Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Bimal Gurung

GTA: শত্রু হোক বা বন্ধু, জিটিএ-র বিরোধিতায় গুরুংয়ের পাশেই দাঁড়াব: বিজেপি সাংসদ রাজু

জিটিএ-র বিরোধিতা শুরু থেকেই করে এসেছে সদ্য দার্জিলিং পুরভোটে জয়ী অজয় এডওয়ার্ডের দল হামরো পার্টি।

রাজু বিস্তা এবং বিমল গুরুং।

রাজু বিস্তা এবং বিমল গুরুং। — ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২২ ২৩:২২
Share: Save:

পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচনের বিরোধিতায় দার্জিলিঙে আমরণ অনশনে বসেছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুং। এ বার তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ওই ভোটের বিপক্ষে সুর চড়ালেন দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। জিটিএ ভোট বাতিলের দাবিতে আইনি পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছিলেন রাজু। বুধবার তিনি বললেন, ‘‘শত্রু হোক বা বন্ধু, জিটিএ ভোটের বিরোধিতা যারা করবে, তাদের পাশেই আছি আমি।’’

আগামী ২৬ জুন জিটিএ ভোটের ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হবে ২৭ মে। মঙ্গলবার দার্জিলিঙের ১৮টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকের পরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই প্রশাসনিক বৈঠকে মোর্চার প্রতিনিধি উপস্থিত থাকলেও যোগ দেয়নি বিজেপি, জিএনএলএফ এবং তাদের সহযোগী দলগুলি। উল্টে শিলিগুড়িতে সাংসদ রাজুর উপস্থিতিতে বৈঠক করে তারা।

এর পর বুধবার সকালে বিমল অনশনে বসার পরেই নিজেদের অবস্থান জানাল বিজেপি। রাজু বলেন, ‘‘জিটিএ ব্যবস্থাটাই অবৈজ্ঞানিক। অনেক বছর ধরে জিটিএ ভোট হয়নি। শুধু নিজেদের লোকেদের পাশে রাখতেই ভোট করাতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগের জিটিএ-তে ২,২০০ কোটি টাকার কোনও হিসেব নেই। আমরা ভোটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করব। শুধু আইনি পদক্ষেপই নয়, রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করব। বন্ধু হোক বা শত্রু, জিটিএ ভোটের যারা বিরোধিতা করবে, তাদেরই পাশে দাঁড়াব। গোর্খাদের হিতের কথা ভেবেই অনশনে বসেছেন বিমল। আমি তা সমর্থন করি।’’ সিংমারির যে দলীয় কার্যালয়ে অনশনে বসেছেন বিমল, সেখানে গিয়ে তাঁকে খাদাও পরিয়ে আসবেন বলেও জানিয়েছেন সাংসদ। যদিও এ প্রসঙ্গে এখনও কোনও মন্তব্য করেননি মোর্চা প্রধান।

প্রসঙ্গত, গত বিধানসভা নির্বাচনের কিছু আগে বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে পাহাড়ে তৃণমূলের শরিক হয়েছিল মোর্চা। সেই সম্পর্কে ফাটল তৈরি হয় সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দার্জিলিং সফরকালে। ওই সফরে দার্জিলিঙের রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠকের পর পাহাড়ে ভোটের কথা বলেছিলেন মমতা। তখন থেকেই মোর্চার সঙ্গে রাজ্য সরকারের টানাপড়েন তৈরি হয়। সেই আবহে পাহাড়ের দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক সমাধানের কথা বলে আলাদা রাজ্যের দাবিও করে মোর্চা। এর পর রাজ্যের ভোট ঘোষণার অব্যবহিত পরে বিমলের অনশনে বসার সিদ্ধান্তের জেরে সম্পর্কে ভাঙন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

তৃণমূলের সঙ্গে জোট গড়ার সময় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ তুলেছিলেন বিমল। বলেছিলেন, কেন্দ্র রাজনৈতিক সমাধানের আশ্বাস দিয়েও তা পূরণ করেনি। তার পরেও হঠাৎ করে কেন বিমলের পাশে দাঁড়াতে চাইছে বিজেপি? এই প্রশ্নের জবাবে রাজু বললেন, ‘‘আমি বলছি না যে, কেন্দ্র অনেক কাজ করেছে। তবে রাজনৈতিক সমাধান মানে, গোর্খাদের দাবি অনুযায়ী, আলাদা রাজ্য। সেটা সহজ বিষয় নয়। কিন্তু এ নিয়ে প্রতি দিনই কেন্দ্রের সঙ্গে আমার কথা হয়।’’

রাজ্যের কাছে জিটিএ ভোট বাতিলের দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকেও তিনি চিঠি লিখবেন বলে জানিয়েছেন রাজু। রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করে তিনি আরও বলেন, ‘‘কোনও সুরাহা না হলে আইনের দ্বারস্থ হব। জিটিএ নির্বাচন করে লুটের রাজনীতি করতে দেব না। গোর্খাদের ভাবাবেগে বুলডোজার চালাচ্ছে রাজ্য সরকার।’’

অন্য দিকে, জিটিএ-র বিরোধিতা শুরু থেকেই করে এসেছে সদ্য দার্জিলিং পুরভোটে জয়ী অজয় এডওয়ার্ডের দল হামরো পার্টি। তবে নির্বাচন হলে তারা যে অংশ নেবে, তা-ও জানানো হয়েছে দলের তরফে। দলের তরফে প্রমস্কর ব্লন বলেন, ‘‘আমরা কখনওই জিটিএ-র পক্ষে ছিলাম না। তবে নির্বাচন হলে তাতে অংশ নেব।’’

ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি অনিত থাপা বললেন, ‘‘আগে নির্বাচন হোক, তার পর অতিরিক্ত ক্ষমতা নিয়ে আলোচনা হবে। একটা বোর্ড যে হেতু রয়েছে, সেটা পরিচালনা করতে নির্বাচন জরুরি। আর রাজনৈতিক সমাধান কোনও দলের ব্যক্তিগত বিষয় না। এটা সমগ্র পাহাড়ের মানুষেরই ইচ্ছে। কাজেই জিটিএ নির্বাচন দরকার।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy