড়গ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের রতনপুর নলদ্বীপের বুথের ভোটার ছিলেন সাবিরউদ্দিন। সেখানে তৃণমূল প্রার্থী ১১২ ভোটে জয় পেয়েছেন। রেজিনগরে তৃণমূল কর্মী ইয়াসিন শেখকে বোমা মেরে খুন করা হয়েছিল। সেই বেলডাঙা ২ ব্লকের তেঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নাজিরপুর গ্রামের ২৮ নম্বর বুথে শতাধিক ভোটে জয় পেয়েছে তৃণমূল। লালগোলায় সিপিএম সমর্থক রওশন আলিকে পিটিয়ে খুন করার ঘটনা ঘটেছিল। সেই ময়াল গ্রাম পঞ্চায়েতে জিতেছে কংগ্রেস। নওদায় ভোটের দিন খুন হন কংগ্রেসকর্মী লিয়াকৎ আলি শেখ। সেই মধুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গঙ্গাধারী গ্রামের ১৩৪ নম্বর বুথে ১৫৮ ভোটে জয় পেয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী।

মালদহ

মালদহের মানিকচকে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির কাকা শেখ মালেকের মৃত্যু হয়েছিল। মানিকচকের সেই গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৮২ নম্বর বুথে তৃণমূল প্রার্থী আঞ্জুম আরা বিবি জয় পেয়েছেন। ইংরেজবাজার ব্লকের ফুলবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল প্রার্থী ছিলেন মাম্পি খাতুন। ভোটের দিন বোমা ফেটে তাঁর শাশুড়ি তসলিমা বেওয়ার মৃত্যু হয়। ভোটের ফলে দেখা যাচ্ছে, সেই পঞ্চায়েতের ২৬ নম্বর বুথে জয় পেয়েছেন কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল প্রার্থী আরশি বিবি। কালিয়াচক ৩ ব্লকের ভগবানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৫৬ নম্বর বুথের ভোটার মতিউর রহমানকে কুপিয়ে খুন করার ঘটনা ঘটে। তিনি এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসাবে পরিচিত ছিলেন। সেই পঞ্চায়েতে জয় পেয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী সাহানারা বিবি।

কোচবিহার

ভোটের দিন সকালেই বিজেপি প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট মাধব বিশ্বাস খুন হন। কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের ফলিমারির ৩৮ নম্বর বুথে বিজেপি প্রার্থী মায়া ভৌমিক সরকারের এজেন্ট ছিলেন মাধব। অভিযুক্ত ছিল শাসকদল তৃণমূল। বিপুল ব্যবধানে জিতেছেন মায়া। তিনি পেয়েছেন ৪৫২টি ভোট। দ্বিতীয় স্থানে সিপিএম। বাম প্রার্থী পেয়েছেন ১২৪টি ভোট। তৃতীয় স্থানে তৃণমূল। তারা পেয়েছে ৯৭ ভোট। ভোটের আগে থেকেই উত্তপ্ত কোচবিহারের গিতালদহ। ভোটের দিন সকালে সেখানে মৃত্যু হয় বিজেপি কর্মী চিরঞ্জিৎ কারজি। তাতে জয় আটকায়নি বিজেপির। দিনহাটা ১ নম্বর ব্লকের ৭-এর ২৬২ বুথে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। সেই বুথে বিজেপি ৪৮৮টি ভোট পেয়েছে। তৃণমূল পেয়েছে ৪৮২টি ভোট। মাত্র ছ’ভোটের ব্যবধানে জিতেছে বিজেপি।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা

ভোটের দিন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে আনিসুর ওস্তাগর নামে এক তৃণমূল কর্মী বোমার আঘাতে নিহত হন। বাসন্তী ব্লকের ফুলমালঞ্চ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০৩ নম্বর বুথের ভোটার ছিলেন আনিসুর। সেই বুথে তৃণমূল প্রার্থী রোকেয়া ওস্তাগর ৩৬ ভোটে জিতেছেন। জয়ী তৃণমূল প্রার্থী আবার সম্পর্কে নিহত আনিসুরের আত্মীয়। ভোটের দিন কুলতলিতে বুথদখল ঘিরে তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষে মৃত্যু হয় ৪৮ বছরের আবু সালেম খানের। তিনি তৃণমূল কর্মী। তাতে কুলতলি ব্লকের জ্বালাবেড়িয়া ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১৬ নম্বর বুথে কিন্তু জয় আটকায়নি তৃণমূলের। আবু সালেমের বুথে তৃণমূল প্রার্থী দীপক কয়াল ৬৬০ ভোটে জয়লাভ করেছেন।

নদিয়া

চাপড়ায় ভোট দিতে যাওয়ার সময় কুপিয়ে খুন করা হয় তৃণমূল সমর্থক আমজাদ হোসেনকে। চাপড়ার পিঁপড়েগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের কল্যাণদহ গ্রামের ১৪৭ নম্বর বুথের ভোটার ছিলেন আমজ়াদ। সেখানে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ভোট প্রক্রিয়া স্থগিত রয়েছে।

পূর্ব বর্ধমান

কাটোয়ায় তৃণমূল প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট গৌতম রায়কে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। সেই কাটোয়া ২ নম্বর ব্লকের নন্দীগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৭২ নম্বর বুথে তৃণমূল প্রার্থী জয়লাভ করেছেন।

West Bengal Panchayat Election 2023 TMC Congress BJP CPM

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।