গ্রিল কেটে বাড়িতে ঢুকে আগুন লাগানো হয়, না কি বাইরে থেকে বোমা বা ওই জাতীয় কিছু ভিতরে ছুড়ে ফেলে আগুন লাগানো হয়, এটাই এখন বড় প্রশ্ন। সিবিআই আধিকারিকরা স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করছেন, আগুন লাগার ঠিক কত ক্ষণ পর দমকল গ্রামে পৌঁছয়? এ জন্য কল রেকর্ডসও খতিয়ে দেখতে পারেন তাঁরা।
এলাকা ঘুরে দেখছেন সিবিআইয়ের ডিআইজি অখিলেশ সিংহ। ছবি— পিটিআই।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে বগটুই-কাণ্ডের তদন্ত গিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই)-এর হাতে। তদন্তভার পাওয়ার পরদিনই অকুস্থলে ডিআইজি অখিলেশ সিংহের নেতৃত্বে সিবিআইয়ের বিশাল দল। শনিবার সকালে রামপুরহাট থানায় সিটের হাত থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে কেস ডায়েরি-সহ মামলার সব নথি নিজেদের হাতে তুলে নেওয়ার পরই বগটুইয়ের উদ্দেশে রওনা দেন অখিলেশ। অন্য সিবিআই আধিকারিকের পাশাপাশি গ্রামে তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিলেন ফরেন্সিক, কেমিক্যাল ও ব্যালিস্টিক বিশেষজ্ঞরা। পৌঁছতেই শুরু হয় তদন্তের কাজ। যা চলে প্রায় সারাদিন।
ঘড়িতে সকাল এগারোটা বেজে পাঁচ মিনিট। রামপুরহাট থানা থেকে সিবিআইয়ের ডিআইজি অখিলেশ সিংহের গাড়ি রওনা দেয় বগটুইয়ের উদ্দেশে। তার আগেই সম্পূর্ণ হয়েছে রামপুরহাট থানায় মামলার আনুষ্ঠানিক হস্তান্তর। থানা থেকে সিবিআইয়ের একটি দল সোজা চলে যায় রামপুরহাট আদালতে। সেখানে মামলা হস্তান্তরের নথি জমা দেওয়া হয়। অখিলেশের গাড়ি চলে যায় বগটুই। গ্রামে পৌঁছেই শুরু হয় অকুস্থল ঘুরে দেখার কাজ। ডিআইজি নিজে ঘুরে দেখেন গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি। কথা বলেন, সেখানে উপস্থিত কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দার সঙ্গে। কেস ডায়েরি মিলিয়ে দেখা হয়, নথিভুক্তিতে কোনও রকম ফাঁক থেকে গিয়েছে কি না। এই কাজে সাহায্য করতে অখিলেশের সঙ্গেই ছিলেন রামপুরহাট থানার দুই পুলিশকর্মী। তাঁদের সঙ্গে অখিলেশকে বার বার কথা বলে পরিস্থিতি বুঝে নিতে দেখা যায়।
সিবিআই আধিকারিকদের পাশাপাশি আধুনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজে নেমে পড়েন সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির দল, কেমিক্যাল ও ব্যালিস্টিক বিশেষজ্ঞরা। ব্যবহার করা হয় থ্রিডি স্ক্যান। সোনা শেখ ও বানিরুল শেখের বাড়ির মধ্যে ফিতে দিয়ে দূরত্ব মাপার পাশাপাশি ব্যবহার করা হয় থ্রিডি স্ক্যান। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বগটুই তদন্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল কী ভাবে অগ্নিসংযোগ করা হল। তা জানতে অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য থ্রিডি স্ক্যান। পাশাপাশি সোনা শেখের বাড়ির ছাদে উঠেও এলাকা জরিপ করেন তদন্তকারীরা। বোঝার চেষ্টা করেন, কোন দিক থেকে আক্রমণ এসেছিল। গ্রিল কেটে বাড়িতে ঢুকে আগুন লাগানো হয়, না কি বাইরে থেকে বোমা বা ওই জাতীয় কিছু ভিতরে ছুড়ে ফেলে আগুন লাগানো হয়, এটাই এখন বড় প্রশ্ন। সিবিআই আধিকারিকরা স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করছেন, আগুন লাগার ঠিক কত ক্ষণ পর দমকল গ্রামে পৌঁছয়? এ জন্য কল রেকর্ডসও খতিয়ে দেখতে পারেন তাঁরা। দমকলের সঙ্গেও কথা বলেছেন সিবিআই আধিকারিকরা। পুলিশের তরফে সে দিন দমকলকে কী নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তাও জানতে চাইছে সিবিআই। পাশাপাশি তদন্তকারীরা জানার চেষ্টা করছেন, আগুন লাগার খবর পাওয়ার পর কে অকুস্থলে প্রথম প্রবেশ করেন।
সিবিআই আধিকারিকদের নিরাপত্তার জন্য আলাদা করে আধাসেনা মোতায়েন করা হয়েছে গ্রামে। পাশাপাশি সিবিআইয়ের নিরাপত্তায় রয়েছে রাজ্য পুলিশও।
শুক্রবার রাতেই বীরভূম পৌঁছে গিয়েছিলেন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা। রাতে তারাপীঠের একটি হোটেলে থেকে সকাল থেকেই কাজে নেমে পড়েন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy