রাজ্যের লক্ষ লক্ষ মানুষের মতো তিনি ও তাঁর পরিবারও বন্যা-দুর্গত। এলাকার ত্রাণ শিবিরে খাবার আনতে যেতে হচ্ছে তাঁকে। সেই শিবিরেই তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন এক বধূ। দুর্গত মানুষকে পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছে দিতে সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ উঠছিল আগেই। এ বার ত্রাণ সংগ্রহে ওই মহিলার ধর্ষিতা হওয়ার অভিযোগেও নাম জড়িয়েছে শাসকদলের। সরকারের বিরুদ্ধেও নতুন করে সরব হয়েছে বামেরা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থানার দেউলি ১ পঞ্চায়েতের নতুনহাটে একটি কমিউনিটি হলে ত্রাণশিবির খোলা হয়েছিল। মঙ্গলবার সেখানেই খাবার আনতে যান বছর বত্রিশের ওই বধূ। তাঁর অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল কর্মী হাসান মোল্লা তাঁর মুখ চেপে ধরে তাঁকে নিয়ে যান দোতলার একটি ঘরে। সেখানেই ধর্ষণ করা হয় তাঁকে। কিন্তু, পেটের টান বড় টান! তাই পর দিন ওই মহিলা ফের খাবার আনতে গিয়েছিলেন ত্রাণ শিবিরে। এ বার তৃণমূল কর্মী লতিব মোল্লা মহিলার হাত ধরে টানাটানি করে শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। স্থানীয় লোকজন তা দেখে ফেলে লতিবকে মারধর করেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই বধূ থানায় হাসানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। লতিবের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির কথাও লিখিত জানান। ঘটনার কথা কাউকে না জানানোর জন্য তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেছেন নির্যাতিতা।
ক্যানিং ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, তৃণমূলের সওকত মোল্লা এ দিন বলেন, ‘‘যাঁরা মহিলাদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করেন, তাঁরা আমাদের দলীয় কর্মী হতে পারেন না। পুলিশকে বলেছি, দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে।’’ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, অভিযোগ পেয়েই তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনও কেউ ধরা পড়েনি।
ক্যানিঙের ঘটনা নিয়ে কিন্তু শাসক দলের বিরুদ্ধে নতুন অস্ত্র শানাচ্ছে বিরোধীরা। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে সর্বদল বৈঠক হওয়ার কথা কাল, শনিবার। তার ৪৮ ঘণ্টা আগে জীবনতলার ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উপরেই চাপ বাড়িয়েছেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যের এই ভয়ঙ্কর বন্যা পরিস্থিতিতে দুর্গতদের নিরাপত্তার স্বার্থে মুখ্যমন্ত্রীকেই দ্রুত এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’’
সদ্যই ভুয়ো ত্রাণ শিবিরের অস্তিত্ব ধরা পড়েছিল। তার পরেই ক্যানিঙের ঘটনার প্রেক্ষিতে এ দিন সূর্যবাবু বলেছেন, ‘‘এ রাজ্যে সাধারণ মানুষ, মা-বোনেদের কোনও নিরাপত্তা নেই। এই ঘটনা থেকে ফের বোঝা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে! পুলিশ অপরাধীদের নিরাপত্তা দিচ্ছে।’’ সূর্যবাবুর অভিযোগ, ঘটনার পরে শাসক দলের স্থানীয় নেতারা অভিযোগকারিণীকে বিষয়টি আপসে মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শও দিয়েছিলেন। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। ধর্মতলায় এ দিন ত্রাণ সংগ্রহে নেমে বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করেন, ঘটনার পরে জীবনতলার বধূ টেলিফোনে থানায় অভিযোগ জানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে বলা হয়, থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করলে তবেই তা লিপিবদ্ধ হবে। সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মীর শাস্তিও দাবি করেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy