রাজ্যসভার ছ’টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করল তৃণমূল। নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েতের পুনর্নির্বাচনের দিনেই রাজ্যসভার ছ’টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করল তৃণমূল। পুরনোদের মধ্যে রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন, রাজ্যসভার উপদলনেতা সুখেন্দুশেখর রায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় শ্রমিক সংগঠনের নেত্রী দোলা সেনকে তৃতীয় বারের জন্য মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, উত্তরবঙ্গে ভোট সমীকরণের কথা মাথায় রেখে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে ওই জেলার তৃণমূল সভপতি প্রকাশ চিক বড়াইককে। এ বার সংখ্যালঘু মুখ হিসাবে রাজ্যসভায় প্রার্থী হলেন বঙ্গ সংস্কৃতি মঞ্চের সভাপতি এবং সমাজকর্মী সামিরুল ইসলাম। পাশাপাশি, তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র এবং আরটিআই কর্মী সাকেত গোখলেকেও রাখা হয়েছে ওই তালিকায়। একটি আসনে উপনির্বাচন হবে। তবে সেই আসনে প্রার্থী কে, তা তৃণমূলের তরফে এখনও নির্দিষ্ট করে জানানো হয়নি।
আগামী অগস্ট মাসে পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভার ছ’টি আসন খালি হচ্ছে। এ ছাড়া পদত্যাগ করায় রাজ্যসভার আরও একটি আসনে উপনির্বাচন হতে চলেছে। সেটি লুইজিনহো ফেলেইরোর ছেড়ে দেওয়া আসন। অঙ্কের হিসাবে, সাধারণ রাজ্যসভা নির্বাচনে তৃণমূলের পাঁচটি আসনে জয় নিশ্চিত। পাশাপাশি, উপনির্বাচনের ক্ষেত্রেও তাদের প্রার্থীর জয় নিশ্চিত বলেই ধরে নেওয়া যায়। এই পর্বে মেয়াদ শেষ হচ্ছে ডেরেক, সুখেন্দুশেখর রায়, দোলা সেন, সুস্মিতা দেব এবং শান্তা ছেত্রীর। এঁদের মধ্যে সুস্মিতা এবং শান্তার নাম সোমবার তৃণমূলের দেওয়া তালিকায় নেই। তাঁদের নাম এই পর্বে তালিকায় থাকবে না— সেই সম্ভাবনার কথা আগেই জানিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। এ ছাড়া প্রবীণ কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যের মেয়াদও শেষ হচ্ছে এই অগস্টেই। ছ’বছর আগে তৃণমূলের সমর্থন পেয়েই রাজ্যসভায় গিয়েছিলেন প্রদীপ। এ বার কংগ্রেসের কারও রাজ্যসভায় যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। বদলে এ রাজ্য থেকে বিজেপি এই প্রথম কোনও রাজ্যসভার সাংসদ পেতে চলেছে।
রাজ্যসভায় নতুন প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন দিকে নজর দিয়েছে তৃণমূল। উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার গেরুয়াশিবিরের শক্ত ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত। গত বিধানসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার জেলার পাঁচটি আসনই দখল করেছিল বিজেপি। যদিও পরবর্তী কালে আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা সেখানে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও বটে। এ হেন আলিপুরদুয়ারে দলের জেলা সভাপতি প্রকাশকে প্রার্থী করে বিজেপিকে রাজনৈতিক লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছে তৃণমূল। মনে করা হচ্ছে, তৃণমূলের এই ঘুটি সাজানো ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই।
We take great pleasure in announcing the candidatures of @derekobrienmp , @Dolasen7 , @Sukhendusekhar, @Samirul65556476 , @ChikPrakash , and @SaketGokhale for the forthcoming Rajya Sabha elections. May they persist in their dedication to serving the people and uphold Trinamool's…
— All India Trinamool Congress (@AITCofficial) July 10, 2023
এ রাজ্যের বাইরের নেতাদের মধ্যে ওই তালিকায় রয়েছেন তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র তথা আরটিআই (তথ্যের অধিকার ) কর্মী সাকেত। অর্থাৎ আগামী লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে তৃণমূলের নজর রয়েছে জাতীয় রাজনীতির দিকেও। তথ্যের অধিকার আইন নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বরাবর সরব সাকেত। এ জন্য তাঁকে কয়েক বার গ্রেফতারও করা হয়েছে। গুজরাতের মোরবীতে সেতু দুর্ঘটনার পর সেখানে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সফরের জন্য ৩০ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল বলে সমাজমাধ্যমে দাবি করেছিলেন সাকেত। তার স্বপক্ষে প্রমাণ দিতে একটি প্রতিবেদনও পোস্ট করেন তিনি। সেই প্রতিবেদনে লেখা হয়েছিল, তথ্য জানার অধিকার আইনেই মোদীর মোরবী সফরের খরচের কথা জানা গিয়েছে। এর পর ‘ভুয়ো খবর’ ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তৃণমূলের মুখপাত্রকে। সেই সাকেতকে রাজ্যসভায় পাঠাতে চলেছে তৃণমূল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy